দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জনের সময় কুমারী মেয়েকে
নিউজ ডেস্ক:দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা আদিবাসী পাড়ায় বিজয়া দশমীর দিন কুমারী মেয়েকে সিঁদুর পরানো ও মুখে রঙ লাগানোকে কেন্দ্র করে ছুরিকাঘাতে একজন রক্তাক্ত জখম হয়েছেন। গণধোলাইয়ে আহত হয়েছেন আরেক ব্যক্তি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে কার্পাসডাঙ্গা আদিবাসী পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। চুরিকাঘাতে আহত ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে রাজশাহী রেফার্ড করেন।
জানা গেছে, গতকাল বিজয়া দশমীর দিন বিকেলে মেয়েরা কপালে একে অপরের সিঁদুর দেওয়াসহ মুখে রঙ মাখামাখি করে। কিন্তু কোনো কুমারী মেয়ের কপালে সিঁদুর লাগানো যাবে না, এমন নিয়ম অমান্য করে কার্পাসডাঙ্গা আদিবাসী পাড়ার নির্মলের ছেলে সঞ্জয় একই পাড়ার ছোটমনির মেয়েকে রঙ ও সিঁদুর মাখিয়ে দেন। বিষয়টি দেখে ওই মেয়ের মা সঞ্জয়কে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সঞ্জয় মেয়েটির মায়ের গালে চড় মারেন। পরবর্তী সময়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাঘাডাঙ্গা সড়কে ভৈরব গাঙে প্রতিমা বিসর্জনের সময় সঞ্জয় পুনরায় ওই মেয়েটির মুখে রঙ দিয়ে দেন এবং গায়ে ধাক্কা মারেন। বিষয়টি নিয়ে মেয়েটির মা প্রতিবাদ করলে তাঁকে আবারও চড় মারেন সঞ্জয়। এ সময় পাশেই থাকা মেয়েটির ভাই পরান ক্ষিপ্ত হয়ে সঞ্জয়কে ছুরিকাঘাত করে মোক্তারপুর গ্রামের মীর্জা মোল্লার ছেলে ইজিবাইকচালক হিরক মোল্লার ইজিবাইকে গিয়ে বসেন। এতে করে হিরকের ওপর সন্দেহের বশবর্তী হয়ে তাঁকে গণধোলাই দেয় আদিবাসী পাড়ার লোকজন। এতে হিরক গুরুতর আহত হন। এ ঘটনার পর আহত সঞ্জয় ও হিরককে চিকিৎসার জন্য দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল জানান, গতকাল সন্ধ্যায় আহতাবস্থায় দুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন লোকজন। তাঁদের মধ্যে সঞ্জয় নামের একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতলের জুনিয়র সার্জারি কনসালট্যান্ট ডা. এহসানুল হক তন্ময় জানান, আহত সঞ্জয়ের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তিনি অতিরিক্ত মাত্রায় মদ্যপ অবস্থাতেও ছিলেন। তাঁর পেটের জখমের স্থান গুরুতর হওয়ায় অপারেশনের করা প্রয়োজন। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আইসিইউ সাপোর্ট ব্যবস্থা না থাকায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) সাইফুল জানান, ‘মারামারির ঘটনা শুনে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। দুজন আহত হয়েছেন, তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ বা মামলা করেননি।