শিরোনাম :
Logo মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে Logo স্বর্ণের দামে সব রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস Logo দুবাইয়ে বিগ টিকিট লটারি জিতে লাখপতি দুই বাংলাদেশি Logo বাবা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক খলিল, দেখতে পারলেন না সদ্যোজাত সন্তানের মুখ Logo এটিএম আজহার মুক্তি না পাওয়ায় আমরা ব্যথিত, তবে হতাশ নই Logo আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ ৩ বিচারপতি থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পক্ষে বিএনপি Logo ধর্ম নিরপেক্ষতা বিলুপ্তে ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে একমত বিএনপি Logo হঠাৎ বৃষ্টিতে চাঁদপুর শহরের মুসলিম কবরস্থান রোড এলাকা সড়কের বেহাল দশা, ভোগান্তিতে এলাকাবাসী Logo ইনসাফের আকাঙ্ক্ষা থেকেই চব্বিশের লড়াই:ব্যারিস্টার ফুয়াদ Logo ইবিতে বিভাগের নাম পরিবর্তসহ দুই দফা দাবিতে প্রশাসন ভবন অবরোধ

বাবা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক খলিল, দেখতে পারলেন না সদ্যোজাত সন্তানের মুখ

যুক্তরাষ্ট্রে আটক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছেন। গতকাল সোমবার তাঁর স্ত্রী নুর আবদাল্লা এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে নুর আবদাল্লা অভিযোগ করেছেন, সন্তান জন্মের সময় মাহমুদ খলিলকে তাঁর পাশে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

গতকাল সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে আবদাল্লা লিখেছেন, ‘আজ সকালে আমি মাহমুদের অনুপস্থিতিতেই আমাদের ছেলেকে এ দুনিয়ায় স্বাগত জানিয়েছি। সন্তানের জন্মের সময় মাহমুদকে উপস্থিত থাকতে দেওয়ার জন্য আমরা অভিবাসন ও শুল্ক কর্তৃপক্ষের (আইসিই) কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম।

সন্তানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য তাঁর সাময়িক মুক্তি চেয়ে করা সে অনুরোধ তারা রাখেনি। আমাকে, মাহমুদকে ও আমাদের সন্তানকে ভোগান্তিতে ফেলার জন্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

মাহমুদ খলিল প্রথমবারের মতো বাবা হয়েছেন। আর প্রথম সন্তানের জন্মক্ষণে সশরীর তাঁর উপস্থিত থাকার ইচ্ছা থাকলেও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ তাঁকে অনুমতি দেয়নি। তাঁকে শুধু টেলিফোন কলের মাধ্যমে সে অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

খলিলকে বর্তমানে লুইজিয়ানার একটি আটককেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে। নিউইয়র্কের যে হাসপাতালে তাঁর ছেলের জন্ম হয়েছে, সেখান থেকে আটককেন্দ্রটির দূরত্ব এক হাজার মাইলের বেশি।

মাহমুদ খলিলের স্ত্রী নুর আবদাল্লা নিউইয়র্কে থাকেন। ২৮ বছর বয়সী এ নারী একজন দন্তচিকিৎসক। গতকাল সকালে তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মা ও ছেলে দুজনই সুস্থ আছে।

নুর আবদাল্লা মার্কিন নাগরিক। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা মিশিগানে। প্রায় ৪০ বছর আগে তাঁর মা–বাবা সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

খলিলকে সন্তানের জন্মক্ষণে উপস্থিত থাকার সুযোগ দিতে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ই–মেইলগুলো পর্যালোচনা করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।

এতে দেখা গেছে, কী কী উপায়ে খলিলকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেওয়া যেতে পারে, সেগুলো উল্লেখ করেছেন আইনজীবীরা। এসব উপায়ের মধ্যে ছিল-খলিলের পায়ে মনিটর যুক্ত করে তাঁকে দুই সপ্তাহের জন্য মুক্তি দেওয়া এবং প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময় পরপর তাঁকে তল্লাশি করা।

যুক্তরাষ্ট্রের অরলিন্সে অভিবাসন ও শুল্কবিষয়ক কর্তৃপক্ষের মাঠপর্যায়ের কার্যালয় সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।

গত ৮ মার্চ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবন থেকে খলিলকে গ্রেপ্তার করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে খলিলকে আটক করা হয়। খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

চলতি মাসের প্রথম দিকে অভিবাসনবিষয়ক এক বিচারক মত দিয়েছেন, খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা যেতে পারে। অবশ্য মানবাধিকারকর্মীরা বিচারকের এই মতকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।

খলিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই তাঁর মুক্তির জন্য স্ত্রী নুর আবদাল্লা লড়ে যাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে যাঁরাই কথা বলছেন, তাঁদের চুপ করানোর চেষ্টা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মুমিনুল চান তিনশ’র লিড, দুইশ’তে আটকাতে চায় জিম্বাবুয়ে

বাবা হলেন যুক্তরাষ্ট্রে আটক খলিল, দেখতে পারলেন না সদ্যোজাত সন্তানের মুখ

আপডেট সময় : ০৯:০২:৫২ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে আটক ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল পুত্রসন্তানের বাবা হয়েছেন। গতকাল সোমবার তাঁর স্ত্রী নুর আবদাল্লা এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে নুর আবদাল্লা অভিযোগ করেছেন, সন্তান জন্মের সময় মাহমুদ খলিলকে তাঁর পাশে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়নি।

গতকাল সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে আবদাল্লা লিখেছেন, ‘আজ সকালে আমি মাহমুদের অনুপস্থিতিতেই আমাদের ছেলেকে এ দুনিয়ায় স্বাগত জানিয়েছি। সন্তানের জন্মের সময় মাহমুদকে উপস্থিত থাকতে দেওয়ার জন্য আমরা অভিবাসন ও শুল্ক কর্তৃপক্ষের (আইসিই) কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলাম।

সন্তানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য তাঁর সাময়িক মুক্তি চেয়ে করা সে অনুরোধ তারা রাখেনি। আমাকে, মাহমুদকে ও আমাদের সন্তানকে ভোগান্তিতে ফেলার জন্য অভিবাসন কর্তৃপক্ষ উদ্দেশ্যমূলকভাবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

মাহমুদ খলিল প্রথমবারের মতো বাবা হয়েছেন। আর প্রথম সন্তানের জন্মক্ষণে সশরীর তাঁর উপস্থিত থাকার ইচ্ছা থাকলেও হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ তাঁকে অনুমতি দেয়নি। তাঁকে শুধু টেলিফোন কলের মাধ্যমে সে অভিজ্ঞতা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।

খলিলকে বর্তমানে লুইজিয়ানার একটি আটককেন্দ্রে আটকে রাখা হয়েছে। নিউইয়র্কের যে হাসপাতালে তাঁর ছেলের জন্ম হয়েছে, সেখান থেকে আটককেন্দ্রটির দূরত্ব এক হাজার মাইলের বেশি।

মাহমুদ খলিলের স্ত্রী নুর আবদাল্লা নিউইয়র্কে থাকেন। ২৮ বছর বয়সী এ নারী একজন দন্তচিকিৎসক। গতকাল সকালে তিনি পুত্রসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। মা ও ছেলে দুজনই সুস্থ আছে।

নুর আবদাল্লা মার্কিন নাগরিক। তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা মিশিগানে। প্রায় ৪০ বছর আগে তাঁর মা–বাবা সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান।

খলিলকে সন্তানের জন্মক্ষণে উপস্থিত থাকার সুযোগ দিতে আইনজীবীদের পক্ষ থেকে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো ই–মেইলগুলো পর্যালোচনা করেছে নিউইয়র্ক টাইমস।

এতে দেখা গেছে, কী কী উপায়ে খলিলকে সাময়িক সময়ের জন্য মুক্তি দেওয়া যেতে পারে, সেগুলো উল্লেখ করেছেন আইনজীবীরা। এসব উপায়ের মধ্যে ছিল-খলিলের পায়ে মনিটর যুক্ত করে তাঁকে দুই সপ্তাহের জন্য মুক্তি দেওয়া এবং প্রয়োজনে নির্দিষ্ট সময় পরপর তাঁকে তল্লাশি করা।

যুক্তরাষ্ট্রের অরলিন্সে অভিবাসন ও শুল্কবিষয়ক কর্তৃপক্ষের মাঠপর্যায়ের কার্যালয় সে অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।

গত ৮ মার্চ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক ভবন থেকে খলিলকে গ্রেপ্তার করেন যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে খলিলকে আটক করা হয়। খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

চলতি মাসের প্রথম দিকে অভিবাসনবিষয়ক এক বিচারক মত দিয়েছেন, খলিলকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করা যেতে পারে। অবশ্য মানবাধিকারকর্মীরা বিচারকের এই মতকে নজিরবিহীন বলে উল্লেখ করেছেন।

খলিল গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকেই তাঁর মুক্তির জন্য স্ত্রী নুর আবদাল্লা লড়ে যাচ্ছেন। তাঁর অভিযোগ, ফিলিস্তিনিদের অধিকারের পক্ষে যাঁরাই কথা বলছেন, তাঁদের চুপ করানোর চেষ্টা করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন।