শিরোনাম :
Logo আন্তর্জাতিক সেমিনারে যাচ্ছেন ইবি ভিসি Logo সিরাজগঞ্জে জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo কচুয়ার পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রী কলেজে নবীন বরণ ও ওরিয়েন্টেশন ক্লাস অনুষ্ঠিত Logo শহীদ রুমি স্মৃতি পাঠাগারের সাময়িকী  ” মুক্তবাক” এর মোড়ক উন্মোচন Logo খুলনার কয়রায় প্রায় ১০৩ কেজি হরিণের মাংস, মাথা এবং হরিণ শিকারের ফাঁদসহ ১ জন হরিণ শিকারিকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড Logo জসিম সভাপতি, ফখরুল সম্পাদক দীর্ঘ ছয় বছর পর চাঁদপুর জেলা সমিতি ইউকের নির্বাচন সম্পন্ন Logo নির্ধারিত ছয় মাসের আগেই নতুন বেতন কাঠামো চূড়ান্ত হবে: প্রধান উপদেষ্টাকে কমিশন চেয়ারম্যান Logo ইবি অভয়ারণ্যের শরৎ সম্ভাষণ: “গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া ও বায়োস্কোপের রঙিন আবেশ” Logo চাঁদপুর সদরের ১৪ ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগে সেবা প্রার্থীদের হয়রানি ও ভোগান্তি কমেছে Logo চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বদলী জনিত বিদায় সংবর্ধনা

বিরামপুরে বদ্ধ পানিতে কুঁচিয়া চাষ

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৬:০৩ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬
  • ৮১৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় শ্যামপুর, চন্ডিপুর, আয়ড়া, বেলডাঙ্গা ও কল্যাণপুর গ্রামে সরকারিভাবে অ্যাকোয়া কালচার (বদ্ধ পানিতে চাষ) কুঁচিয়া চাষ প্রদর্শনী খামার করেছে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

মানব দেহের বিভিন্ন রোগ নিরাময়কারী, অধিক আমিষ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ কুঁচিয়া চাষ অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় আদিবাসীদের ১০/১২ জনের কমিটি করে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়ন ও কঠোর তদারকিতে প্রদর্শনী খামার পরিচালিত হচ্ছে। তিন বছর মেয়াদী প্রদর্শনীগুলো কমিটির সদস্যরা পাহারা দিবেন এবং উৎপাদিত কুঁচিয়া সদস্যরাই পাবেন।

বিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নূরনবী জানান, কুঁচিয়ার চাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, উৎপাদন বৃদ্ধি, পুষ্টি চাহিদার যোগান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি মানুষকে আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্পের অধীনে এই প্রদর্শনীগুলো চালু করা হয়েছে। ছোট পরিসরে এ্যাকোয়া পদ্ধতি অর্থাৎ বদ্ধ জলাশয়ে কুঁচিয়ার চাষ করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১৫-১৬ অর্থ বছর থেকে মৎস্য অধিদপ্তর দেশের নির্বাচিত এলাকায় কুঁচিয়া ও কাঁকড়া চাষ এবং গবেষণা প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

তিনি আরও জানান, নিচে ও চারদিকে মোটা পলিথিন ও ত্রিপল দিয়ে ঘেরা দিতে হয়। ত্রিপল ও পলিথিনের উপর ৪ স্তরের বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে কুঁচিয়ার আবাসস্থল তৈরি করা হয়। তৈরি এ্যাকোয়ার ভিতর পোনা ছেড়ে সামান্য খাবারেই সেগুলো অভাবনীয়ভাবে বেড়ে ওঠে।

এদের রোগ বালাইয়ের ঝুঁকি নেই। কুঁচিয়া গুঁড়া মাছ, কেঁচো, শামুক, ব্যাঙ্গাচী ও জলজ পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে এবং একবার পোনা ছাড়লে পরবর্তীতে নিজেরাই বংশ বৃদ্ধি করে নেয়।

মৎস্য কর্মকর্তা জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট ও নওগাঁর আত্রাই থেকে পোনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ৩শ` বর্গফুট আয়তনের প্রতিটি প্রদর্শনীতে প্রায় দুই হাজার সংখ্যক পোনা ছাড়া হয়। মাত্র পাঁচ মাসে ওইসব পোনা কুঁচিয়া প্রতিটির ওজন হয়েছে ২৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম।

প্রফেসার পাড়া কুঁচিয়া চাষ প্রদর্শনী খামারের দলপতি নরেন পাহান জানান, কুঁচিয়ার স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং প্রতি কেজি কুঁচিয়া ২৫০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। এ ধরণের একটি প্রদর্শনী খামার থেকে বছরে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার কুঁচিয়া পাওয়া সম্ভব।

ছোট পরিসরে চাষাবাদ ও স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফার কথা ভেবে অনেক মাছ চাষী ও এনজিও এই কুঁচিয়া চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এছাড়া সাঁওতাল (আদিবাসী) সম্প্রদায় আধুনিক পদ্ধতিতে কুঁচিয়া চাষে অধিক আগ্রহী হলেও এই দরিদ্র সম্প্রদায় অর্থাভাবে এগুতে পারছে না।

