শুক্রবার | ৭ নভেম্বর ২০২৫ | হেমন্তকাল
শিরোনাম :
Logo নবাব ফয়জুন্নেসার সমাধিতে নোবিপ্রবিয়ানদের শ্রদ্ধা Logo কয়রায় সুন্দরবনে অবৈধ প্রবেশ: তিন জেলে আটক, জব্দ নৌকা ও ৮০ কেজি কাঁকড়া Logo চাঁদপুরে ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালিত Logo নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ স্মরণে প্যাপিরাস পাঠাগারের সাহিত্য আড্ডা Logo কয়রা–পাইকগাছার উন্নয়নে জনগণের পাশে থাকার অঙ্গীকার মনিরুল হাসানের Logo জাতীয় বিপ্লব দিবসে ইবিতে শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের র‌্যালি ও পুষ্পস্তবক অর্পণ  Logo বুটেক্সে শিক্ষার্থীর ওপর শারীরিক হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল, বহিষ্কার দাবি Logo খুবিতে এআই ফর একাডেমিক এন্ড রিসার্চ এক্সিলেন্স শীর্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত Logo জলবায়ু-সহনশীল জীবিকার পথে ‘ফ্ল্যাশ’ প্রকল্পের যাত্রা শুরু Logo একাডেমিক সংস্কারের দাবিতে জাতীয় ছাত্রশক্তির ৫ দফা প্রস্তাব

পলাশবাড়ীর আলোচিত ২২ কোটি টাকার মন্দির প্রতিষ্ঠাতা ‘হরিদাস’ সাধু নাকি প্রতারক।

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৮:৪৩:০৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
  • ৭৪৪ বার পড়া হয়েছে
বায়েজীদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা)  :
বর্তমান সময়ে পলাশবাড়ী উপজেলার সবচেয়ে আলোচিত মন্দির হলো শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ ও কালী মন্দির, যা ২নং হোসেনপুর ইউনিয়নের মধ্যরামচন্দ্রপুর (নয়াপাড়া) গ্রামে অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠাতার দাবি অনুযায়ী, এই মন্দিরটি আনুমানিক ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এবং এটি বর্তমানে উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন মন্দির হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
বিপুল অর্থে নির্মিত এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা শ্রী হরিদাস বাবুর আয়ের উৎস নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার হওয়ার কিছু ভিডিও ও সংবাদ মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তাকে নিয়ে সাধারণ মানুষের জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক ২০২২ এর নভেম্বরে কিসের অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিলেন ‘হরিদাস’!
হরিদাস চন্দ্র তরনীদাস, যিনি ধর্মান্তরিত হয়ে তাওহীদ ইসলাম নামেও পরিচিত, একজন প্রতারক চক্রের মূলহোতা হিসেবে ২০২২ সালের নভেম্বরে র‍্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের ভুয়া প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, চাকরিপ্রত্যাশী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
হরিদাস চন্দ্র বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার উথলী বাজার এলাকার গোপীনাথের ছেলে। তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন অবৈধভাবে ভারতে যান এবং সেখানকার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছ থেকে এতিম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পাস ও ইলেকট্রনিকস বিষয়ে দুই বছরের বিশেষ প্রশিক্ষণ শেষে ২০১০ সালে দেশে ফিরে এসি মেকানিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
২০১৮ সালে সবজি বিক্রেতার সঙ্গে সাবলেট বাসা ভাড়া নিয়ে ২০১৯ সালে ধর্মান্তরিত হয়ে হরিদাস চন্দ্র থেকে তাওহীদ ইসলাম নাম ধারণ করেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন।
প্রতারণার কৌশল ও আর্থিক কেলেঙ্কারি :
হরিদাস চন্দ্র নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের প্রটোকল অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, চাকরিপ্রত্যাশী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
তিনি ফুলবাড়িয়া এলাকায় প্রায় এক বিঘা জমি কিনে প্যারিস সুইমিংপুল এন্টারটেইনমেন্ট পার্ক নামে একটি রিসোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। রিসোর্টে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা, সুইমিংপুলে গোসল ১০০ টাকা এবং ঘোরাঘুরির জন্য ৫০ টাকা করে টিকিট বিক্রি করা শুরু করেন।
এছাড়া তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।
গ্রেফতার ও আইনি ব্যবস্থা :
২০২২ সালের ৭ নভেম্বর রাজধানীর বনানী এলাকায় র‍্যাব ও এনএসআইয়ের যৌথ অভিযানে হরিদাস চন্দ্র ও তার সহযোগী ইমরান মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল, জালিয়াতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডকুমেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এডিট করা ভুয়া ছবি জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ২০১৪ সাল থেকে শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

