বায়েজীদ (গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি) :
গোবিন্দগঞ্জের আলোচিত কিশোর অটোচালক হত্যা মামলার তিন আসামী আটক
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের আলোচিত কিশোর অটোচালক দিলবর হত্যা মামলার তিন আসামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সাথে দিলবরের ব্যবহৃত অটোটি উদ্ধার করে পুলিশ। আটককৃত তিন আসামী আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। আটককৃতরা হলো উপজেলার পারইল দক্ষিণপাড়ার মমতাজ আলীর ছেলে মনোয়ার হোসেন (৩৫), মনোয়ারের খালাতো ভাই কাদেরের ছেলে মিন্নাছ আকন্দ (৩৮) ও শাহপাড়া খলসীর মহেন্দ্র মহন্তের ছেলে চন্দন মহন্ত (৪৫)।
থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ সেপ্টেম্বর কিশোর অটোচালক দিলবর কে খুন করে তার ব্যবহৃত অটো টি ছিনতাই করা হয়। পুলিশ অনেক চেষ্টা করেও এই মামলার কুলকিনারা করতে পারছিলো না। এক রকম ক্লুলেজ অবস্থায় ছিল কিশোর দিলবর হত্যাকান্ডের ঘটনা। কিন্তু প্রকৃতির নিয়েই দিলবরের খুনিরা আবার নতুন শিকারের নেশায় মত্ত হয়ে যায়। আটককৃত মনোয়ার তার প্রতিবেশী আরেক কিশোর অটো চালক জাহিদকে টার্গেট করে।
মনোয়ার গত ৬ অক্টোবর কিশোর অটোচালক জাহিদের অটো ভাড়া নেওয়ার জন্য কয়েকবার ফোন দেয়। সন্ধ্যায় জাহিদের অটো নিয়ে মনোয়ার প্রথমে দিঘিরহাটে গিয়ে চা নাস্তা খায়। এরপর জাহিদের কাছ থেকে ২০ টাকা ধার নিয়ে নাস্তার বিল পরিশোধ করে। পরে রাত ৮টার দিকে জাহিদ কে নিয়ে রোয়াগাও-শাখাহার গ্রামের মাঝের ফাঁকা রাস্তায় নিয়ে আসে। ওই ফাঁকা জায়গায় জাাহিদকে তার অটোর লাইট অফ করতে বলে। মনোয়ার পিছন থেকে জাহিদের গলায় গামছা পেঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে ফেলে রেখে যায় এবং জাহিদের মোবাইল, অটো ও ভাড়া খাটার ১০০ টাকা নিয়ে যায়।
কিন্তু আল্লাহের কুদরতে জাহিদ বেঁচে যায়। অল্প সময়ের মধ্যেই তার জ্ঞান ফিরে আসে। সে দেখতে পায় তার অটোর আলো। জাহিদ অটোর পিছনে চিল্লাতে চিল্লাতে দৌড়াতে থাকে। তার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে মনোয়ার ধান ক্ষেতের ভিতরে লুকিয়ে পড়ে। পরে পুলিশ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় কালাই থানা সীমান্ত এলাকা থেকে তাকে আটক করে। তার কাছ থেকে জাহিদের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে মনোয়ার কিশোর আটক চালক দিলবর কে হত্যা করার দায় স্বীকার করে। অপর দুই আটককৃতের সহযোগিতায় রংপুর জেলার পীরগঞ্জে অটোটি বিক্রি করে। পুলিশ পীরগঞ্জ থেকে দিলবরের অটোটি উদ্ধার করে।
গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি একেএম মেহেদী হাসান জানান, আটককৃত তিন জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।