শিরোনাম :
Logo ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে ‘মনিটরিং’ জোরদার করবে সরকার, নেবে কঠোর ব্যবস্থা : প্রেস সচিব Logo ভোলার মুহাদ্দিস নোমানী হত্যার বিচারে ইবিতে মানববন্ধন Logo নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ছিনতাই, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা Logo আজকের ৪টি দ্বিতল বাসের যাত্রা নবদিগন্তের সূচনা : ইবি উপাচার্য Logo সিরাজগঞ্জে জাতীয় নৌকা বাইচ প্রতিযোগিতার প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত Logo চাঁদপুর সদর হাসপাতালের সম্প্রসারিত পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডের উদ্বোধন Logo শেখহাসিনার ছাত্রলীগ যেই দুঃসাহস করতে পারেনি, সেই দুঃসাহস ২৪-পরবর্তী বাংলাদেশে এখন ছাত্রদল করা শুরু করেছে, পঞ্চগড়ে -সারজিস Logo আশিকাটি ইউনিয়নে বিভিন্ন ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায় কর্মসূচীর উদ্বোধন Logo মেধাভিত্তিক নিয়োগ হলে নিয়োগপ্রাপ্ত সকলেই দেশের সম্পদ হবে : আসিফ মাহমুদ Logo অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে হাঙরের আক্রমণে নিহত ১

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ছিনতাই, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ১১:৪২:৪৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৭০৫ বার পড়া হয়েছে
রইসুল আরাফাত , নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরেই ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন ক্যাম্পাসের নির্মাণাধীন ভবনে কর্মরত এক শ্রমিক। এসময় ছিনতাইকারী ঐ শ্রমিকের মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা এবং নজরদারিতে থাকা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসের ভিতরেই ছিনতাইয়ের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে দেখা যায়।
শুক্রবার ( ৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন সংলগ্ন এলাকায় এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ছিনতাই এর শিকার শ্রমিকের নাম মো. আমজাদ। আনুমানিক রাত ৮:০০ টা থেকে ৯:০০ টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেইট থেকে দুইজন অজ্ঞাত পরিচয়ধারী তাকে ধরে নিয়ে নতুন কলা ভবনস্থ ভাঙা দেয়ালের ভেতর নিয়ে যায়। অন্ধকারে তাকে মারধর করে ফোন ছিনতাই করে, পরে নবনির্মিত কলা ভবনের দক্ষিণ দিকে পকেট গেইট দিয়ে বের করে পুনরায় মেরে এবং হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। জানা যায়, তিনি নির্মাণাধীন ছাত্রী হল ভবনের কাজ করার জন্য রংপুর থেকে এসেছেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জনি উপস্থিত হয়ে দায়িত্বে থাকা আনসারদের নিরাপত্তা জোরদারে আরও কঠোর হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী শ্রমিক বলেন, ফার্স্ট গেট থেকে আমারে কলা ভবনের সামনে পকেট গেটের বাইরে নিয়ে মারছে। আমারে মাইরা ফোন নিয়ে গেছে। ওরা দুইজন ছিল।
এসময় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের অভাব, আনসারদের অবহেলা ও ভাঙা দেয়াল দিয়ে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশকে দায়ি করে শিক্ষার্থীদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০২২ সালের মার্চে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৫০০ মিটার সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রকল্প নেয়ার তিন বছর পার হলেও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি নির্মাণকাজ। গত বছরের ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি বিজ্ঞপ্তিতে ১ ডিসেম্বর থেকে চলাচলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দুটি গেট ব্যবহারের এবং ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সব ফাঁকা অংশ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও এখন পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে অনেক স্থানে ফাঁকা থাকায় অবাধে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা। এছাড়াও একাধিক স্থান যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করছেন স্থানীয় লোকজন। ফলে ক্যাম্পাস ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুন রোমা বলেন, গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান রাখবো নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরালো করতে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশে যেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় । সেই সাথে আমি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ চেইক করে অভিযুক্তদেরকে শাস্তির আওতায় যেন নিয়ে আসা হয় সেই দাবি ও রাখছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাহাবির হোসেন সাব্বির বলেন, আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের জন্য  একটি নিরাপদ  আশ্রয়স্থল। কিন্তু বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকার কারণে শিক্ষার্থী,  শ্রমিকসহ সকলেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং প্রশাসনের প্রতি আস্থা ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে। তাই গতকাল সংঘটিত ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ক্যাম্পাসকে পুনরায় সবার ভরসা ও নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং প্রশাসনের প্রতি সবার আস্থা ফিরিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জোর আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জনি বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা সেখানে উপস্থিত হই। তাৎক্ষণিক অপরাধীদের সনাক্ত করা না গেলেও বর্তমানে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে আমরা সনাক্তকরণের চেষ্টা চালাচ্ছি। এছাড়াও ভুক্তভোগী শ্রমিক বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঝটিকা মিছিলের বিষয়ে ‘মনিটরিং’ জোরদার করবে সরকার, নেবে কঠোর ব্যবস্থা : প্রেস সচিব

