নিউজ ডেস্ক:
কানাডার সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপারের ছেড়ে দেওয়া আসনে অনুষ্ঠেয় উপনির্বাচনে এনডিপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন নিশ্চিত করলেন মাগুরার ছেলে খালিশ আহমেদ ।মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেছেন। খালিশ এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বিষয়টি বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনে জয়ী হতে সবার সহযোগিতা চান তিনি।
গত বছরের আগস্ট মাসে স্টিফেন হারপার হাউস অব কমন্স থেকে পদত্যাগ করলে ক্যালগেরি হেরিটেজ আসনটি শূন্য হয়ে যায়। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ আসনে নতুন নির্বাচন হতে হবে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার রাজনীতিক খালিশ আহমেদের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা সদরের হরেকৃষ্ণপুর গ্রামে।
বাংলাদেশের এক নিভৃত গ্রাম থেকে উঠে এসে কানাডার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খালিশের প্রার্থী হওয়ার গল্প এখন মানুষের মুখে মুখে। ব্রিটেনের পর কানাডায় প্রথম কোনো বাংলাদেশীর জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।
ক্যালগেরি হেরিটেজ আসনের আসন্ন উপনির্বাচনে জ্বালানি বিজ্ঞানি খালিশ আহমদের মনোনয়নের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ আসনটি কনজারভেটিভ পার্টির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। গত জাতীয় নির্বাচনে খালিশ আহমেদ ক্যালগেরি সিগন্যাল এলাকা থেকে এনডিপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সেই নির্বাচনে তিনি হেরে যান।
এবার মূলধারার মিডিয়া এবং জনগণের মধ্যে খালিশ আহমদের বক্তব্য বিশেষ গুরুত্ব পাওয়ায় স্টিফেন হারপারের ছেড়ে দেওয়া আসনে খালিশ আহমদের মনোনয়ন নিশ্চিত করে এনডিপি।
নির্বাচনে হেরে গেলেও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ জ্বালানি বিজ্ঞানির বক্তৃতা-বিবৃতি আলবার্টাবাসীর বিশেষ নজর কাড়ে। আলবার্টার মূলধারার মিডিয়াগুলোও তাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। নির্বাচনী প্রচারণায় দেওয়া তার ভাষণ স্থানীয় কয়েকটি টিভি চ্যানেল গুরুত্ব দিয়ে প্রচার করায় তিনি ভালো অবস্থানে আছেন বলে জানা গেছে। কনজারভেটিভ পার্টি এ আসনে ব্যবসায়ী বব বেনজেনকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছে।
খালিশ আহমেদ হরেকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাস করে উপজেলা সদরের ঐতিহ্যবাহী আরএসকেএইচ ইনস্টিটিউশনে ভর্তি হন। তার বাবা আফছার উদ্দিন আহমেদ এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ছিলেন। মাতা খুরশিদা পারভীন গৃহিণী।
১৯৮৮ সালে এসএসসি পাস করার পর রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূ-তত্ত্বে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে পিএইচডি করতে নরওয়ে যান। সেখানে আরেক দফা এমএ ডিগ্রি নিয়ে চলে আসেন কানাডার ক্যালগেরিতে। সেখানে তেল কোম্পানিতে ভূতত্ত্ববিদ হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন।
ভূতত্ত্ববিদ হিসেবে বিশেষ অবদান রাখায় তিনি কানাডায় জনপ্রিয়তা পান। এক সময় মূলধারার রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। স্ত্রী হামিদা নাসরিন, এক ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কানাডায় বাস করেন খালিশ আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করা হামিদা নাসরিন কানাডার একটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।
খালিশ আহমেদের বাবা-মা বলেন, কানাডার জাতীয় নির্বাচনে তাদের ছেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে এটা সবার জন্য আনন্দের। বিজয়ী হয়ে মহম্মদপুর তথা দেশের মুখ উজ্জল করবে এটাই তাদের প্রত্যাশা। এ জন্য দেশবাসী ও কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাছে দোয়া ও সহযোগিতা চান তারা।
খালিশ আহমেদ বলেন, নির্বাচনে জয়ী হলে নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কাজ করবেন এবং নতুন প্রজন্মের সম্ভাবনা কাজে লাগাবেন। পাশাপাশি নিজের জন্মভূমির জন্য কাজ করার জন্য অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি সবার কাছে দোয়া চান।