শিরোনাম :
Logo কয়রায় বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশ Logo প্রধান উপদেষ্টা ও কোসোভোর রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাত Logo ইসরায়েল মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে: ট্রাম্প Logo শহীদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগই ফ্যাসিবাদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল: শফিকুর রহমান Logo চাঁদপুর জেলা ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সাইদ হোসেন অপু চৌধুরীর মনোনয়নপত্র জমা Logo চাঁদপুর জেলা পুলিশের মাস্টার প্যারেড অনুষ্ঠিত Logo ইবিতে জুলাই-৩৬ পরেও আবার কোটা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন Logo ২৫ জুন শুরু হচ্ছে রাবির কলা অনুষদের ৩য় আন্তর্জাতিক সম্মেলন Logo অস্ত্র উদ্ধার অভিযানের ডিবি টিমকে চাঁদপুর জেলা পুলিশের পুরস্কার প্রদান Logo কচুয়ায় মিলন হত্যা মামলায় দুই জনের মৃত্যুদন্ড, একজনের যাবজ্জীবন

প্রধান উপদেষ্টা ও কোসোভোর রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাত

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৮:১৩:৪৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • ৭০৬ বার পড়া হয়েছে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রজাতন্ত্র কোসোভোর রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাঁরা সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।

প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তাঁর নতুন দায়িত্বের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশে উষ্ণ স্বাগত জানান।

বাংলাদেশের ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর চেতনার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধান উপদেষ্টা কোসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।

উত্তরে রাষ্ট্রদূত প্লানা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে প্রজাতন্ত্র কোসোভোকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ কোসোভোর অবদান আমাদের জীবনের পুনর্গঠনে বিশেষ সহায়ক হয়েছে। আমরা বাংলাদেশকে আমাদের জন্য একটি মূল্যবান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি। আমি আপনার ব্যক্তিগত অঙ্গীকারের প্রতিও সম্মান জানাতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগ আমাদের জাতির জন্য বিরাট সহায়তা ছিল। স্বাধীনতা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতিও কৃতজ্ঞ, যারা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কোসোভোতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কোসোভো বর্তমানে দেশটির শীর্ষস্থানীয় মাইক্রোক্রেডিট সংস্থা হিসেবে ২০টি পৌরসভা ও ২১৯টি গ্রামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার ৯৭ শতাংশ ঋণগ্রহীতা নারী।

এই সংস্থাটি বাংলাদেশের গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগে গঠিত।

চ্যালেঞ্জপূর্ণ সেই সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল। আমরা যখন সেখানে পৌঁছাই, চারপাশে ধ্বংসস্তূপ—পুরুষেরা তখনও ফেরেনি। কোনো মুদ্রা ছিল না, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল না। আমরা সেখানে শূন্য থেকে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু করি।’

আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক, ওষুধশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং হালকা প্রকৌশল খাতকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

তিনি কোসোভোর বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত প্লানা দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে উভয় দেশের চেম্বার অব কমার্স ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

জনগণের মধ্যে সরাসরি সংযোগ বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা কোসোভোর বিভিন্ন খাতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রদূতকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, কোসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাড়াতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে বৃত্তি, ফেলোশিপ ও শিক্ষা অনুদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

 

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কয়রায় বিএনপির সম্প্রীতি সমাবেশ

প্রধান উপদেষ্টা ও কোসোভোর রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাত

আপডেট সময় : ০৮:১৩:৪৮ অপরাহ্ণ, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত প্রজাতন্ত্র কোসোভোর রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা। আজ মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তাঁরা সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন।

প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূত প্লানাকে তাঁর নতুন দায়িত্বের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং বাংলাদেশে উষ্ণ স্বাগত জানান।

বাংলাদেশের ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর চেতনার প্রতি ইঙ্গিত করে প্রধান উপদেষ্টা কোসোভোর জনগণের স্বাধীনতা, শান্তি ও জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রতি দৃঢ় প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন।

উত্তরে রাষ্ট্রদূত প্লানা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে প্রজাতন্ত্র কোসোভোকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ কোসোভোর অবদান আমাদের জীবনের পুনর্গঠনে বিশেষ সহায়ক হয়েছে। আমরা বাংলাদেশকে আমাদের জন্য একটি মূল্যবান অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করি। আমি আপনার ব্যক্তিগত অঙ্গীকারের প্রতিও সম্মান জানাতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগ আমাদের জাতির জন্য বিরাট সহায়তা ছিল। স্বাধীনতা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আমাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের প্রতিও কৃতজ্ঞ, যারা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে কোসোভোতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ কোসোভো বর্তমানে দেশটির শীর্ষস্থানীয় মাইক্রোক্রেডিট সংস্থা হিসেবে ২০টি পৌরসভা ও ২১৯টি গ্রামে কার্যক্রম পরিচালনা করছে, যার ৯৭ শতাংশ ঋণগ্রহীতা নারী।

এই সংস্থাটি বাংলাদেশের গ্রামীণ ট্রাস্টের উদ্যোগে গঠিত।

চ্যালেঞ্জপূর্ণ সেই সময়ের কথা স্মরণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এটি আমাদের জন্য একটি অসাধারণ অভিজ্ঞতা ছিল। আমরা যখন সেখানে পৌঁছাই, চারপাশে ধ্বংসস্তূপ—পুরুষেরা তখনও ফেরেনি। কোনো মুদ্রা ছিল না, ব্যাংকিং ব্যবস্থা ছিল না। আমরা সেখানে শূন্য থেকে গ্রামীণ ব্যাংক শুরু করি।’

আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়, বিশেষ করে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোর মধ্যে তৈরি পোশাক, ওষুধশিল্প, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য এবং হালকা প্রকৌশল খাতকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।

তিনি কোসোভোর বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত প্লানা দুই দেশের ব্যবসায়ী সমাজের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে উভয় দেশের চেম্বার অব কমার্স ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানান।

জনগণের মধ্যে সরাসরি সংযোগ বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা কোসোভোর বিভিন্ন খাতে আরও বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রদূতকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি আরও বলেন, কোসোভোর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি বাড়াতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে বৃত্তি, ফেলোশিপ ও শিক্ষা অনুদানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।