পরিবার ছেড়ে কুবি সুরক্ষায় নিয়োজিত আনসার সদস্যগন 

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৩:২৮:১৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
  • ৭৩১ বার পড়া হয়েছে

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়(কুবি)তে ক্যাম্পাস নিরাপত্তার কাজে সর্বদা নিয়োজিত থাকেন আনসার সদস্যগন। পেশাগত কারণে দায়িত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে পরিবার থেকে বহুদূরে থাকেন। অনেক দূরবর্তী একটি স্থানকে আপন করে নিয়ে তার সুরক্ষায় সর্বদা জাগ্রত থাকেন।

প্রশাসনিক ভবন, মূল ফটক, পাঁচটি হল, ডর্মেটরি ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি সহ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন স্থানের নিরাপত্তা প্রদানে আনসার সদস্যগন নিয়োজিত থাকেন। তারা দিন-রাত মিলিয়ে একই স্থানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন পালাক্রমে নিরাপত্তা প্রদানে জাগ্রত থাকেন।
আনসার সদস্যগন দিনরাত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায়, ক্যাম্পাসকে সুরক্ষিত রাখার জন্য চাকুরির সুবাদে পরিবার থেকে দীর্ঘ দূরত্বে থেকে কেউ একাকীত্বকেই বরণ করে নেন কেউ আবার এখানকার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে যান। ক্যাম্পাসের প্রতিটি মানুষের সাথে তার একটি বন্ধন থাকে। সেই সুবাদে সে কারো অধীনস্ত, কারো ভাই, কারো মামা, কারো আঙ্কেল। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মানুষজনের সাথে তাদের একটি সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব আনসার সদস্যদের । সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করে চলছেন তারা। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস শূন্য হয়ে থাকলেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা । এ যেন একা রেখে চলে যাওয়া বিচ্ছেদ। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছুটি এমনকি ঈদেও তারা বাড়ি যেতে পারেন না। সেইসাথে রয়েছে একটি ছোট টিনশেড ঘরে মানবেতর জীবনযাপন।
আবুল বাশার নামের এক আনসার সদস্য বলেন, আমার বাড়ি নাটোরে। আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিসি, এপিসি মিলে প্রায় ৪৯ জন আনসার সদস্য কাজ করছি। পরিবার থেকে দূরে থাকি। আসলে পরিবারের কাছ থেকে দূরে থাকতে খারাপই লাগে। তারপরও থাকতে হয় পরিবার আছে, টাকা পয়সার দরকার লাগে। তাই অনেক ত্যাগ তিতীক্ষা করতে হয়। আমরা এখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করি। শিক্ষার্থীরাও আমাদের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিকতা প্রদর্শন করে।
উত্তরবঙ্গের রংপুর থেকে আসা আরেকজন আনসার সদস্য মোহাম্মদ হাসান বলেন, আমি একজন সরকারি কর্মচারি, আমার জন্য সরকারী যে নীতিমালা রয়েছে, সেগুলো মানতেই হয়। তাছাড়া আমরা এখানে স্থায়ী নই, এখান থেকেও অন্য কোথাও ট্রান্সফার হতে পারি। আমাদের দুই-তিন মাস অন্তর অন্তর ছুটি দেয়া হয় এবং যথাসময়ে ফিরে আসতে হয়। তাই পরিবারকে যে যথেষ্ট সময় দেবো তা সম্ভব হয়ে উঠে না। ডিফেন্সের কেউ তা পারে না। একটি ঈদে ছুটিতে গেলে অন্য ঈদে আবার যেতে পারি না। যেকোন একটা ঈদ পরিবারের সাথে করতে পারি। অন্য ঈদটি কর্মস্থলেই করতে হয়। এই বিষয়টি একটু খারাপই লাগে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

পরিবার ছেড়ে কুবি সুরক্ষায় নিয়োজিত আনসার সদস্যগন 

আপডেট সময় : ০৩:২৮:১৬ অপরাহ্ণ, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