নবাব ফয়জুন্নেসার সমাধিতে নোবিপ্রবিয়ানদের শ্রদ্ধা

পলাশবাড়ীর আলোচিত ২২ কোটি টাকার মন্দির প্রতিষ্ঠাতা ‘হরিদাস’ সাধু নাকি প্রতারক।

আপডেট সময় : ০৮:৪৩:০৮ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৮ অক্টোবর ২০২৫
বায়েজীদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা)  :
বর্তমান সময়ে পলাশবাড়ী উপজেলার সবচেয়ে আলোচিত মন্দির হলো শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ ও কালী মন্দির, যা ২নং হোসেনপুর ইউনিয়নের মধ্যরামচন্দ্রপুর (নয়াপাড়া) গ্রামে অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠাতার দাবি অনুযায়ী, এই মন্দিরটি আনুমানিক ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এবং এটি বর্তমানে উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ ও দৃষ্টিনন্দন মন্দির হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
বিপুল অর্থে নির্মিত এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা শ্রী হরিদাস বাবুর আয়ের উৎস নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিশেষ করে ২০২২ সালের নভেম্বরে প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার হওয়ার কিছু ভিডিও ও সংবাদ মূলধারার গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে তাকে নিয়ে সাধারণ মানুষের জল্পনা কল্পনা শুরু হয়। আসুন জেনে নেওয়া যাক ২০২২ এর নভেম্বরে কিসের অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিলেন ‘হরিদাস’!
হরিদাস চন্দ্র তরনীদাস, যিনি ধর্মান্তরিত হয়ে তাওহীদ ইসলাম নামেও পরিচিত, একজন প্রতারক চক্রের মূলহোতা হিসেবে ২০২২ সালের নভেম্বরে র‍্যাব ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হন।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের ভুয়া প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, চাকরিপ্রত্যাশী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
হরিদাস চন্দ্র বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার উথলী বাজার এলাকার গোপীনাথের ছেলে। তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াকালীন অবৈধভাবে ভারতে যান এবং সেখানকার পঞ্চায়েত প্রধানের কাছ থেকে এতিম সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পাস ও ইলেকট্রনিকস বিষয়ে দুই বছরের বিশেষ প্রশিক্ষণ শেষে ২০১০ সালে দেশে ফিরে এসি মেকানিক হিসেবে কাজ শুরু করেন।
২০১৮ সালে সবজি বিক্রেতার সঙ্গে সাবলেট বাসা ভাড়া নিয়ে ২০১৯ সালে ধর্মান্তরিত হয়ে হরিদাস চন্দ্র থেকে তাওহীদ ইসলাম নাম ধারণ করেন। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা ও চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতে থাকেন।
প্রতারণার কৌশল ও আর্থিক কেলেঙ্কারি :
হরিদাস চন্দ্র নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের প্রটোকল অফিসার হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা, চাকরিপ্রত্যাশী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করতেন।
তিনি ফুলবাড়িয়া এলাকায় প্রায় এক বিঘা জমি কিনে প্যারিস সুইমিংপুল এন্টারটেইনমেন্ট পার্ক নামে একটি রিসোর্ট প্রতিষ্ঠা করেন। রিসোর্টে প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা, সুইমিংপুলে গোসল ১০০ টাকা এবং ঘোরাঘুরির জন্য ৫০ টাকা করে টিকিট বিক্রি করা শুরু করেন।
এছাড়া তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেন।
গ্রেফতার ও আইনি ব্যবস্থা :
২০২২ সালের ৭ নভেম্বর রাজধানীর বনানী এলাকায় র‍্যাব ও এনএসআইয়ের যৌথ অভিযানে হরিদাস চন্দ্র ও তার সহযোগী ইমরান মেহেদী হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৪টি মোবাইল, জালিয়াতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডকুমেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এডিট করা ভুয়া ছবি জব্দ করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ২০১৪ সাল থেকে শতাধিক মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।