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে ছিনতাই, শঙ্কিত শিক্ষার্থীরা

আপডেট সময় : ১১:৪২:৪৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
রইসুল আরাফাত , নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরেই ছিনতাইয়ের শিকার হয়েছেন ক্যাম্পাসের নির্মাণাধীন ভবনে কর্মরত এক শ্রমিক। এসময় ছিনতাইকারী ঐ শ্রমিকের মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা এবং নজরদারিতে থাকা সত্ত্বেও ক্যাম্পাসের ভিতরেই ছিনতাইয়ের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করতে দেখা যায়।
শুক্রবার ( ৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলা ভবন সংলগ্ন এলাকায় এই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ছিনতাই এর শিকার শ্রমিকের নাম মো. আমজাদ। আনুমানিক রাত ৮:০০ টা থেকে ৯:০০ টার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম গেইট থেকে দুইজন অজ্ঞাত পরিচয়ধারী তাকে ধরে নিয়ে নতুন কলা ভবনস্থ ভাঙা দেয়ালের ভেতর নিয়ে যায়। অন্ধকারে তাকে মারধর করে ফোন ছিনতাই করে, পরে নবনির্মিত কলা ভবনের দক্ষিণ দিকে পকেট গেইট দিয়ে বের করে পুনরায় মেরে এবং হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। জানা যায়, তিনি নির্মাণাধীন ছাত্রী হল ভবনের কাজ করার জন্য রংপুর থেকে এসেছেন। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জনি উপস্থিত হয়ে দায়িত্বে থাকা আনসারদের নিরাপত্তা জোরদারে আরও কঠোর হওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী শ্রমিক বলেন, ফার্স্ট গেট থেকে আমারে কলা ভবনের সামনে পকেট গেটের বাইরে নিয়ে মারছে। আমারে মাইরা ফোন নিয়ে গেছে। ওরা দুইজন ছিল।
এসময় ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের অভাব, আনসারদের অবহেলা ও ভাঙা দেয়াল দিয়ে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশকে দায়ি করে শিক্ষার্থীদের নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করতে দেখা যায়।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০২২ সালের মার্চে ২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১ হাজার ৫০০ মিটার সীমানা প্রাচীর নির্মাণের প্রকল্প নেয়ার তিন বছর পার হলেও পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি নির্মাণকাজ। গত বছরের ১৮ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি বিজ্ঞপ্তিতে ১ ডিসেম্বর থেকে চলাচলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান দুটি গেট ব্যবহারের এবং ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে সব ফাঁকা অংশ বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা দিলেও এখন পর্যন্ত সেটি বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে অনেক স্থানে ফাঁকা থাকায় অবাধে প্রবেশ করছে বহিরাগতরা। এছাড়াও একাধিক স্থান যাতায়াতের রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করছেন স্থানীয় লোকজন। ফলে ক্যাম্পাস ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ কাটছে না।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুন রোমা বলেন, গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবন সংলগ্ন এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনায় আমরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান রাখবো নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরো জোরালো করতে বহিরাগতদের অবাধ প্রবেশে যেন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় । সেই সাথে আমি আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে সিসিটিভি ফুটেজ চেইক করে অভিযুক্তদেরকে শাস্তির আওতায় যেন নিয়ে আসা হয় সেই দাবি ও রাখছি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাহাবির হোসেন সাব্বির বলেন, আমি সবসময় বিশ্বাস করেছি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সকলের জন্য  একটি নিরাপদ  আশ্রয়স্থল। কিন্তু বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকার কারণে শিক্ষার্থী,  শ্রমিকসহ সকলেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং প্রশাসনের প্রতি আস্থা ক্রমশ নষ্ট হচ্ছে। তাই গতকাল সংঘটিত ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে ক্যাম্পাসকে পুনরায় সবার ভরসা ও নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে গড়ে তুলতে এবং প্রশাসনের প্রতি সবার আস্থা ফিরিয়ে আনতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি রংপুর ডিভিশনাল স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জোর আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ছিনতাইয়ের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম জনি বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথেই আমরা সেখানে উপস্থিত হই। তাৎক্ষণিক অপরাধীদের সনাক্ত করা না গেলেও বর্তমানে সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে আমরা সনাক্তকরণের চেষ্টা চালাচ্ছি। এছাড়াও ভুক্তভোগী শ্রমিক বাদী হয়ে ত্রিশাল থানায় একটি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে।