চাঁদপুর জেলা কারাগারের জেল সুপারের নেতৃত্বে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে খুশি কারাবন্দিরা :
চাঁদপুর জেলা কারাগারকে মাদক, দূর্নীতিমুক্ত মডেল কারাগার হিসেবে বাস্তবে রূপদানে বদ্ধপরিকর বর্তমান দক্ষ পরিচালক জেল সুপার মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ভূঞা।
বেড়েছে সেবার মান, কারা অভ্যন্তরের সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্র ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশে খুশি কারাবন্দিরা। এমনটাই জানালেন সদ্য জামিনে মুক্ত বেশ কয়েকজন কারাবন্দি। সবমিলিয়ে বদলে গেছে চাঁদপুর জেলা কারাগারের চিত্র।
তাদের মতে, বর্তমান জেল সুপারের যোগ্য নেতৃত্বে ও কঠোর পদক্ষেপে চাঁদপুর জেলা কারাগার বাংলাদেশের অন্যান্য কারাগারের তুলনায় ব্যতিক্রম এক নজির সৃষ্টি করেছে।
‘রাখিব নিরাপদ, দেখাবো আলোর পথ’ এ স্লোগানকে বাস্তবে রূপ দিতে চাঁদপুর জেলা কারাগারের ভেতরে ও বাইরে কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা একাগ্রচিত্তে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। জেলার, ডেপুটি জেলার, সর্বপ্রধান কারারক্ষী, প্রধান কারারক্ষী ও কারারক্ষীরা বন্দিদের আন্তরিক সেবা দান ও ভালো ব্যবহার দিয়ে নজির সৃষ্টি করেছেন। কারাগারের স্বার্থ রক্ষায় তারা অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।
চাঁদপুর জেলা কারাগার ঘুরে দেখা গেছে, ফুলে ফলে ভরপুর কারাগারটিতে মৌসুমী শাক সবজি উৎপাদনে অনন্য নজির স্থাপন করার কারনে কারারক্ষী ও বন্দিরা পাচ্ছেন কারা বাগানে উৎপাদিত টাটকা শাকসবজি ফলমুল।
গত ২৫ মে মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ভূঞা জেল সুপার হিসেবে যোগদান করার পর থেকে কারা অধিদপ্তরের বিধি-বিধান অনুসরণ করেই এই কারাগারটি পরিচালিত হচ্ছে। বিধি মোতাবেক প্রাপ্য সকল সুবিধা বন্দিদের সমানভাবে দেয়া হচ্ছে। অন্য কোন কিছুর বিনিময়ে অবৈধ সুবিধা পাবার কোন সুযোগ বর্তমানে এ কারাগারে নেই বলে জানা যায়।
বিশেষ করে জেল সুপারের নেতৃত্বে কারাগারে শান্তি-শৃঙ্খলা সৃষ্টি, কারা মনিটরিং, অসুস্থ বন্দিদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা, কারা ক্যান্টিনে সাশ্রয়ীমূল্যে বিক্রির ব্যবস্থা, সার্বক্ষণিক তদারকি, বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহ, উন্নতমানের খাবার পরিবেশন, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, সর্বোপরি বন্দিদের মৌলিক চাহিদাসমূহ পৌঁছে দিতে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন কারাগারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শতভাগ সততায় অবিচল থেকে এই করাগারটিকে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত মডেল কারাগারে রূপান্তর করতে রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন বর্তমানে জেল সুপার মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ভূঞা।
এদিকে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য কারাগারে ১ জন চিকিৎসক ও ১ জন ফার্মাসিস্ট নিয়োজিত রয়েছেন। এসব চিকিৎসক প্রতিদিন রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে থাকেন। সেখান থেকে প্রকৃত অসুস্থ রোগীদের কারা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। কারা হাসপাতালে কোন সুস্থ রোগীকে একদিনের জন্যেও রাখা হয় না বলে জানিয়েছেন অনেক মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি।
সদ্য কারামুক্ত একাধিক কয়েদিরা এ প্রতিবেদককে জানান, বর্তমানে কারাগারের পরিবেশ বেশ চমৎকার। এখানকার প্রতিটি বন্দিকে সমান সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আসছে কারা কর্তৃপক্ষ। কারাগারে উন্নতমানের খাবার দেয়া হয় এবং খাবারের মধ্যে বৈচিত্র আনয়ন করা হয়েছে । বন্দিরা বলেন আমাদের দেখামতে কোন সিন্ডিকেট বাড়তি কোন সুযোগ সুবিধা আরাম আয়েশে থকাতে না পারে সে জন্য জেল সুপার সব সময় সজাগ রয়েছেন। প্রতিদিন তিনি কারাগারের সকল ওয়ার্ড পরিদর্শন করেন এবং বন্দি কোন সিন্ডিকেটের কারণে কারো অসুবিধা হচ্ছে কি না সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেন। কোন সিন্ডিকেট যেন কোনো প্রকার অনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে না পারে সেজন্য কারারক্ষীদের কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। কারা কর্তৃপক্ষ খুব সুন্দরভাবে কারাগারে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
জেল সুপার মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বলেন, কারাগার একটি স্পর্শকাতর সরকারি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। কাঠামো ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য আমার সার্বিক প্রচেষ্টা ও কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় কারাগারের উন্নয়নের চিত্র পাল্টে দেওয়ার চেষ্টায় রয়েছি। এখানকার সেবার মান বাড়িয়েছি। মাদকের প্রবেশ যাতে না হয়, সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি। সেজন্য এখানে গত ৩মাসে মাদক সংক্রান্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। এক কথায় এটিকে একটি বর্তমানে মাদকমুক্ত জেল বলা চলে। এখানে অনিয়ম-দুর্নীতির কোনো প্রশ্নই আসে না। যদি কারাগারের কোনো সদস্য অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। চাঁদপুর জেলা কারাগারে বন্দী ধারণক্ষমতা ৪৭৫ জন, কিন্তু বর্তমানে সেখানে বন্দি রয়েছেন ৭৫১ জন। ধারণ ক্ষমতার প্রায় ২ গুণ বেশি বন্দি নিয়ে মানবসেবায় নজির সৃষ্টি করেছেন।
তিনি আরো জানান, কারাবন্দীরা সমাজ ও দেশের বোঝা নয়, কারামুক্ত হলেই তারা হবেন পরিবার ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ। ফেলে আসা অতীতের সব উশৃঙ্খল পথ ছেড়ে অলোর পথে ফিরিয়ে আনতে এসব হাজতি-কয়েদির কারাভ্যন্তরে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, বিনোদন, প্রশিক্ষণ দানসহ ও করা হচ্ছে জনহিতকর নানা প্রকার মোটিভেশন।