কুবি প্রতিনিধি:

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়(কুবি)তে ক্যাম্পাস নিরাপত্তার কাজে সর্বদা নিয়োজিত থাকেন আনসার সদস্যগন। পেশাগত কারণে দায়িত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে পরিবার থেকে বহুদূরে থাকেন। অনেক দূরবর্তী একটি স্থানকে আপন করে নিয়ে তার সুরক্ষায় সর্বদা জাগ্রত থাকেন।

প্রশাসনিক ভবন, মূল ফটক, পাঁচটি হল, ডর্মেটরি ভবন, উপাচার্যের বাসভবন, বিভিন্ন ফ্যাকাল্টি সহ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ন স্থানের নিরাপত্তা প্রদানে আনসার সদস্যগন নিয়োজিত থাকেন। তারা দিন-রাত মিলিয়ে একই স্থানে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন পালাক্রমে নিরাপত্তা প্রদানে জাগ্রত থাকেন।
আনসার সদস্যগন দিনরাত ক্যাম্পাসের নিরাপত্তায়, ক্যাম্পাসকে সুরক্ষিত রাখার জন্য চাকুরির সুবাদে পরিবার থেকে দীর্ঘ দূরত্বে থেকে কেউ একাকীত্বকেই বরণ করে নেন কেউ আবার এখানকার মাটি ও মানুষের সাথে মিশে যান। ক্যাম্পাসের প্রতিটি মানুষের সাথে তার একটি বন্ধন থাকে। সেই সুবাদে সে কারো অধীনস্ত, কারো ভাই, কারো মামা, কারো আঙ্কেল। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল মানুষজনের সাথে তাদের একটি সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্ক থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব আনসার সদস্যদের । সর্বক্ষণ দায়িত্ব পালন করে চলছেন তারা। দীর্ঘদিন ক্যাম্পাস শূন্য হয়ে থাকলেও তাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন তারা । এ যেন একা রেখে চলে যাওয়া বিচ্ছেদ। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছুটি এমনকি ঈদেও তারা বাড়ি যেতে পারেন না। সেইসাথে রয়েছে একটি ছোট টিনশেড ঘরে মানবেতর জীবনযাপন।
আবুল বাশার নামের এক আনসার সদস্য বলেন, আমার বাড়ি নাটোরে। আমরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিসি, এপিসি মিলে প্রায় ৪৯ জন আনসার সদস্য কাজ করছি। পরিবার থেকে দূরে থাকি। আসলে পরিবারের কাছ থেকে দূরে থাকতে খারাপই লাগে। তারপরও থাকতে হয় পরিবার আছে, টাকা পয়সার দরকার লাগে। তাই অনেক ত্যাগ তিতীক্ষা করতে হয়। আমরা এখানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে কাজ করি। শিক্ষার্থীরাও আমাদের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিকতা প্রদর্শন করে।
উত্তরবঙ্গের রংপুর থেকে আসা আরেকজন আনসার সদস্য মোহাম্মদ হাসান বলেন, আমি একজন সরকারি কর্মচারি, আমার জন্য সরকারী যে নীতিমালা রয়েছে, সেগুলো মানতেই হয়। তাছাড়া আমরা এখানে স্থায়ী নই, এখান থেকেও অন্য কোথাও ট্রান্সফার হতে পারি। আমাদের দুই-তিন মাস অন্তর অন্তর ছুটি দেয়া হয় এবং যথাসময়ে ফিরে আসতে হয়। তাই পরিবারকে যে যথেষ্ট সময় দেবো তা সম্ভব হয়ে উঠে না। ডিফেন্সের কেউ তা পারে না। একটি ঈদে ছুটিতে গেলে অন্য ঈদে আবার যেতে পারি না। যেকোন একটা ঈদ পরিবারের সাথে করতে পারি। অন্য ঈদটি কর্মস্থলেই করতে হয়। এই বিষয়টি একটু খারাপই লাগে।