কচুয়া উপজেলার সহদেবপুর গ্রামের মানুষজন বলছেন— মনোহর আলী ওরফে মনির হোসেন একজন সহজ-সরল, পরিশ্রমী মানুষ। কিন্তু তাকে নিয়ে যে ঘটনার জন্ম হয়েছে, তাতে হতবাক পুরো এলাকা। অভিযোগ উঠেছে, পারিবারিক কলহ ও ষড়যন্ত্রের জেরে তার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক ও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই মামলার কারণে শুধু মনোহর আলী নয়, তার পরিবারও চরম অসহায়ত্বের মধ্যে পড়েছে।
সোমবার বিকেলে সহদেবপুর জামালিয়া ওয়াদুদিয়া নূরানীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রধান ফটকের সামনে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের জন্ম হয়। গ্রামের শতশত নারী-পুরুষ, তরুণ-যুবক থেকে শুরু করে প্রবীণ সবাই একত্রিত হন একটি দাবিকে ঘিরে— “মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মনোহর আলীর মুক্তি।” মানববন্ধনে শিশুদের উপস্থিতিও চোখে পড়ার মতো ছিল। তাদের ছোট ছোট কণ্ঠে স্লোগান মিশে গিয়েছিল বড়দের উচ্চারণে।
স্থানীয়রা জানান, মনোহর আলী কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি নন, বরং সাধারণ জীবনযাপন করেন। তাকে ঘিরে মামলা সাজানো হয়েছে কেবল ব্যক্তিগত বিরোধের কারণে। বক্তারা আক্ষেপের সুরে বলেন— “যেখানে অপরাধী ঘুরে বেড়াচ্ছে, সেখানে নির্দোষ মানুষকে জেলে পাঠানো হয়েছে।”
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন— হান্নান মেম্বার, মামুন, জাকির পাটোয়ারী, গোলাম মোস্তফা, মিলন বেগম, সাবেক মহিলা মেম্বার নাসিমা আক্তার, শামীম হোসেন, মাহফুজা বেগম, সুখী বেগমসহ আরও অনেকে। তাদের সবার কণ্ঠে একটাই সুর— মনোহর আলীর মুক্তি।
প্রায় এক ঘণ্টাব্যাপী এ কর্মসূচি শেষে এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করে তার মুক্তির দাবিকে আরও জোরালো করে তোলে। নারী-পুরুষের দীর্ঘ সারিতে স্বাক্ষর চলছিল নিরবচ্ছিন্নভাবে। স্বাক্ষরের পরপরই শতশত মানুষ একত্রে মিছিল করে গ্রাম ঘুরে ঘুরে স্লোগান দেন।
এলাকার মানুষ মনে করেন, একজন নিরীহ মানুষকে এভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া হলে সমাজে ন্যায়বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাই তারা আশা করছেন প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নেবে, যাতে মনোহর আলী মুক্তি পান এবং তার পরিবার আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
ছবিঃ কচুয়ায় নিরীহ মনোহর আলীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।