রমজানেও যার গুনাহ মাফ হয় না

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৩:৫৫:৩৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
  • ৭০৮ বার পড়া হয়েছে
দেখতে দেখতে রমজান শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই তো কয়েক দিন আগেই শুরু হয়েছিল। আমরা অনেকেই হয়তো এবাদত-বন্দেগির বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছিলাম। করব করব করে কতটুকু করতে পেরেছি নিজেই ভালো জানি। তাই রমজান মাস শেষ হওয়ার আগে অনুতপ্ত হই। যাতে করে শেষ হয়ে গেলে, না বলতে হয়- হায়, রমজান চলে গেল, কিছুই করতে পারলাম না এই তো আর কিছুদিন বাকি। তারপরই শেষ হয়ে যাবে রহমত মাগফিরাত নাজাতের মাস।

এ সময় আমাদের বিশেষভাবে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিসের কথা মনে পড়ে। যেখানে তিনি বলেছেন। হজরত জাবের রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। একবার রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে আরোহণ করলেন। প্রথম ধাপে উঠে বললেন, আমিন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে উঠেও বললেন, আমিন। সাহাবিগণ জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহর রসুল! আপনাকে এভাবে তিনবার আমিন বলতে শুনলাম? এর কারণ কী? তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি যখন মিম্বরের প্রথম ধাপে আরোহণ করলাম তখন জিবরাইল আগমন করলেন এবং বললেন, ওই ব্যক্তি হতভাগা, যে রমজান মাস পেল এবং রমজান গত হয়ে গেল, কিন্তু তার গুনাহ মাফ হলো না। আমি বললাম, আমিন (বুখারি, হাদিস নং ৬৪৪)।

শেষ দশকে শবেকদর নামে একটি রাত আছে। আল্লাহ বান্দার জন্য সেই রাতে বিশাল পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। এ রাতের মাহাত্ম্য ঘোষণা করার জন্য একটি সুরা অবতীর্ণ করেছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, একটি রাতের এবাদতের বিনিময়ে হাজার মাসের চেয়েও বেশি দেব বান্দা! এরপরও কি আমরা অবহেলায় উদাসীনতায় রমজানের শেষদিকের রাতগুলো কাটিয়ে দেব? যদি কাটাই তাহলে আফসোস তো আমাদের জন্যই থেকে যাবে।

এ প্রসঙ্গে হজরত আনাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রমজানে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, এই মহিমান্বিত মাস উপস্থিত। তাতে একটি রজনী রয়েছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত হলো, সে যেন সব কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো। আর কেবল অভাগাই এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৬৪৪)। তাই তো আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু রমজানের আমল কবুল হওয়ার বিষয়ে ঈদের দিন বলতেন, জানি না, আমাদের মধ্যে কার রোজা-এবাদত কবুল করা হয়েছে আর কার আমল কবুল হয়নি। যার আমল কবুল হয়েছে, তোমাকে স্বাগতম! আর হে বঞ্চিত! আল্লাহ তোমার ক্ষতিপূরণ করুন।

লেখক : ভাইস প্রিন্সিপাল খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

রমজানেও যার গুনাহ মাফ হয় না

আপডেট সময় : ০৩:৫৫:৩৫ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫
দেখতে দেখতে রমজান শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই তো কয়েক দিন আগেই শুরু হয়েছিল। আমরা অনেকেই হয়তো এবাদত-বন্দেগির বিভিন্ন পরিকল্পনা করেছিলাম। করব করব করে কতটুকু করতে পেরেছি নিজেই ভালো জানি। তাই রমজান মাস শেষ হওয়ার আগে অনুতপ্ত হই। যাতে করে শেষ হয়ে গেলে, না বলতে হয়- হায়, রমজান চলে গেল, কিছুই করতে পারলাম না এই তো আর কিছুদিন বাকি। তারপরই শেষ হয়ে যাবে রহমত মাগফিরাত নাজাতের মাস।

এ সময় আমাদের বিশেষভাবে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের একটি হাদিসের কথা মনে পড়ে। যেখানে তিনি বলেছেন। হজরত জাবের রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। একবার রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে আরোহণ করলেন। প্রথম ধাপে উঠে বললেন, আমিন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে উঠেও বললেন, আমিন। সাহাবিগণ জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহর রসুল! আপনাকে এভাবে তিনবার আমিন বলতে শুনলাম? এর কারণ কী? তখন রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি যখন মিম্বরের প্রথম ধাপে আরোহণ করলাম তখন জিবরাইল আগমন করলেন এবং বললেন, ওই ব্যক্তি হতভাগা, যে রমজান মাস পেল এবং রমজান গত হয়ে গেল, কিন্তু তার গুনাহ মাফ হলো না। আমি বললাম, আমিন (বুখারি, হাদিস নং ৬৪৪)।

শেষ দশকে শবেকদর নামে একটি রাত আছে। আল্লাহ বান্দার জন্য সেই রাতে বিশাল পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছেন। এ রাতের মাহাত্ম্য ঘোষণা করার জন্য একটি সুরা অবতীর্ণ করেছেন। যেখানে তিনি বলেছেন, একটি রাতের এবাদতের বিনিময়ে হাজার মাসের চেয়েও বেশি দেব বান্দা! এরপরও কি আমরা অবহেলায় উদাসীনতায় রমজানের শেষদিকের রাতগুলো কাটিয়ে দেব? যদি কাটাই তাহলে আফসোস তো আমাদের জন্যই থেকে যাবে।

এ প্রসঙ্গে হজরত আনাস রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রমজানে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, এই মহিমান্বিত মাস উপস্থিত। তাতে একটি রজনী রয়েছে, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ ও বরকত থেকে বঞ্চিত হলো, সে যেন সব কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো। আর কেবল অভাগাই এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত থাকে। (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ১৬৪৪)। তাই তো আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু রমজানের আমল কবুল হওয়ার বিষয়ে ঈদের দিন বলতেন, জানি না, আমাদের মধ্যে কার রোজা-এবাদত কবুল করা হয়েছে আর কার আমল কবুল হয়নি। যার আমল কবুল হয়েছে, তোমাকে স্বাগতম! আর হে বঞ্চিত! আল্লাহ তোমার ক্ষতিপূরণ করুন।

লেখক : ভাইস প্রিন্সিপাল খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীরচর, ঢাকা