পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায়ের পরপরই গোটা দেশের মতো রাজধানীজুড়েও শুরু হয়েছে পশু কোরবানির ধুম। ধর্মীয় দায়িত্ব পালন ও ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নগরবাসী সকাল থেকেই নিজেদের মতো করে কোরবানি দিচ্ছেন।
গ্যারেজ, রাস্তাঘাট কিংবা হাউজিং এলাকার নির্ধারিত স্থানে যেখানে সুযোগ মিলেছে, সেখানেই চলছে পশু জবাইয়ের কাজ।
আজ শনিবার (৭ জুন) সকাল ৭টার আগেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় কোরবানির দৃশ্য দেখা গেছে। এক দিকে চলছে গরু, ছাগল জবাই, অপর দিকে মাংস কাটা, বণ্টন ও পরিচ্ছন্নতার কাজ। সবদিকেই উৎসবের আবহ। বাড়ির বৃদ্ধি থেকে শিশু সবার মধ্যেই দেখা যাচ্ছে অন্যরকম আনন্দ।
রামপুরার বাসিন্দা মো. মহিউদ্দিন বলেন, আল্লাহর রহমানে কোরবানি দিচ্ছি। ইতোমধ্যে গরু জবাই হয়ে গেছে। আল্লাহর সন্তুষ্ট লাভের আশায় এই কোরবানি দেওয়া। যে মাংস হবে ধর্মীয় বিধান মেনে বণ্টন করে দেবো। কবুল করার মালিক আল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, দুইদিন আগে গরু কিনেছি। এই দুদিন গরুটির প্রতি বেশ মায়া জন্মেছে। বাড়ির শিশুরাও গরুটির দেখভাল করেছে এই দুদিন। ঈদের নাম আদায় করে এসে এখন গরু জবাই দিলাম। আল্লাহ রহমত দান করলে বাকি কাজ ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।
বনশ্রীর বাসিন্দা মো. ইব্রাহিম হুসাইন বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমত ঈদের দুই রাকাত নামাজ আদায় করতে পেরেছি। ঈদের নামাজ আদায় করে মৌলভি দিয়ে গরু জবাই করেছি। এখন কষাইরা কাটাকুটির কাজ করবেন। যেহেতু আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দিচ্ছি, তাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য মাংস খাওয়া না। যার যা পাওনা ধর্মীয় বিধান মেনে বণ্টন করে দেবো।
এ দিকে সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, এবার ঈদে দ্রুত বর্জ্য অপসারণে বিশেষ টিম কাজ করছে। ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোরবানির পশুর বর্জ্য ১২ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এ জন্য প্রায় ২০ হাজার ২৬৭ পরিচ্ছন্ন কর্মী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
দ্রুততম সময়ের মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে দুই সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। দ্রুত ও নির্ধারিত সময়েই বর্জ্য অপসারণে হটলাইন খোলা থাকবে এবং বর্জ্য অপসারণের জন্য প্রায় ১৩ লাখ ৯০ হাজার প্লাস্টিক, পলিব্যাগ ও বায়ো-ডিগ্রেডেবল ব্যাগ সরবরাহ করেছে দুই সিটি কর্তৃপক্ষ
ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী, কোরবানির পশুর মাংস আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুঃস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়। অনেক সামাজিক সংগঠন দরিদ্র মানুষের ঘরে কোরবানির মাংস পৌঁছে দিতে কাজ করছে। ঈদের এই দিনে ধর্মীয় আবেগের পাশাপাশি সামাজিক সংহতি, সহমর্মিতা এবং সহযোগিতার চিত্রও ফুটে উঠেছে রাজধানীর অলিতে-গলিতে।