ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এক দিনে ১৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরাইলের অব্যাহত আক্রমণে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৫৭ হাজার ২৬৮ জনে পৌঁছেছে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) তুর্কী বার্তাসংস্থা আনাদোলু অ্যাজেন্সি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ৬২৫ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। ফলে ইসরাইলি আক্রমণে আহতের সংখ্যা এক লাখ ৩৫ হাজার ১৭৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অনেক ভুক্তভোগী এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন। উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মানবিক সাহায্য নিতে গিয়ে ৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৩০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। ফলে ২৭ মে থেকে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে নিহত ত্রাণপ্রত্যাশীর সংখ্যা ৭১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরো চার হাজার ৮৩৭ জন।
ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত এই নতুন সাহায্য ব্যবস্থাকে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা মৃত্যুফাঁদ হিসেবে সমালোচনা করেছেন।
চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর চাপে বাধ্য হয়ে ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির দুই মাসের মধ্যেই ইসরাইল আবারো ব্যাপকহারে সামরিক অভিযান চালানো শুরু করে। গত ১৮ মার্চ ভোরে শুরু হওয়া অভিযানে এখনো পর্যন্ত কমপক্ষে ছয় হাজার ৭১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ২৩ হাজার ৫৮৪ জন আহত হয়েছেন। এর আগে, ইসরাইল গত ২ মার্চ থেকে গাজায় সব ধরনের মানবিক সহায়তার প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সেখানে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গাজায় সামরিক অভিযান চালানোর জন্য গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও দায়ের করা হয়েছে।