স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ-
ঝিনাইদহে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের কার্ড প্রতি ৩০ কেজে চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গরিবের জন্য বরাদ্দ এসব চাল কারসাজি করে খোদ চেয়ারম্যান ও কিছু ইউপি সদস্য হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করছে এলাকার কার্ডধারী আমজনতা। এ নিয়ে এলাকার বঞ্চিত শত শত হতদরিদ্র সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রচন্ড অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। আবার এলাকার শত শত মানুষের চালের কার্ড অনলাইন করেতে দু’শ, তিন’শ ও চার’শ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ফুরসন্ধি ইউনিয়নের উদ্যোক্তা মোসাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তবে উদ্যোক্তা মোসাইদুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বিকার করেছেন।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্ধি ইউনিয়নের সোনাতনপুর গ্রামের কালামের ছেলে ছাত্রলীগের সভাপতি সেলিম হোসেন সাংবাদিকেদের কাছে অভিযোগ করে জানান, ফুরসন্ধি ইউনিয়নে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চাল ক্রয়ে ‘সুবিধাভোগীর মূল তালিকায় ৮২৭টি কার্ড থাকলেও অজ্ঞাত কারনে ফুরসন্ধি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব সহিদুল ইসলাম শিকদার ও কিছু ইউপি সদস্যদের কারসাজির কারনে শত শত কার্ডধারীরা সরকারের এ বিশেষ সুবিধা বর্তমান চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম শিকদার, ডিলার ও কিছু ইউপি সদস্যদের পাচ্ছে না।’ তবে দুইটি ডিলার মিলে মোট ১০৯ জন সরকারী চাল পেয়েছে। আর বাকি শত শত কার্ড ধারীরা হতাশ হয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। তাহলে ফিরিয়ে দেওয়া বাকি কার্ঢধারীদের শত শত কার্ডের চাল কোথায়??
এদিকে ফুরসন্ধি ইউনিয়নের মোক্তারপুরসহ উক্ত এলাকার সাজু, মহিউদ্দি, পচি, কাশেম, জলীল ও একাধিক নারী ভোক্তাসহ শত শত সারকারী খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চালে কার্ডধারীরা সাংবাদিকদের জানান, ‘আমাদের গত দুইবার চাল দেয়ার পর আর এখন অজ্ঞাত কারনে আমার কার্ডে চাল দিচ্ছে না। ভুক্তভোগী আরো জানান, পুর্বের চেয়ারম্যানের আমলে ‘এ প্রকল্পের চাল দেয়ার আগে চেয়ারম্যান-মেম্বারদের মাধ্যমে তাদের
নাম বিবেচনা করে উঠে আসে মূল তালিকায়। তবে বর্তমানে অনেকের চালের কার্ড থাকলেও ফুরসন্ধি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব সহিদুল ইসলাম শিকদার, ডিলার ও কিছু ইউপি সদস্যদের কারসাজিতে আমাদের কার্ড অনলাইন করে দেয়া হয়নি। সরেজমিনে গিয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা গেছে, ফুরসন্ধি
ইউনিয়নের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কিছু ইউপি সদস্য এবং কুশাবাড়িয়া বাজারের ডিলার জনাব তৈয়ব আলী মিনার যোগসাজসে শত শত কার্ডধারীরা এসব সরকারী চাল না পেয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন।’ এবিষয়ে ইউনিয়নের কুশাবাড়িয়া বাজারের ডিলার
ডিলার জনাব তৈয়ব আলী মিনা অজ্ঞাত কারনে সাংবাদিকদের কাছে কোনো প্রকার বক্তব্য দিতে রাজি হননি। ভুক্তভোগীরা আরো জানান সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ফুরসন্ধি ইউনিয়নের সুবিধাভোগীদের নাম তালিকায় থাকলেও এলাকার শত শত মানুষের চালের কার্ড অনলাইন করা হয়নি তাই তারা চাল পাবেন না বলে জানিয়েছেন ডিলারসহ চাল বিতরণ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে কুশাবাড়িয়া বাজারের ডিলার তৈয়ব আলী মিনার সাংবাদিকদের কাছে বক্তব্য না দিলেও মোক্তারপুর এলাকার ডিলার কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা ওয়াজেদ হোসেন জানান ফুরসন্ধি ইউনিয়নে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের ব্যাপারে কার্ডধারী এলাকাবাসির অভিযোগ সম্পুর্ণ সঠিক।
এঘটনায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোঃ এস এম শাহিন বলেন, আমি সহিদুল ইসলাম শিকদারকে ফোনে ও সরাসরি বলেছি উপস্থিত কার্ডধারীদের সবাইই সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৫ টাকা কেজি দরের চাল পাবে। তিনি আমার কথা মেনে নিয়ে কোন প্রকার অনিয়ম হবেনা মর্মে কথা দিয়েছেন। এখন অবশ্যই চেয়ারম্যানের সাথে কথা না বলে কিছু বলতে পারছনা আর উদ্যোক্তা মোসাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান। একাধিক বার ফোন দিয়েও মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফুরসন্ধি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জনাব সহিদুল ইসলাম শিকদারের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে ইউরিয়নের ৭ নাম্বার ওয়ার্ড সদস্য মহিদুল ইসলাম বলেন অনলাইন করার পর সবাই কার্ডের চাল পাবে। এখানে চেয়ারম্যান সহিদুল ইসলাম শিকদার ও ইউপি সদস্যদের কারসাজির কোনো প্রকার সুযোগ নেই।