চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ডিঙ্গেদহ এলাকায় বিষাক্ত মদপানে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আরও তিনজন দিনমজুর বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহতদের সবাই নিম্নআয়ের মানুষ। এরমধ্যে কেউ ভ্যানচালক, কেউ মিল শ্রমিক, কেউবা মাছ ব্যবসায়ী।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে , গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ডিঙ্গেদহ বাজার এলাকায় কয়েকজন মিলে অ্যালকোহল পান করেন। এরপর একে একে অসুস্থ হয়ে বিভিন্ন সময়ে ছয়জন মারা গেছেন। গতকাল রবিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় একজনের মৃত্যুর পর বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরমধ্যে চারজনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তাদের পরিবারের সদস্যরা গোপন রেখেছেন বিষয়টি।
নিহতরা হলেন— সদর উপজেলার নফরকান্তি গ্রামের পূর্বপাড়ার ভ্যানচালক খেদের আলী (৪০), খেজুরা হাসপাতালপাড়ার মাছ ব্যবসায়ী মোহাম্মদ সেলিম (৪০), পিরোজখালি স্কুলপাড়ার ভ্যানচালক মোহাম্মদ লালটু ওরফে রিপু (৩০), শংকরচন্দ্র মাঝেরপাড়ার শ্রমিক মোহাম্মদ শহীদ (৪৫), ডিঙ্গেদহ টাওয়ারপাড়ার মিল শ্রমিক মোহাম্মদ সামির (৫৫) এবং ডিঙ্গেদহ এশিয়া বিস্কুট ফ্যাক্টরি পাড়ার শ্রমিক সরদার মোহাম্মদ লালটু (৫২)।
এছাড়া দিনমজুর আলিম উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বর্তমানে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) রাতে ডিঙ্গেদহ বাজারে বেশ কয়েকজন মিলে মদ পান করেন। এরপর একে একে সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। শনিবার (১১ অক্টোবর) প্রথমে খেদের আলী ও সেলিমের মৃত্যু হয়। পরদিন রবিবার দিনভর মারা যান বাকি চারজন। এর মধ্যে চারজনের পরিবারের সদস্যরা তাদেরকে দ্রুত দাফনও সম্পন্ন করেছেন।
ডিঙ্গেদহসহ আশপাশের গ্রামজুড়ে এখন শোকের ছায়া। একাধিক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটি হারিয়ে গেছে বিষাক্ত পানীয়ের ছোঁয়ায়। নিস্তব্ধ ঘরগুলো থেকে শুধু ভেসে আসছে আর্তনাদ— কেউ হারিয়েছেন স্বামী, কেউ সন্তান, কেউ ভাই।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে ডিঙ্গেদহ বাজারে গোপনে দেশি মদ বিক্রি হয়ে আসছে। প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করছেন তারা।