রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শর্তসাপেক্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজ শেষে কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ শুরু করে জোহা চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
এসময় শিক্ষার্থীদের ‘ভিক্ষা লাগলে ভিক্ষা নে, পোষ্য কোটা ফিরিয়ে নে’, ‘পোষ্য কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘২৪-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘জামাই কোটার বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’, ‘অবৈধ সিন্ডিকেট ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে শোনা যায়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগামী ২৫ তারিখের রাকসু নির্বাচনকে পুঁজি করেই শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই অবৈধ পোষ্য কোটা পুনর্বহালের দাবি তুলেছেন এবং তা বাস্তবায়ন করেছেন। তাদের মতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত সুবিধা আদায়ের লক্ষ্যেই এ দাবি সামনে আনা হয়েছে।
এ নিয়ে ছাত্রশিবির মনোনীত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট প্যানেলের এজিএস পদপ্রার্থী সালমান সাব্বির বলেন, পোষ্য কোটার মতো একটা মীমাংসিত ইস্যুকে আবার সামনে নিয়ে আসায় আমরা গতকাল সন্ধ্যা থেকে এখন অবধি আন্দোলন করছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা বলে দিতে চাই যে কোটা অলরেডি বাতিল হয়েছে, সে কোটা আপনারা ফিরিয়ে নিয়ে এসেছেন। যদি অতি দ্রুত এই কোটা আপনারা বাতিল না করেন তাহলে আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর ব্যবস্থা নেব। একই সাথে ২৫ তারিখের রাকসু নির্বাচন ২৫ তারিখেই করতে হবে। এটা নিয়ে কোনো টালবাহানা করলে শিক্ষার্থীরা এটা মেনে নেবে না।
এসময় সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের মিডিয়া ও প্রকাশনা সম্পাদক পদপ্রার্থী মুজাহিদ ইসলাম বলেন, একটি পক্ষ রাকসুর ঠিক আগ মুহূর্তে পোষ্য কোটার মতো একটা মীমাংসিত ইস্যুকে সামনে নিয়ে এসে রাকসু বানচালের ষড়যন্ত্র করছে। আমরা তাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে মেরুদণ্ডহীন প্রশাসনকে জানিয়ে দিতে চাই, আপনারা যে হঠকারিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটাকে সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সকল সংগঠন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করছে। একটা প্রত্যন্ত অঞ্চলের রেখাচিত্রকের ছেলে যদি মেধা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থান করে নিতে পারে তাহলে আপনারা কোন সুবিধা থেকে বঞ্চিত? কিভাবে আপনারা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যে আপনাদের সন্তানদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে হবে? আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই—আপনারা আর নির্লজ্জতার পরিচয় দেবেন না।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অনেক আগেই পোষ্য কোটাকে বাতিল করেছেন। কিন্তু ছুটির আগের দিনে এই অন্যায় কোটা ফিরিয়ে আনার ঘোষণা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা কখনোই মেনে নেবে না। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বিপ্লব-পরবর্তী প্রশাসনে কোনো অনৈতিক, অন্যায়, অযৌক্তিক কিছুই মেনে নেওয়া হবে না। এ কোটায় কোনো শিক্ষার্থীকে ভর্তি নেওয়ার জন্য যদি কোনো রুমের তালা খোলা হয় তবে ওই রুম চিরদিনের জন্য তালা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর একটা শিক্ষার্থীও পোষ্য কোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি নিতে দেওয়া হবে না।