দেশে প্রথমবার জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত, আক্রান্ত ৫

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০১:৪৮:১৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫
  • ৭২৮ বার পড়া হয়েছে

দেশে প্রথমবারের মতো জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত হয়েছে। আজ সোমবার (৩ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। নিজেদের ওয়েবসাইটে আইসিডিডিআর,বি বিস্তারিত প্রতিবেদনে এ নিয়ে নানা তথ্য দেয়।

ঢাকায় এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। আক্রান্তদের সম্পর্কে জানানো হয়েছে, এই পাঁচজন রোগী সবাই এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বসবাস করতেন এবং গত দুই বছরে দেশের বাইরে ভ্রমণের কোনো ইতিহাস ছিল না। তারা প্রায় একই সময়ের মধ্যে পরীক্ষা করিয়েছেন, যা ইঙ্গিত দেয় যে তারা একই সংক্রমণ শৃঙ্খলের অংশ হতে পারেন।

আরও বিচলিত করার মতো ভয়াবহ তথ্য হলো, এই পাঁচজনের মধ্যে একজন রোগীর দেহে একই সঙ্গে ডেঙ্গু ভাইরাসও শনাক্ত হয়েছে—যা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জিকা ও ডেঙ্গু ভাইরাসের সহ-সংক্রমণের প্রমাণ।

আইসিডিডিআর,বি বলছে, ২০২৩ সালে সংগ্রহ করা নমুনা পর্যালোচনা করে এই তথ্য জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সমগ্র জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ ব্যবহার করে প্রকাশ করা হয়েছে যে বাংলাদেশি এই স্ট্রেইন এশিয়ান লাইনেজের অন্তর্গত। মাইক্রোসেফালি ও অন্যান্য স্নায়বিক রোগের মতো গুরুতর সংকট দেখা দিতে পারে এতে আক্রান্ত হলে। এই স্ট্রেইন কম্বোডিয়া ও চীনে ২০১৯ সালে দেখা গিয়েছিল। এরপর প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

আইসিডিডিআর,বির ওয়েবসাইটে বলা হয়, বাংলাদেশের গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ু, এর উষ্ণ তাপমাত্রা এবং দীর্ঘ বর্ষাকাল এডিস মশার জন্য সর্বোত্তম প্রজনন পরিস্থিতি তৈরি করে। এ কারণে মশাবাহিত অনেক রোগ হয়। ডেঙ্গু ছাড়াও এখানে চিগুনগুনিয়া দেখা গিয়েছিল। এবার জিকা ভাইরাসও শনাক্ত হলো।

উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় বানরের শরীরে প্রথম ধরা পড়ে জিকা ভাইরাস। ১৯৫২ সালে প্রথম শনাক্ত হয় মানবদেহে। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের অনেক দেশে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মতো জিকাও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। এর লক্ষণ ডেঙ্গুর মতো হলেও ৮০ ভাগের ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে না। ভাইরাস শরীরে থাকে বছর ধরে। এমনকি জিকা ভাইরাসে আক্রান্তের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়ায় ওই রোগ। জিকা আক্রান্ত হয়ে গর্ভবতী হলে অথবা গর্ভবতী জিকা আক্রান্ত হলে নানা শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয় শিশু।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শতভাগ আবাসন ও রাকসুর পূর্ণাঙ্গ তফসিল ঘোষণার দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন

দেশে প্রথমবার জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত, আক্রান্ত ৫

আপডেট সময় : ০১:৪৮:১৮ অপরাহ্ণ, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

দেশে প্রথমবারের মতো জিকা ভাইরাসের ক্লাস্টার শনাক্ত হয়েছে। আজ সোমবার (৩ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)। নিজেদের ওয়েবসাইটে আইসিডিডিআর,বি বিস্তারিত প্রতিবেদনে এ নিয়ে নানা তথ্য দেয়।

ঢাকায় এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত পাঁচজন আক্রান্ত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। আক্রান্তদের সম্পর্কে জানানো হয়েছে, এই পাঁচজন রোগী সবাই এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে বসবাস করতেন এবং গত দুই বছরে দেশের বাইরে ভ্রমণের কোনো ইতিহাস ছিল না। তারা প্রায় একই সময়ের মধ্যে পরীক্ষা করিয়েছেন, যা ইঙ্গিত দেয় যে তারা একই সংক্রমণ শৃঙ্খলের অংশ হতে পারেন।

আরও বিচলিত করার মতো ভয়াবহ তথ্য হলো, এই পাঁচজনের মধ্যে একজন রোগীর দেহে একই সঙ্গে ডেঙ্গু ভাইরাসও শনাক্ত হয়েছে—যা বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো জিকা ও ডেঙ্গু ভাইরাসের সহ-সংক্রমণের প্রমাণ।

আইসিডিডিআর,বি বলছে, ২০২৩ সালে সংগ্রহ করা নমুনা পর্যালোচনা করে এই তথ্য জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সমগ্র জিনোম সিকোয়েন্সিং এবং তুলনামূলক বিশ্লেষণ ব্যবহার করে প্রকাশ করা হয়েছে যে বাংলাদেশি এই স্ট্রেইন এশিয়ান লাইনেজের অন্তর্গত। মাইক্রোসেফালি ও অন্যান্য স্নায়বিক রোগের মতো গুরুতর সংকট দেখা দিতে পারে এতে আক্রান্ত হলে। এই স্ট্রেইন কম্বোডিয়া ও চীনে ২০১৯ সালে দেখা গিয়েছিল। এরপর প্রবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

আইসিডিডিআর,বির ওয়েবসাইটে বলা হয়, বাংলাদেশের গ্রীষ্মমন্ডলীয় জলবায়ু, এর উষ্ণ তাপমাত্রা এবং দীর্ঘ বর্ষাকাল এডিস মশার জন্য সর্বোত্তম প্রজনন পরিস্থিতি তৈরি করে। এ কারণে মশাবাহিত অনেক রোগ হয়। ডেঙ্গু ছাড়াও এখানে চিগুনগুনিয়া দেখা গিয়েছিল। এবার জিকা ভাইরাসও শনাক্ত হলো।

উল্লেখ্য, ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় বানরের শরীরে প্রথম ধরা পড়ে জিকা ভাইরাস। ১৯৫২ সালে প্রথম শনাক্ত হয় মানবদেহে। এরপর তা ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের অনেক দেশে। ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়ার মতো জিকাও ছড়ায় এডিস মশার মাধ্যমে। এর লক্ষণ ডেঙ্গুর মতো হলেও ৮০ ভাগের ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে না। ভাইরাস শরীরে থাকে বছর ধরে। এমনকি জিকা ভাইরাসে আক্রান্তের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও ছড়ায় ওই রোগ। জিকা আক্রান্ত হয়ে গর্ভবতী হলে অথবা গর্ভবতী জিকা আক্রান্ত হলে নানা শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্ম নেয় শিশু।