শিরোনাম :

সংখ্যালঘু ইস্যুতে এবার মুখ খুললেন বিজেপি মন্ত্রী

ভারত সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান বলে দাবি করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের এক মন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জর্জ কুরিয়ান এই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে নিরাপদ”।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং চীনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে সংখ্যালঘুদের অবস্থানের তুলনা করে মোদির মন্ত্রিসভার প্রতিমন্ত্রী জর্জ কুরিয়ান বলেছেন— “ভারতে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে নিরাপদ”।

জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন (এনসিএম) আয়োজিত এক সভায় দিল্লিতে রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্যদের সাথে কথা বলার সময় কুরিয়ান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নের জন্য কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন। তিনি দাবি করেন, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য নিবেদিত অসংখ্য প্রকল্প রয়েছে এবং তাদের কল্যাণের জন্য অতিরিক্ত উদ্যোগও রয়েছে।

ভারতের সংখ্যালঘুরা প্রতিবেশী কিছু দেশের তুলনায় বেশি সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ভোগ করে দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা বলতে পারি, ভারত বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা… আমাদের প্রতিবেশী পাকিস্তানের দিকে তাকান। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা কেমন, সেখানে খ্রিস্টানরা সংখ্যালঘু। সেখানে খ্রিস্টানদের অবস্থা কী? সেখানে হিন্দুদের অবস্থা কী।”

তিনি বলেন, বিশ্ব জানে চীনে খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের অবস্থা কেমন, কারণ সেখানে তারা সংখ্যালঘু। তিনি দাবি করেন, “আপনি মিয়ানমারের কথা বলেন, যেখানে মুসলিমরা সংখ্যালঘু। আমাকে রোহিঙ্গাদের কথা ব্যাখ্যা করতে হবে না। আপনি বাংলাদেশের দিকে তাকান, তারপর আবার সেখানে সংখ্যালঘুদের কী হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। শ্রীলঙ্কায় ইস্টার রাতে কী ঘটেছিল তা আমাকে ব্যাখ্যা করতে হবে না।”

২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল ইস্টার রাতে শ্রীলঙ্কা ধারাবাহিকভাবে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিলো। এই হামলাগুলো সমন্বিত সন্ত্রাসবাদী আত্মঘাতী সিরিজ বোমা হামলা ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। এই হামলায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন।

ভারতীয় এই মন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো প্রতি মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছে। তার দাবি, “এটা ঠিক যে তারা এটিকে সাম্প্রদায়িক অধিকার হিসেবে গ্রহণ করে না। আমেরিকা সম্পর্কে কিছু বলার দরকার নেই। এই কারণেই আমি বলি ভারত সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। এখানে আমরা আমাদের আওয়াজ তুলতে পারি। আমরা প্রতিবাদ করতে পারি। আমরা সরকারের কাছে দাবি করতে পারি এবং তা দিতে বাধ্যও করা হয়।”

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুও। তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কল্যাণের প্রতি মোদি সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মের ও গোষ্ঠীর মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

বিপুল সংখ্যক মুসল্লীর অংশগ্রহণে চাঁদপুরে জাকের পার্টির ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

সংখ্যালঘু ইস্যুতে এবার মুখ খুললেন বিজেপি মন্ত্রী

আপডেট সময় : ০২:০২:৩৬ অপরাহ্ণ, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
ভারত সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান বলে দাবি করেছেন দেশটির ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের এক মন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সংখ্যালঘু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জর্জ কুরিয়ান এই দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে নিরাপদ”।

গতকাল মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং চীনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলোতে সংখ্যালঘুদের অবস্থানের তুলনা করে মোদির মন্ত্রিসভার প্রতিমন্ত্রী জর্জ কুরিয়ান বলেছেন— “ভারতে সংখ্যালঘুরা সবচেয়ে নিরাপদ”।

জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন (এনসিএম) আয়োজিত এক সভায় দিল্লিতে রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের সদস্যদের সাথে কথা বলার সময় কুরিয়ান সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ক্ষমতায়নের জন্য কেন্দ্রের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দেন। তিনি দাবি করেন, সংখ্যালঘুদের উন্নয়নের জন্য নিবেদিত অসংখ্য প্রকল্প রয়েছে এবং তাদের কল্যাণের জন্য অতিরিক্ত উদ্যোগও রয়েছে।

ভারতের সংখ্যালঘুরা প্রতিবেশী কিছু দেশের তুলনায় বেশি সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ভোগ করে দাবি করে তিনি বলেন, “আমরা বলতে পারি, ভারত বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গা… আমাদের প্রতিবেশী পাকিস্তানের দিকে তাকান। পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা কেমন, সেখানে খ্রিস্টানরা সংখ্যালঘু। সেখানে খ্রিস্টানদের অবস্থা কী? সেখানে হিন্দুদের অবস্থা কী।”

তিনি বলেন, বিশ্ব জানে চীনে খ্রিস্টান এবং মুসলিমদের অবস্থা কেমন, কারণ সেখানে তারা সংখ্যালঘু। তিনি দাবি করেন, “আপনি মিয়ানমারের কথা বলেন, যেখানে মুসলিমরা সংখ্যালঘু। আমাকে রোহিঙ্গাদের কথা ব্যাখ্যা করতে হবে না। আপনি বাংলাদেশের দিকে তাকান, তারপর আবার সেখানে সংখ্যালঘুদের কী হচ্ছে তা ব্যাখ্যা করার দরকার নেই। শ্রীলঙ্কায় ইস্টার রাতে কী ঘটেছিল তা আমাকে ব্যাখ্যা করতে হবে না।”

২০১৯ সালের ২১ এপ্রিল ইস্টার রাতে শ্রীলঙ্কা ধারাবাহিকভাবে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কেঁপে উঠেছিলো। এই হামলাগুলো সমন্বিত সন্ত্রাসবাদী আত্মঘাতী সিরিজ বোমা হামলা ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। এই হামলায় ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন।

ভারতীয় এই মন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, ইউরোপীয় দেশগুলো প্রতি মাসে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার মুখোমুখি হচ্ছে। তার দাবি, “এটা ঠিক যে তারা এটিকে সাম্প্রদায়িক অধিকার হিসেবে গ্রহণ করে না। আমেরিকা সম্পর্কে কিছু বলার দরকার নেই। এই কারণেই আমি বলি ভারত সংখ্যালঘুদের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ স্থান। এখানে আমরা আমাদের আওয়াজ তুলতে পারি। আমরা প্রতিবাদ করতে পারি। আমরা সরকারের কাছে দাবি করতে পারি এবং তা দিতে বাধ্যও করা হয়।”

এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজিজুও। তিনি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কল্যাণের প্রতি মোদি সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়া বিভিন্ন ধর্মের ও গোষ্ঠীর মধ্যে সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন তিনি।