মিং পিসি এবং সাধারণ পিসির মধ্যে একটি বড় ধরনের পার্থক্য হচ্ছে হার্ডওয়্যারের প্যারফর্ম্যান্স। একটি সাধারণ পিসিতে যেসব হার্ডওয়্যার থাকে সেগুলো একটি গেমিং পিসিতেও থাকে। তবে এগুলো অনেক বেশি শক্তিশালী এবং কার্যক্ষম হয়ে থাকে। তবে যদি একটি ভালো মানের গেমিং পিসি কেনার ইচ্ছে থাকে তাহলে ডেস্কটপ পিসিতে ঠিক কি ধরনের হার্ডওয়্যার ব্যবহৃত হয় সে সম্পর্কে সঠিক ধারণা থাকতে হবে। গেমিং পিসিতে যেসব হার্ডওয়্যারগুলো ব্যবহৃত হয় সেগুলো জেনে নিলে সহজেই গেমিং পিসি নির্বাচন করতে সাহায্য করবে।
গেমিং পিসি তৈরি করতে যেসব উপকরণ প্রয়োজন হবেঃ-
গেমিং পিসি তৈরি করতে লিস্টে রাখুন নিচের এই হার্ডওয়্যার গুলো:
প্রসেসর
বাজারে সাধারণত দুই ধরনের গেমিং প্রসেসর পাওয়া যায়। একটি হচ্ছে ইন্টেল এবং অপরটি হচ্ছে এএমডি (এডভান্সড মাইক্রো ডিভাইস)। বর্তমানে বাংলাদেশে দুই ধরনের প্রসেসর ডেস্কটপ পিসি তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে। তবে প্রসেসর কেনার আগে তার প্রসেসর এর ক্লক স্পিড, ইন্টারফেস, কোর, ক্যাশ, হাইপার থ্রেড ইত্যাদি বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।
মাদারবোর্ড
মাদারবোর্ড বলতে মূলত একটি প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডকে বোঝায় যেখানে প্রসেসর, মেমরি ও এক্সপানশন হার্ডওয়্যার সংযুক্ত করা হয়। এর সাথে এক্সটার্নাল ডিভাইসের সাথে কানেক্ট করার জন্য বিভিন্নরকমের পোর্ট ও সকেট থাকে। ভালো মানের মাদারবোর্ড নির্বাচন করতে হবে যাতে পরবর্তিতে প্রসেসর আপগ্রেড করা যায়। অন্যথায় প্রসেসর আপগ্রেড করতে হলে মাদারবোর্ড আপগ্রেড করা সম্ভব হবে না। মাদারবোর্ডের সাথে সিপিইউ ইন্টারফেস বা সকেট, চিপসেট, বায়োস এগুলো ঠিকভাবে কাজ করে কিনা তা চেক করে দেখতে হবে।
গ্রাফিক্স কার্ড
কম্পিউটারকে শক্তিশালী ও জটিল কাজ করতে গ্রাফিক্স কার্ড বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গ্রাফিক্স কার্ডের প্রধান এবং অন্যতম কাজ হচ্ছে দ্রুত ইমেজ জেনারেট করা এবং তা ডিসপ্লেতে প্রদর্শন করা। বর্তমান বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গ্রাফিক্স কার্ড পাওয়া যায় এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু ব্র্যান্ড হচ্ছে এমএসআই, ইন্টেল, গিগাবাইট, এনভিডিয়া ও এটিআই। গ্রাফিক্স কার্ড নির্বাচন করার সময় এর চিপসেট, মেমরি টাইপ, মেমরির পরিমাণ, ক্লক স্পিড ও আউটপুট ফিচার দেখে নিতে হবে। মেমোরী
মেমরী প্রত্যেক কম্পিউটারের জন্য প্রাইমারী কম্পোনেন্ট হিসেবে ধরা হয়। সাধারণত পিসিতে দুই ধরনের মেমরীর ব্যবহার হয়ে থাকে র্যাম ও হার্ডডিস্ক। তাই গেমিং পিসির জন্য এর বিকল্প নয় তবে এই ধরনের পিসির জন্য র্যাম ১৬ জিবি ও স্টোরেজ এর জন্য এসএসডি বা সাটা নির্বাচন করা। যদি ফাইলের পরিমান বেশি হয় তাহলে বেশি স্টোরেজ এর প্রয়োজন হবে এর জন্য আলাদাভাবে এক্সটার্নাল ড্রাইভ ব্যবহার করা ভালো।
মনিটর
ভালো মানের একটি পিসি তৈরিতে ভালো মানের একটি মনিটর নির্বাচন করা জরুরী। গেমিং পিসির জন্য বিদ্যুৎশক্তি কম খরচ, পাতলা বা বেজেললেস, হাই রেজ্যুলিউশন এর মনিটর নির্বাচন করতে হবে। ফুল এইচডি বা ৪কে রেজ্যুলিউশন এর মনিটর ব্যবহার করলে চোখের উপরে প্রভাব কম পরে এবং ভিজ্যুয়াল বস্তুকে বাস্তব সম্মত দেখায়। ফলে এই ধরনের মনিটরগুলো গেমারদের জন্যে বেস্ট চয়েজ হতে পারে। অপটিক্যাল ড্রাইভ
অপটিক্যাল ড্রাইভ বলতে সিডি, ডিভিডি, ব্লু-রে এর ড্রাইভকে বোঝানো হয়। এই ড্রাইভগুলো সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে- ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল। গেইম ডিভিডি রাইট করে রাখার জন্যে গেমারদের জন্যে অবশ্যই ডিভিডি রাইট থাকা জরুরি। তবে ভবিষ্যতের কথা খেয়াল রেখে ব্লু-রে ড্রাইভ কেনাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
মাউস ও কীবোর্ড
গেমিং কম্পিউটার বা পিসি’র জন্যে ভালো মানের মাউস এবং কী-বোর্ড কেনা জরুরি। একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার বা গেমার মাউস এবং কীবোর্ড নিয়ে বেশি কাজ করেন তাই এই কম্পোনেন্টগুলো ভালো কোয়ালিটির হতে হয়। সাধারণ পিসির চেয়ে গেমিং পিসির মাউস ও কী-বোর্ড এর দাম তুলনামূলক কিছুটা বেশি হয়।
ক্যাসিং
কেসিং এর কাজ হচ্ছে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশগুলোকে সুরক্ষা প্রদান করা। ক্যাসিংয়ের মধ্যে মাদারবোর্ড স্থাপন করে অন্যান্য হার্ডওয়্যারগুলকে সেট-আপ করতে হয়। ক্যাসিংয়ের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে মাদারবোর্ড সাপোর্ট, সিপিইউ এর উচ্চতা, পূর্বে ইনস্টল করা পাখার সংখ্যা ও প্যানেল এর ব্যাপারে।
মন্তব্য
গেমিং পিসি দিয়ে শুধু গেমিং করার জন্য ব্যবহার করা হয় না বরং অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ যেমন গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও ইডিটিং, এনিমেশন ভিডিও তৈরি, থ্রি-ডি আর্কিটেকচার এরমতো আরো অনেক কাজে ব্যবহার হয়। তাই সকল বিষয় মাথায় রেখে কাজের ভিত্তিতে ডেস্কটপ পিসি বিল্ড করতে হবে।