তিনি আরো জানান, কুঁচিয়া মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী পথ্য। এতে আমিষের পরিমাণ অনেক বেশি। এটি ব্যথা নাশক, রক্ত পরিস্কারক, রক্ত সঞ্চালন ও হজম শক্তি বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট নিরাময় এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। কুঁচিয়ার পুষ্টিগুণ ও রোগ নিরাময়কারী গুণের কারণে দেশের বাজার ছাড়াও ভারত ও চীনে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আন্তর্জাতিক সেমিনারে যাচ্ছেন ইবি ভিসি

বিরামপুরে বদ্ধ পানিতে কুঁচিয়া চাষ

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:০৩ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৬

নিউজ ডেস্ক:

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় শ্যামপুর, চন্ডিপুর, আয়ড়া, বেলডাঙ্গা ও কল্যাণপুর গ্রামে সরকারিভাবে অ্যাকোয়া কালচার (বদ্ধ পানিতে চাষ) কুঁচিয়া চাষ প্রদর্শনী খামার করেছে উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তর।

মানব দেহের বিভিন্ন রোগ নিরাময়কারী, অধিক আমিষ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ কুঁচিয়া চাষ অল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় অনেকে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় আদিবাসীদের ১০/১২ জনের কমিটি করে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়ন ও কঠোর তদারকিতে প্রদর্শনী খামার পরিচালিত হচ্ছে। তিন বছর মেয়াদী প্রদর্শনীগুলো কমিটির সদস্যরা পাহারা দিবেন এবং উৎপাদিত কুঁচিয়া সদস্যরাই পাবেন।

বিরামপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নূরনবী জানান, কুঁচিয়ার চাষ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ, উৎপাদন বৃদ্ধি, পুষ্টি চাহিদার যোগান ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতি মানুষকে আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে প্রকল্পের অধীনে এই প্রদর্শনীগুলো চালু করা হয়েছে। ছোট পরিসরে এ্যাকোয়া পদ্ধতি অর্থাৎ বদ্ধ জলাশয়ে কুঁচিয়ার চাষ করা যায়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১৫-১৬ অর্থ বছর থেকে মৎস্য অধিদপ্তর দেশের নির্বাচিত এলাকায় কুঁচিয়া ও কাঁকড়া চাষ এবং গবেষণা প্রকল্প হাতে নিয়েছে।

তিনি আরও জানান, নিচে ও চারদিকে মোটা পলিথিন ও ত্রিপল দিয়ে ঘেরা দিতে হয়। ত্রিপল ও পলিথিনের উপর ৪ স্তরের বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে কুঁচিয়ার আবাসস্থল তৈরি করা হয়। তৈরি এ্যাকোয়ার ভিতর পোনা ছেড়ে সামান্য খাবারেই সেগুলো অভাবনীয়ভাবে বেড়ে ওঠে।

এদের রোগ বালাইয়ের ঝুঁকি নেই। কুঁচিয়া গুঁড়া মাছ, কেঁচো, শামুক, ব্যাঙ্গাচী ও জলজ পোকা-মাকড় খেয়ে থাকে এবং একবার পোনা ছাড়লে পরবর্তীতে নিজেরাই বংশ বৃদ্ধি করে নেয়।

মৎস্য কর্মকর্তা জানান, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট ও নওগাঁর আত্রাই থেকে পোনা সংগ্রহ করা হয়েছে। ৩শ` বর্গফুট আয়তনের প্রতিটি প্রদর্শনীতে প্রায় দুই হাজার সংখ্যক পোনা ছাড়া হয়। মাত্র পাঁচ মাসে ওইসব পোনা কুঁচিয়া প্রতিটির ওজন হয়েছে ২৫০ থেকে ৪০০ গ্রাম।

প্রফেসার পাড়া কুঁচিয়া চাষ প্রদর্শনী খামারের দলপতি নরেন পাহান জানান, কুঁচিয়ার স্থানীয় বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে এবং প্রতি কেজি কুঁচিয়া ২৫০ থেকে ৩২০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। এ ধরণের একটি প্রদর্শনী খামার থেকে বছরে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার কুঁচিয়া পাওয়া সম্ভব।

ছোট পরিসরে চাষাবাদ ও স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফার কথা ভেবে অনেক মাছ চাষী ও এনজিও এই কুঁচিয়া চাষের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এছাড়া সাঁওতাল (আদিবাসী) সম্প্রদায় আধুনিক পদ্ধতিতে কুঁচিয়া চাষে অধিক আগ্রহী হলেও এই দরিদ্র সম্প্রদায় অর্থাভাবে এগুতে পারছে না।

তিনি আরো জানান, কুঁচিয়া মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী পথ্য। এতে আমিষের পরিমাণ অনেক বেশি। এটি ব্যথা নাশক, রক্ত পরিস্কারক, রক্ত সঞ্চালন ও হজম শক্তি বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট নিরাময় এবং উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে। কুঁচিয়ার পুষ্টিগুণ ও রোগ নিরাময়কারী গুণের কারণে দেশের বাজার ছাড়াও ভারত ও চীনে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।