নিউজ ডেস্ক:
কোনো রকম সন্দেহ ছাড়াই বলে দেওয়া যায়, যে ছাগলটির মাথায় রাজমুকুট উঠেছে সেটি পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান ছাগল। তবে ছাগলের মাথায় রাজমুকুট-এটা দেখে যারা বিস্ময়ে চোখ কপালে তুলেছেন তাদের জন্য বিস্ময়ের শেষাংশ এখনো বাকী। কারণ শুধু রাজমুকুট নয়, একজন সুন্দরী রানিও জুটেছে তার ভাগ্যে।
কথায় আছে এক দেশে যা আচার অন্য দেশে তা অনাচারও হতে পারে। এই ঘটনা আপনার আমার কাছে অস্বাভাবিক ও অপ্রকৃতস্থ মনে হলেও আয়ারল্যান্ডের কিলোরগন শহরবাসীর কাছে এটাই স্বাভাবিক, ঐতিহ্যও বটে।
যুগ যুগ ধরে মহা ধুমধামের সঙ্গে তারা ছাগলকে রাজা বানানোর এই ঐতিহ্য পালন করে আসছেন। বর্তমানে প্রাচীন এই ঐতিহ্য রূপ নিয়েছে মহা উৎসবে। দেশের নানা প্রান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ এই উৎসবে যোগ দেয়। বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে নেচে গেয়ে তারা তাদের নতুন রাজাকে বরণ করে নেয়। কিলোরগনের অধিবাসীদের কাছে এই উৎসব ‘পাক ফেয়ার’ নামে পরিচিত এবং তারা তাদের রাজাকে ডাকে ‘কিং পাক’ নামে।
ঠিক কতদিন আগে এই উৎসবের প্রচলন আর কেনই বা এই উৎসব পালন করা হয় তা নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে বিস্তর মতপার্থক্য রয়েছে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় গল্পটি হলো- সপ্তাদশ শতকের আয়ারল্যান্ডের রাজা অলিভার করমওয়েলকে নিয়ে। কোনো এক ফসল কাটার উৎসব চলাকালীন রাজার একটি পোষা ছাগল পালিয়ে পাহাড়ে আশ্রয় নেয়। এরপর থেকে সেই ছাগল স্মরণে প্রতিবছর ওই পাহাড় থেকে বন্য ছাগল ধরে এনে পাক ফেয়ারের মাধ্যমে তাকে রাজা বানানো হয়।
প্রতিবছর আগস্ট মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই উৎসব শুরু হয়। চলে বারো তারিখ পর্যন্ত। উৎসব চলাকালীন ছাগল রাজা সত্যি সত্যি যেন রাজার মতো দিন কাটায়। গাছের ডাল-পাতা, বাঁধাকপি ও পানি খেয়ে আরাম-আয়েশে দিন কাটায়। তবে তার এই রাজকীয় জীবন বেশিদিন স্থায়ী হয় না। উৎসব শেষ হওয়ার পরেই তাকে সিংহাসনচ্যুত করা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় তার রাজমুকুট। রানি ফিরে যায় তার ঘরে। বেচারা ছাগলকে আবার ফিরে যেতে হয় পাহাড়ের কোলে তার আপন আবাসে।