নিউজ ডেস্ক:
রাজধানীর শাহজাহানপুরের রেলওয়ে মাঠসংলগ্ন পানির পাম্পের পাইপে পড়ে শিশু জিহাদের (৩) মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার রায় আগামীকাল ঘোষণা করা হবে।
ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আকতারুজ্জামানের আদালত এ রায় ঘোষণা করবেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর শওকত আলম বিষয়টি জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, রোববার দুপুরে মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। রায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণত অবহেলাজনিত এ আইনের বিচার আমাদের দেশে হয় না। তাই আমরা চাচ্ছি আদালতের মাধ্যমে এ মামলায় একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য। আমরা আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সচেষ্ট হয়েছি। আমরা তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির প্রত্যাশা করছি।
এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি আসামিদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের জন্য এদিন ঠিক করেন আদালত।
মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষে নিহতের বাবা বাদী নাসির উদ্দিন ফকিরসহ ১১ জন সাক্ষ্য দেন। এরপর আসামিপক্ষে রেলওয়ের ঢাকার বিভাগীয় প্রকৗশলী হামিদুর রহমান ও রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মাসুদ করিম এবং রেলওয়ের পরিচালক (প্রকৌশল) আব্দুল হক সাফাই সাক্ষ্য প্রদান করেন।
মামলার আসামিরা হলেন-রেলওয়ের জ্যেষ্ঠ উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসআর হাউজের মালিক মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে আব্দুস সালাম, কমলাপুর রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার জাফর আহমেদ শাকি, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) দীপক কুমার ভৌমিক এবং সহকারী প্রকৌশলী-২ মো. সাইফুল ইসলাম।
২০১৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর বেলা ৩টায় শিশু জিহাদ পাইপের মধ্যে পড়ে গেলে মিডিয়ার মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়লে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়। রাতভর ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার অভিযান ব্যর্থ হয়। পরদিন দুপুরে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহমেদ খান শিশুটি পাইপে নেই বলে ঘোষণা দিয়ে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন। এরপর শিশুটিকে উদ্ধারে কাজ করেন জনৈক মজিদ, লিটু ও আনোয়ার। তাদের তৈরি একটি ক্যাচারের মাধ্যমে জিহাদকে টেনে তোলা হয়।
ওই ঘটনায় জিহাদের বাবা নাসির উদ্দিন ফকির ২০১৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর একটি মামলা দায়ের করেন। জিহাদের বাবার করা মামলায় চার মাসের মধ্যে ২০১৫ সালের ৭ এপ্রিল শাহজাহানপুর থানার এসআই আবু জাফর জাহাঙ্গীর আলম এবং শফিকুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
কিন্তু ওই ওই চার্জশিটের বিরুদ্ধে অপর চারজনও দায়ী বলে নারাজী দাখিল করলে ২০১৫ সালের ৪ জুন সিএমএম আদালত ডিবি পুলিশকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলাটি অধিকতর তদন্তের পর আসামিদের অভিযুক্ত করে ডিবি পুলিশের এসআই মিজানুর রহমান গত বছর ৩১ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর গত বছরের ৪ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।