শিরোনাম :
Logo জুলাই আন্দোলনে নামাজ পড়তে বাধাদানে অভিযুক্ত বরখাস্ত শিক্ষককে ফেরাতে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি Logo কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তঃবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট-২০২৫ শুরু Logo বেরোবির এআইএস ক্লাবের নেতৃত্বে মিজান- আলবীর  Logo চাঁদপুরে বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস পালিত Logo কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক সংস্কারের দাবিতে অবরোধে ইবি শিক্ষার্থীরা Logo বুটেক্সে টেকসই উন্নয়নে পাটের ভূমিকা বিষয়ক সেমিনার, অতিথি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উপদেষ্টা Logo সাজিদ হত্যার তিন মাস; ইবি শিক্ষার্থীদের অভিনব প্রতিবাদ  Logo তারেক রহমানের ৩১ দফা বাস্তবায়নে যুবকদের কর্মসংস্থান হবে: আজিজুল বারী হেলাল Logo ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে চাঁদপুরে ইসলামী আন্দোলনের মানববন্ধন Logo দৈনিক মুন্সিগঞ্জের বার্তার মতবিনিময় ও পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত

ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে টানা বৃষ্টিতে কৃষকদের পাকা ধানে মই! আমন মৌসুমের ধান ঘরে তুলে খুশি না কৃষকরা

  • Nil Kontho
  • আপডেট সময় : ০৮:০৬:৩০ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭
  • ৮১৩ বার পড়া হয়েছে

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ কৃষকদের জমি থেকে নতুন ধান ঘরে আসার সাথে সাথে বাড়িতে শুরু হয় নানা উৎসব। তৈরি করা হয় বাহারি পিঠা। গ্রামে গ্রামে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। কিন্তু এবার আমন মৌসুমের ধান ঘরে তুলে খুশি না ঝিনাইদহ জেলার কৃষকরা। বাড়িতে কোনো রকম উৎসবের আমেজ নেই তাদের। কারণ ধান পাকার সময় বৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ধান গাছ পানিতে তলিয়ে যায়। সে সেময় ধানের শিষ বের হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে আমন মৌসুমে ধানের ফলন যেমন আশা করছিলেন তেমনটা তারা পাননি। পড়া ধান কেটে বাড়িতে এনে ঘরে তুলতে বেশ কষ্ট করতে হচ্ছে। বিঘা প্রতি আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক সোনা মন্ডল ও পাইকপাড়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। প্রায় সব জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলন ভালো ছিল কিন্তু মাঝে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেছে। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৮/১০ মণের বেশি এবার পাবেন না বলে জানান তিনি। উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের এক কৃষক বলেন, মাঠের পানি এখনো শুকায়নি। পানির মধ্যেই ধান কেটে রাখতে হচ্ছে। মাঠ শুকনো না হওয়ায় গাড়িতে ধান টানা যাচ্ছে না। মাথায় করে ধান বাড়িতে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এবার তিনিও ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান। ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির আলম জানান, এবার তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলেন। প্রথম দিকে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করে ছিলেন। কিন্তু ধান পাকার সময় টানা বৃষ্টিতে তার ২ বিঘা জমির ধান পানিতে পড়ে যায়। ওই ২ বিঘা থেকে তিনি ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান। ঘোষনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, বিঘা প্রতি বিঘায় ২৫ মণ ধান ঘরে তুলতাম। কিন্তু এবার ১০/১২ মণের বেশি পাব না। বৃষ্টিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, এ বছর কালীগঞ্জে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার হেক্টর। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৮ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। কৃষকরাও বাম্পার ফলনের আশা করছিল। কিন্তু হঠাৎই এই বৃষ্টিতে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি অফিসার শংকর চন্দ্র জানান, ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় এবার প্রায় ৯৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। আমন ধানে এবার বাম্পার ফলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অক্টোবর মাসে টানা ২/৩ দিনের বৃষ্টিতে জেলার অধিকাংশ জমিতে পানি জমে ও হালকা বাতাসে ধান গাছ পড়ে গেছে। যে সকল জমিতে ধান গাছ পড়ে গেছে সে জমির ফলন অনেক কম হবে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই আন্দোলনে নামাজ পড়তে বাধাদানে অভিযুক্ত বরখাস্ত শিক্ষককে ফেরাতে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

