ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন আজ

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৯:৪৩:১৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
  • ৭০৮ বার পড়া হয়েছে

দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন আজ (শনিবার)। ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

তার পিতা দুলা মিঞা সওদাগর ও মাতার নাম সুফিয়া খাতুন। সহধর্মিণী অধ্যাপক দিনা আফরোজ। এছাড়া ড. ইউনূস দুই কন্যার বাবা।

২০০৬ সালে মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি বেশ আগ্রহ ছিল ড. ইউনূসের। এ ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের কলিজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় তিনি ১৬তম হন। পরে চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করেন ড. ইউনূস।

১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য ফুলব্রাইট স্কলারশিপ লাভ করেন। ১৯৭১ সালে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ইন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে পরে আমেরিকার মার্সিসবোরোতে মিডিল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আমেরিকায় একটি নাগরিক কমিটি গঠন করেন এবং অন্যান্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সমর্থন সংগ্রহ করতে ‘বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার’ পরিচালনা করেন।

দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের পর ড. ইউনূস মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। চালু করেন গ্রামীণ অর্থনৈতিক প্রকল্প। ১৯৭৬ সালে পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প চালু করেন। ১৯৮৩ সালে এই প্রকল্পটি ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ হিসেবে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে এর কর্মকাণ্ড বিস্তৃত। বাংলাদেশের বাইরেও আমেরিকাসহ গ্রামীণ ব্যাংক পদ্ধতি বিশ্বের ৪০টি দেশে এ মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।

ড. ইউনূস ২০০৬ সালে তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন, যা তাকে বাংলাদেশের প্রথম নোবেলজয়ী হিসেবে বিশ্বমঞ্চে স্বীকৃতি এনে দেয়। এছাড়া তিনি বিশ্বখাদ্য পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে দেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের সূচনা ঘটে। পরে শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করলে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, যেখানে তিনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ ও সমাজ সংস্কারকের জন্মদিনে দেশজুড়ে বিভিন্ন মহল থেকে শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন আজ

আপডেট সময় : ০৯:৪৩:১৬ পূর্বাহ্ণ, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জন্মদিন আজ (শনিবার)। ১৯৪০ সালের ২৮ জুন চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার বাথুয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

তার পিতা দুলা মিঞা সওদাগর ও মাতার নাম সুফিয়া খাতুন। সহধর্মিণী অধ্যাপক দিনা আফরোজ। এছাড়া ড. ইউনূস দুই কন্যার বাবা।

২০০৬ সালে মুহাম্মদ ইউনূস এবং তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংক যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। এরপর তিনি হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার প্রতি বেশ আগ্রহ ছিল ড. ইউনূসের। এ ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের কলিজিয়েট স্কুল থেকে মেট্রিকুলেশন পরীক্ষায় তিনি ১৬তম হন। পরে চট্টগ্রাম কলেজে পড়াশোনা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক করেন ড. ইউনূস।

১৯৬১ সালে চট্টগ্রাম কলেজের অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনার জন্য ফুলব্রাইট স্কলারশিপ লাভ করেন। ১৯৭১ সালে ভান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম ইন ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। সেখানে পরে আমেরিকার মার্সিসবোরোতে মিডিল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতির সহকারী অধ্যাপক ছিলেন।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি আমেরিকায় একটি নাগরিক কমিটি গঠন করেন এবং অন্যান্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তিযুদ্ধের জন্য সমর্থন সংগ্রহ করতে ‘বাংলাদেশ ইনফরমেশন সেন্টার’ পরিচালনা করেন।

দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে দুর্ভিক্ষের পর ড. ইউনূস মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসেন। চালু করেন গ্রামীণ অর্থনৈতিক প্রকল্প। ১৯৭৬ সালে পার্শ্ববর্তী জোবরা গ্রামে পরীক্ষামূলকভাবে গ্রামীণ ব্যাংক প্রকল্প চালু করেন। ১৯৮৩ সালে এই প্রকল্পটি ‘গ্রামীণ ব্যাংক’ হিসেবে রূপান্তরিত হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ গ্রামে এর কর্মকাণ্ড বিস্তৃত। বাংলাদেশের বাইরেও আমেরিকাসহ গ্রামীণ ব্যাংক পদ্ধতি বিশ্বের ৪০টি দেশে এ মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে।

ড. ইউনূস ২০০৬ সালে তার প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ব্যাংকের সঙ্গে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন, যা তাকে বাংলাদেশের প্রথম নোবেলজয়ী হিসেবে বিশ্বমঞ্চে স্বীকৃতি এনে দেয়। এছাড়া তিনি বিশ্বখাদ্য পুরস্কার, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম ও কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেলসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন।

২০২৪ সালের জুলাইয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে দেশের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তনের সূচনা ঘটে। পরে শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করলে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়, যেখানে তিনি প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন।

নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদ ও সমাজ সংস্কারকের জন্মদিনে দেশজুড়ে বিভিন্ন মহল থেকে শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে।