ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে নববর্ষের শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য বানানো দুটি মোটিফকে ভস্মীভূতের ঘটনা রহস্যজনক নয়, পরিকল্পিত বলে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। তাদের দাবি, অবিলম্বে অগ্নিকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিতের মাধ্যমে তাদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি নিশ্চিত করা হোক।
আজ শনিবার (১২ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাঙালি জাতির ঐতিহ্যের স্মারক পয়লা বৈশাখ। এ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের আর মাত্র দু’দিন বাকি। আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য ফ্যাসিস্টদের প্রতিকৃতি তৈরিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষদিকে তখন শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোররাতে চারুকলা অনুষদের চার দেওয়ালের ভেতরে তৈরি করা এসব প্রতিকৃতিতে আগুন দেয়া নিছক কোনো রহস্যজনক নয়। এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড। এ ঘটনায় ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের দোসর কিংবা ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের হাত থাকার সম্ভাবনা বেশি।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা পালনের লক্ষ্যে তৈরিকৃত প্রতিকৃতিসহ অন্যান্য জিনিসের নিরাপত্তার জন্য রাতে ছিল না বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কেউ। পুলিশ থাকলেও তাদের অবস্থান ছিল গেটের বাইরে। তাছাড়া গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ভূমিকাও রহস্যজনক।
তারা বলেন, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর চারুকলার শোভাযাত্রা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা অত্যাবশ্যক ছিল। এমনকি আয়োজকেরা এ বিষয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়ে সংশ্লিষ্টদের বলেছিলেন, যে কোনো সময় ফ্যাসিস্ট সহযোগীরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে পারে। এরপরও নিরাপত্তা নিয়ে জোরালো পদক্ষেপ ছিল না। যার ফলে নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক নয়।
এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বা নিরাপত্তায় নিয়োজিত বাহিনীগুলোর কোনো দুর্বলতা রয়েছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি তোলেন তারা। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহ্বানও তারা।
উল্লেখ্য, আজ ভোরে নববর্ষের শোভাযাত্রার জন্য তৈরি করা ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও শান্তির পায়রা মোটিফে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে কীভাবে এই আগুনের সূত্রপাত তা এখনো শনাক্ত করতে পারেনি কেউই।