দেশের বিভিন্ন খাত সংস্কারে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আজ শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশ করা হবে। একইসঙ্গে কমিশনগুলোর প্রধানরা পরবর্তী করণীয়, মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা ও ভবিষ্যৎ নির্বাচিত সরকারের জন্য সুপারিশমালা পেশ করবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ খাত সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেন। কমিশনগুলোকে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
এরপর ১৫ জানুয়ারি সংবিধান, নির্বাচন কমিশন, পুলিশ সংস্কার এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। গত বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে।
সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ প্রকাশিত প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা রাজনৈতিক দল ও গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তির কাছে পাঠানো হবে। এরপর বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে অনুষ্ঠিত হবে।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, কমিশনের সুপারিশের আলোকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্যমত্যে পৌঁছানোর জন্য আলোচনা শুরু হবে। আলোচনা রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতিতে রমজান মাস পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
গত ১১ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পর ছয়টি সংস্কার কমিশন গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কমিশনগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্তরা হলেন:
– নির্বাচন সংস্কার কমিশন: সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার
– পুলিশ সংস্কার কমিশন: সাবেক জনপ্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র সচিব সফর রাজ হোসেন
– বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন: সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান
– দুদক সংস্কার কমিশন: টিআইবি নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান
– জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন: সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী
– সংবিধান সংস্কার কমিশন: যুক্তরাষ্ট্রের ইলিয়ন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ
এই কমিশনের প্রধানদের নিয়ে গঠিত হয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন, যার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা নিয়ে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শ সভা আয়োজন করা হবে। তিন থেকে সাত দিনব্যাপী এই আলোচনার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার চূড়ান্ত রূপরেখা নির্ধারণ করা হবে।