শিরোনাম :
Logo বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সম্পাদক Logo কচুয়ায় কহলথুড়ি ফুটবল একাডেমীর উদ্যোগে টুর্নামেন্ট উদ্বোধন Logo চুয়াডাঙ্গায় বাইসাইকেলের সঙ্গে সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত Logo ইবিতে আওয়ামীলীগ নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ Logo জীবননগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু Logo ৪১ ডিগ্রি ছাড়াল চুয়াডাঙ্গার তাপমাত্রা, গলে যাচ্ছে রাস্তার পিচ Logo ইবিতে শুরু হয়েছে গুচ্ছ এ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা Logo অবরুদ্ধ গাজায় একদিনেই নিহত ১০৬ ফিলিস্তিনি Logo ভারতের কাছে পাইলট আটকের প্রমাণ চাইলো পাকিস্তান Logo নিষিদ্ধ হচ্ছে যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বললেন আসিফ মাহমুদ

”চুয়াডাঙ্গায় তাপদাহে ডাবের চাহিদা থাকলেও ক্রেতা নেই”

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১২:১২:৫৫ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪
  • ৭৭১ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তীব্র তাপদাহে তৃষ্ণা মেটাতে পানি, শরবত কিংবা অন্যান্য কোমল পানীয় পানের বিকল্প নেই। তাইতো সবাই বারবার এসব পানীয় পান করছেন। গরম এলেই এসব পানীয়র পাশাপাশি বেড়ে যায় ডাবের চাহিদা। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। বাজারে প্রচুর ডাব থাকলেও নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রেতা। ডাবের মূল্য অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি হওয়ায় ক্রেতা সাধারণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে ডাব ব্যবসায়ীদের ধারণা।

তবে ক্রেতারা বলছেন, ডাব এখন বিলাসী পণ্য ছাড়া আর কিছুই না। একমাত্র রোগী ও রোগীর স্বজনরা ছাড়া আর কেউই ডাব কিনছেন না। বিগত বছরগুলোর বাজার দর ছাড়িয়ে ডাব এখন বিলাসী পণ্য হয়ে গেছে। ৫০-৬০ টাকার ডাব এখন ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল অবধি মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে ডাব বিক্রেতাদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। ক্রেতা সাধারণেরও তেমন একটা ভীড় পরিলক্ষিত হয়নি। দু-একজন ক্রেতার দেখা মিললেও দাম-দরে বনিবনা না হওয়ায় ডাব না কিনেই বাসায় ফিরতে দেখা যায়।

মেহেরপুর শহরের কোর্ট রোড, জেনারেল হাসপাতাল গেট, বামনপাড়া, গাংনী বাসস্ট্যান্ড বাজার, হাসপাতাল বাজার, বামুন্দী, আমঝুপি, ভাটপাড়া ও কেদারগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজারে বড় সাইজের ডাবের দাম হাঁকতে শোনা গেছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। মাঝারি সাইজের ডাবের দাম হাঁকতে শোনা যায় ১২০ থেকে ১৩০ টাকা এবং ছোট সাইজের একটি ডাবের দাম চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, মেহেরপুরের বাইরে থেকে ডাব কিনে তা পিকআপে করে শহরে আনতে অনেক ভাড়া খরচ হয়। তাছাড়া গরমে ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি বাজারেও মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে স্থানীয় বাজারেও ডাব বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বামনপাড়ার অপর ডাব বিক্রেতা আশাদুল ইসলাম বলেন, বাইরে থেকে আনতে খরচ বেশি পড়ছে। তাছাড়া গরম না থাকলেও আমাদের ডাব সংগ্রহে রাখতে হয়। শীতকালে ক্রেতা সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকায় অনেক সময় ডাব নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই পাইকাররা হয়ত গরমে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করছেন। যার প্রভাব স্থানীয় বাজারে পড়ছে। আশাদুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি ৭০-৮০ টাকায় কিনে প্রতিটি ডাব ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।

গাংনী বাজারের অপর একজন ডাব ব্যবসায়ী বলেন, রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে ডাব কিনে গাড়ি ভাড়া দিয়ে এমনিতেই ১০০ টাকা পড়ে যায়। তাছাড়া সারাদিনে কতটিই বা ডাব বিক্রি হয়েছে। একজন খেতে নিড়ানি দিতে গেলেও সকাল থেকে বেলা ১২টা অবধি ৪০০ টাকা আয় করে থাকে। যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি রোদে পুড়ে ডাব বিক্রি করেও আমাদের ৫০০ টাকা আয় হয় না।

জোড়পুকুরিয়া বাজারে একজন ভ্রাম্যমাণ ডাব ব্যবসায়ী জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি মাত্র ৩৫-৪০টির মতো ডাব বিক্রি করেছেন। তার ভ্যানে আরও ৬০টির মতো ডাব অবিক্রিত রয়েছে। চাহিদা থাকলে দুপুরের আগেই সকল ডাব বিক্রি হয়ে যেতো। এদিকে গত ২ দিন ধরে আবারও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ কিন্তু বাড়েনি ডাবের চাহিদা। গরমে কষ্ট পাচ্ছে তবুও ডাবের দাম জিজ্ঞেস করে না কিনে ফিরে যাচ্ছে। হয়তো দাম বেশি একারণেই না কিনে ফিরছেন ক্রেতারা।

গাংনী হাসপাতাল বাজারে ডাব ক্রেতা সালেহার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডাব বড়লোকের বিলাসী পণ্য হয়ে গেছে। ডাবের যে দাম তাতে করে বড়লোক ছাড়া গরীবের কেনার সাধ্য কোথায়। গ্রামে ৫০-৬০ টাকায় ডাব মিললেও শহরে এসে প্রয়োজনে ১০০ টাকায়ও তা মিলছে না। অথচ গ্রাম থেকেই এসব ব্যবসায়ীরা ৩০-৪০ টাকায় ডাব কিনে এতো দামে বিক্রি করছে। এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।

