নিউজ ডেস্ক:জীবননগর শহরে একতা বিগ ফোর্স সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকুরি দেয়ার নামে সাধারণ বেকার যুবকদের সাথে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, জীবননগর পৌর শহরের ৩নং ওয়ার্ডের রাজনগর পাড়ায় রানী ফুডের তৃতীয় তলায় সাইনবোর্ডবিহীন লোক আড়ালে একতা বিগ ফোর্স প্রাইভেট লিমিটেড নামের একটি সিকিউরিটি কোম্পানি খুলে মোটা অংকের টাকা বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে বেকার যুবকদের নিকট থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নাম মাত্র একটি অফিস খুলে তিনটি রুম নিয়ে জীবননগর শহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকার কিছু বেকার যুব ও যুবতীদের চাকুরী দিয়ে লোক দেখানো অফিস চালিয়ে যাচ্ছে এবং কয়েকটি স্থানে নিয়োগপত্রের বিজ্ঞপ্তি লাগিয়ে সরাসারি যোগাযোগের কথা বলা হয়। নিয়োগপত্রের এই কাগজ দেখে এলাকার বেকার যুবকরা চাকুরীর জন্য সেখানে গেলে তাদের নিকট থেকে ৮ হাজার ৫শ’ টাকা করে জামানত ও ৩শ’ টাকা করে ভর্তির জন্য কেটে রাখা হয়। যার কোন রশিদ দেয়া হচ্ছেনা। চাকুরী নামের এই প্রতারণার ফাঁেদ পড়ে অনেকে সর্বশান্ত হয়। একতা বিগ ফোর্স প্রাইভেট লিমিটেডের অফিসে যেয়ে দেখা যায়, বেশ কিছু যুবক টাকা হাতে করে বসে আছে জামানত জমা দেয়ার জন্য।
কথা হয় উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের যাদবপুর গ্রামের আলাউদ্দিনের সাথে। তিনি বলেন, আমি গত কয়েকদিন আগে একটি নিয়োগপত্র দেখে এখানে আসি। এখানে এসে আমি স্যারকে বলি চাকুরীর ব্যাপারে। তিনি আমাকে বলে তুমি রিক্রুটিং মার্কেটিং অফিসার হিসাবে আবেদন করবে তোমার বেতন হবে ৯ হাজার টাকা। তার জন্য তোমাকে জামানত হিসাবে ৮ হাজার ৫শ’ টাকা আর ভর্তি বাবদ ৩শ’ টাকা দিতে হবে। তার কথা মত টাকা জমা দিতে আসি। একই কথা বলেন অফিসে রিসিপসনে থাকা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের যুথি। তিনি বলেন, আমিও ৮ হাজার ৮শ’ টাকা দিয়ে যোগদান করেছি। এখানে আমি দুই মাস যাবত চাকুরী করছি। টাকা জমা দেয়ার কোন রশিদ দেয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন আমাকে কোন রশিদ দেয়নি। এদিকে অফিসে প্রবেশ করতেই ফিল্ট ম্যানেজার মামুন তেলেবেগুনে জোলে উঠেন।
অফিসে যেয়ে দেখা গেল টেবিলের উপর ৬০ জন প্রাথীর আবেদন জমা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দুঃখের বিষয় হচ্ছে নিয়োগপত্রটির বানান ছিলো সম্পূর্ণ ভুল। যাতে লেখা হয়েছে ‘নিয়গপত্র’। এদিকে একতা বিগ ফোর্সের সরকারীভাবে কোন অনুমোদন আছে কি না জানতে চাইলে ফিল্ড ম্যানেজার মামুন বলেন, এটার কোন অনুমোদন নেই, আমরা এখান থেকে নিয়োগ দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানীর কাছে পাঠিয়ে দিয়ে থাকি, তারা তাদের বেতন দেয়। টাকা নেওয়ার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন- এটা আমাদের এরিয়া ম্যানেজার যানে। এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। দীর্ঘক্ষন অপেক্ষার পর দেখা হয় এরিয়া ম্যাজোর নাঈমের সাথে। কথা বলতেই তিনি স্বীকার করে বলেন, তারা কোন অনুমোদন ছাড়াই কাজ করছে। আর টাকা জমা দেয়া ও রশিদ না দেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যে টাকা নিচ্ছি এটা শুধু প্রচারের জন্য। এ জন্য আমরা কোন রশিদ দিচ্ছি না।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, একতা বিগ ফোর্স প্রাইভেট লিমিটেড যে স্থানে অফিস ভাড়া নিয়ে তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে তার পাশেই পুলিশের কিছু কর্মকর্তা থাকে ভাড়া থাকে। এদিকে, প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে এ ধরনের অপকর্ম করে পার পেয়ে যাওয়ায় এলাকার সাধারণ জনগন, সুধী মহল হতাশ। তাই সকলে এই প্রতারক চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।