ঝিনাইদহ জেলা জুড়ে টানা বৃষ্টিতে কৃষকদের পাকা ধানে মই! আমন মৌসুমের ধান ঘরে তুলে খুশি না কৃষকরা

আপডেট সময় : ০৮:০৬:৩০ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০১৭

জাহিদুর রহমান তারিক,ঝিনাইদহঃ কৃষকদের জমি থেকে নতুন ধান ঘরে আসার সাথে সাথে বাড়িতে শুরু হয় নানা উৎসব। তৈরি করা হয় বাহারি পিঠা। গ্রামে গ্রামে শুরু হয় নবান্ন উৎসব। কিন্তু এবার আমন মৌসুমের ধান ঘরে তুলে খুশি না ঝিনাইদহ জেলার কৃষকরা। বাড়িতে কোনো রকম উৎসবের আমেজ নেই তাদের। কারণ ধান পাকার সময় বৃষ্টিতে তাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অক্টোবর মাসে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ধান গাছ পানিতে তলিয়ে যায়। সে সেময় ধানের শিষ বের হচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ টানা বৃষ্টিতে আমন মৌসুমে ধানের ফলন যেমন আশা করছিলেন তেমনটা তারা পাননি। পড়া ধান কেটে বাড়িতে এনে ঘরে তুলতে বেশ কষ্ট করতে হচ্ছে। বিঘা প্রতি আশানুরূপ ফলন পাচ্ছেন না বলে জানান তারা। ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলার এনায়েতপুর গ্রামের কৃষক সোনা মন্ডল ও পাইকপাড়া গ্রামের সাখাওয়াত হোসেন জানান, ৫ বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। প্রায় সব জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলন ভালো ছিল কিন্তু মাঝে টানা ৩/৪ দিনের বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেছে। বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ ধান পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৮/১০ মণের বেশি এবার পাবেন না বলে জানান তিনি। উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের এক কৃষক বলেন, মাঠের পানি এখনো শুকায়নি। পানির মধ্যেই ধান কেটে রাখতে হচ্ছে। মাঠ শুকনো না হওয়ায় গাড়িতে ধান টানা যাচ্ছে না। মাথায় করে ধান বাড়িতে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এবার তিনিও ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান। ঝিনাইদহ কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গির আলম জানান, এবার তিনি ৩ বিঘা জমিতে আমন ধান রোপণ করেছিলেন। প্রথম দিকে ধানের বাম্পার ফলনের আশা করে ছিলেন। কিন্তু ধান পাকার সময় টানা বৃষ্টিতে তার ২ বিঘা জমির ধান পানিতে পড়ে যায়। ওই ২ বিঘা থেকে তিনি ভালো ফলন পাবেন না বলে জানান। ঘোষনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, বিঘা প্রতি বিঘায় ২৫ মণ ধান ঘরে তুলতাম। কিন্তু এবার ১০/১২ মণের বেশি পাব না। বৃষ্টিতে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, এ বছর কালীগঞ্জে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার হেক্টর। কিন্তু এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৮ হাজার ৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে। কৃষকরাও বাম্পার ফলনের আশা করছিল। কিন্তু হঠাৎই এই বৃষ্টিতে কৃষকদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা কৃষি অফিসার শংকর চন্দ্র জানান, ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় এবার প্রায় ৯৯ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা। আমন ধানে এবার বাম্পার ফলন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অক্টোবর মাসে টানা ২/৩ দিনের বৃষ্টিতে জেলার অধিকাংশ জমিতে পানি জমে ও হালকা বাতাসে ধান গাছ পড়ে গেছে। যে সকল জমিতে ধান গাছ পড়ে গেছে সে জমির ফলন অনেক কম হবে।