ট্যাগস :

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত তেঁতুলিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি, সম্পাদক

”চুয়াডাঙ্গায় তাপদাহে ডাবের চাহিদা থাকলেও ক্রেতা নেই”

আপডেট সময় : ১২:১২:৫৫ অপরাহ্ণ, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

তীব্র তাপদাহে তৃষ্ণা মেটাতে পানি, শরবত কিংবা অন্যান্য কোমল পানীয় পানের বিকল্প নেই। তাইতো সবাই বারবার এসব পানীয় পান করছেন। গরম এলেই এসব পানীয়র পাশাপাশি বেড়ে যায় ডাবের চাহিদা। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। বাজারে প্রচুর ডাব থাকলেও নেই পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রেতা। ডাবের মূল্য অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি হওয়ায় ক্রেতা সাধারণ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন বলে ডাব ব্যবসায়ীদের ধারণা।

তবে ক্রেতারা বলছেন, ডাব এখন বিলাসী পণ্য ছাড়া আর কিছুই না। একমাত্র রোগী ও রোগীর স্বজনরা ছাড়া আর কেউই ডাব কিনছেন না। বিগত বছরগুলোর বাজার দর ছাড়িয়ে ডাব এখন বিলাসী পণ্য হয়ে গেছে। ৫০-৬০ টাকার ডাব এখন ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।

গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে বিকেল অবধি মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে ডাব বিক্রেতাদের অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। ক্রেতা সাধারণেরও তেমন একটা ভীড় পরিলক্ষিত হয়নি। দু-একজন ক্রেতার দেখা মিললেও দাম-দরে বনিবনা না হওয়ায় ডাব না কিনেই বাসায় ফিরতে দেখা যায়।

মেহেরপুর শহরের কোর্ট রোড, জেনারেল হাসপাতাল গেট, বামনপাড়া, গাংনী বাসস্ট্যান্ড বাজার, হাসপাতাল বাজার, বামুন্দী, আমঝুপি, ভাটপাড়া ও কেদারগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজারে বড় সাইজের ডাবের দাম হাঁকতে শোনা গেছে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা। মাঝারি সাইজের ডাবের দাম হাঁকতে শোনা যায় ১২০ থেকে ১৩০ টাকা এবং ছোট সাইজের একটি ডাবের দাম চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা।
বিক্রেতারা বলছেন, মেহেরপুরের বাইরে থেকে ডাব কিনে তা পিকআপে করে শহরে আনতে অনেক ভাড়া খরচ হয়। তাছাড়া গরমে ডাবের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় পাইকারি বাজারেও মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে স্থানীয় বাজারেও ডাব বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বামনপাড়ার অপর ডাব বিক্রেতা আশাদুল ইসলাম বলেন, বাইরে থেকে আনতে খরচ বেশি পড়ছে। তাছাড়া গরম না থাকলেও আমাদের ডাব সংগ্রহে রাখতে হয়। শীতকালে ক্রেতা সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকায় অনেক সময় ডাব নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতেই পাইকাররা হয়ত গরমে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করছেন। যার প্রভাব স্থানীয় বাজারে পড়ছে। আশাদুল ইসলাম দাবি করেন, তিনি ৭০-৮০ টাকায় কিনে প্রতিটি ডাব ১০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।

গাংনী বাজারের অপর একজন ডাব ব্যবসায়ী বলেন, রাজবাড়ীর কালুখালী থেকে ডাব কিনে গাড়ি ভাড়া দিয়ে এমনিতেই ১০০ টাকা পড়ে যায়। তাছাড়া সারাদিনে কতটিই বা ডাব বিক্রি হয়েছে। একজন খেতে নিড়ানি দিতে গেলেও সকাল থেকে বেলা ১২টা অবধি ৪০০ টাকা আয় করে থাকে। যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি রোদে পুড়ে ডাব বিক্রি করেও আমাদের ৫০০ টাকা আয় হয় না।

জোড়পুকুরিয়া বাজারে একজন ভ্রাম্যমাণ ডাব ব্যবসায়ী জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি মাত্র ৩৫-৪০টির মতো ডাব বিক্রি করেছেন। তার ভ্যানে আরও ৬০টির মতো ডাব অবিক্রিত রয়েছে। চাহিদা থাকলে দুপুরের আগেই সকল ডাব বিক্রি হয়ে যেতো। এদিকে গত ২ দিন ধরে আবারও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ কিন্তু বাড়েনি ডাবের চাহিদা। গরমে কষ্ট পাচ্ছে তবুও ডাবের দাম জিজ্ঞেস করে না কিনে ফিরে যাচ্ছে। হয়তো দাম বেশি একারণেই না কিনে ফিরছেন ক্রেতারা।

গাংনী হাসপাতাল বাজারে ডাব ক্রেতা সালেহার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ডাব বড়লোকের বিলাসী পণ্য হয়ে গেছে। ডাবের যে দাম তাতে করে বড়লোক ছাড়া গরীবের কেনার সাধ্য কোথায়। গ্রামে ৫০-৬০ টাকায় ডাব মিললেও শহরে এসে প্রয়োজনে ১০০ টাকায়ও তা মিলছে না। অথচ গ্রাম থেকেই এসব ব্যবসায়ীরা ৩০-৪০ টাকায় ডাব কিনে এতো দামে বিক্রি করছে। এসব ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন।