নিউজ ডেস্ক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য নির্বাচনের জন্য তিন সদস্যের প্যানেল অনুমোদন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট।
এরা হলেন- বর্তমান উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ঢাবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামাল উদ্দিন এবং নীল দলের প্রাক্তন আহ্বায়ক ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ড. আবদুল আজিজ।
গতকাল শনিবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে এ প্যানেল চূড়ান্ত করা হয় বলে ঢাবি জনসংযোগ দফতরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। অধিবেশনে উপস্থিত থাকা এক সিনেটরও বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সভায় সিনেটের ১০৫ সদস্যের প্রায় অর্ধেক উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালনরত ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ আগস্ট। নতুন উপাচার্য মনোনয়নের প্রথম ধাপ উপাচার্য প্যানেল মনোনয়নের লক্ষ্যে গতকাল বিকেল ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে সিনেটের এ বিশেষ অধিবেশন বসে। এতে অন্য কোনো প্যানেলের প্রস্তাব না থাকায় একমাত্র প্যানেলটিই পাস হয়।
এই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আদালতেও গিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক, তাতে হাইকোর্ট সিনেটের এই অধিবেশন স্থগিত করে আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগ স্থগিত করার পর এই নির্বাচনের বাধা কেটে যায়।
সিনেটে মনোনীত এই তিনজনের নাম যাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে। তার মধ্য থেকে একজনকে উপাচার্য পদে নিয়োগ দেবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সিনেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, দুজন উপ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, সরকার মনোনীত পাঁচজন সরকারি কর্মকর্তা, স্পিকার মনোনীত পাঁচজন সংসদ সদস্য, আচার্য মনোনীত পাঁচজন শিক্ষাবিদ, সিন্ডিকেট মনোনীত গবেষণা সংস্থার পাঁচজন প্রতিনিধি, অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঁচজন অধ্যক্ষ, ১০ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, ৩৫ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি ও পাঁচজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি থাকেন ।
কিন্তু সিন্ডিকেট মনোনীত গবেষণা সংস্থার পাঁচজন প্রতিনিধি, অধিভুক্ত কলেজগুলোর পাঁচজন অধ্যক্ষ ও ১০ জন শিক্ষক প্রতিনিধি, ২৫ জন রেজিস্টার্ড গ্র্যাজুয়েট প্রতিনিধি ও পাঁচজন ছাত্র প্রতিনিধি বর্তমান সিনেটে নেই। তাই ১০৫ সদস্যের সিনেটের অর্ধেক সদস্য সিনেটের বিশেষ সভায় বসেছিলেন।
বিএনপি, জামায়াত-সমর্থিত শিক্ষকদের বর্জন, আওয়ামী লীগ-সমর্থিত শিক্ষকদের এক অংশের বিরোধিতা ও ডাকসু নির্বাচন ছাড়া উপাচার্য নির্বাচন না করতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে এই অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া সিনেট অধিবেশনের বিরোধিতা করে আসছেন। ডাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে ছাত্র প্রতিনিধি নির্ধারণ করে সিনেটে উপাচার্য প্যানেল মনোনয়নের দাবিতে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সিনেট ভবনের ফটকে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।