জবি প্রতিনিধি: মোঃনিয়াজ শফিক
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বাজেটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বরাদ্দকৃত বাজেট বৃদ্ধির দাবিতে সম্মিলিত সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকরা। এসময় তারা দাবি না মেনে না নিলে ‘লং মার্চ টু যমুনা’র ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
আজ সোমবার (১২ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্ত্বরে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সমাবেশে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্রদল, ছাত্র শিবিরসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে উপস্থিত সকলের সঙ্গে ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। আলোচনা শেষে সকলের সম্মতিক্রমে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (জবিসাস) সাধারণ সম্পাদক মাহতাব হোসেন লিমন।
লিমন বলেন, “আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) আমাদের একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে স্মারকলিপি দিতে যাবে। যদি তারা আমাদের মেনে না নেন, তবে আগামী বুধবার (১৪ মে) আমরা যমুনা ঘেরাও কর্মসূচি পালন করব।”
সমাবেশে শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রায়হান হাসান রাব্বি বলেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনো ফাইল সরকার পাড়ার টেবিলে তারা তা অবহেলার সাথে দেখে। তারা ভাবেন আমরা আশ্বাস দিয়ে দিলেই তারা চলে যাবে। তাদের বলতে চাই, ঔই ফাইল যদি ফিরে আসে তবে তাদের গদিতে আগুন জ্বলবে। আবাসন ভাতা ও যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই ঐক্য নিয়ে আন্দোলন চলবে।”
শাখা ছাত্র শিবিরের সভাপতি আসাদুল ইসলাম বলেন, “আজ জবির সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আমাদের দাবি উপেক্ষা করলে সরকারকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।”
ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে আমরা অতীতেও পাশে ছিলাম, আগামীতেও থাকব। প্রয়োজনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
সমাবেশে অংশ নিয়ে ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসির উদ্দিন বলেন, “সৃষ্টির শুরু থেকেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যের শিকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে ৯০০ কোটি টাকা বাজেট পায়, সেখানে জবি পায় মাত্র ১৫০ কোটি টাকা। ইউজিসি সবসময় বাজেট ১০ শতাংশের বেশি বাড়ানো যাবে না এই যুক্তি দেয়। আমরা এই বৈষম্যের অবসান চাই।”
জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক। অতীতে বারবার অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ‘ট্যাগ’ দিয়ে দমন করার চেষ্টা করা হয়েছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলে ও আবাসন সুবিধা পেলেও জবি এখনো বঞ্চিত। দাবি পূরণ না হলে শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকেও কমপ্লিট শাটডাউনের ঘোষণা দেওয়া হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড মো তাজাম্মুল হক বলেন, “এই প্রশাসন কোনো স্বৈরাচারী প্রশাসন নয়, এ প্রশাসনের দায়িত্ব হচ্ছে শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির পক্ষে থাকা। আপনাদের কাজ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের এই দাবি সরকারি নিকট পৌঁছে দেওয়া। এখানে বৈষমের কোন স্থান হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, আপনারা কোন কাটসাট না করে এটা অনুমোদনের ব্যবস্থা করবেন এটাই আমাদের দাবি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন বলেন, “আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পাশে ছিলাম। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়াও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণেই সফল হয়েছে।”