ঝিনাইদহ প্রতিনিধি-
চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে অপহরন মামলা দায়েরের পর বাদিকে হুমকি ধামকির বিস্তর অভিযোগ উঠেছে। এতে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক ও তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অপহরনের ঘটনায় বাদি মোছাঃ মধুমালা আক্তার সাথী (২০) ৩৬৫/৩৮৫/৩৮৬/৩৪/৫০৬ (।।) দঃ বিঃ ধারায় মোকামঃ বিজ্ঞ চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর সি,আর, ৯৭২। তারিখ ২৪/০৭/২০২৫ ইং তারিখ। উক্ত অপহরন মামলাটির বাদি পক্ষের বিজ্ঞ আইনজীবী হিসাবে এ্যাড. জনাব মোঃ আসলাম উদ্দীন মামলাটি পরিচালনা করছেন।
শুনানী শেষে মামলাটি আমলে নিয়ে মোকামঃ বিজ্ঞ চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালত চুুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক ওসিকে মামলাটির তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করেন।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, মামলাটির ১নং স্বাক্ষী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার জীবনা গ্রামের মোঃ ডালিমের ছেলে আলামিন হোসেনের স্ত্রী বাদি মধুমালা আক্তার সাথী, ও মামলার ২নং সাক্ষী সোলাইমান কবীর সম্পর্কে ১নং স্বাক্ষী আলামিন হোসেন খালাতো ভাই। গত ২২শে জুলাই মঙ্গলবার বিকালে আলামিন মোটর বাইক কেনার উদ্দেশ্যে ৬০,০০০/= (ষাট হাজার) টাকা নিয়ে খালাতো ভাই সোলাইমান কবীরকে সঙ্গে লইয়া রওনা হয়।
পরে ১ ও ২নং স্বাক্ষী যথাক্রমে আলামিন ও সোলাইমান কবীর ঘটনাস্থল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাড়াগোদা বাজার ৭নং স্বাক্ষী স্বপনের ফলের দোকানের সামনে পৌছালে পূর্ব শত্রæতার জের ধরিয়া ১নং আসামী চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বদরগঞ্জ বাজার দশমাইল সংলগ্ন দশমী গ্রামের মৃত ছামছুদ্দিন মন্ডলের ছেলে ও চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের সুপারভাইজার হিসাবে কর্মরত মাহাবুল হক (৪০) ও অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জন আসামীর সহযোগীতায় আলামিনকে পিছন হইতে মুখ চাপিয়া ধরিয়া বদরগঞ্জ বাজার নিয়ে যায় এবং একটি নির্জন গুপ্ত ঘরে আটকিয়ে রাখে।
পরবর্তীতে ২নং সাক্ষী সোলাইমান কবীরের মাধ্যমে অপহৃত আলামিনের স্ত্রী ও বাদী মধুমালা আক্তার সাথী ঘটনার বিবরণ শুনিয়া তার পরিবারের আত্মীয় স্বজনকে জানাইলে মধুমালা আক্তার সাথী, ২নং স্বাক্ষী সোলাইমান কবীর এবং বাদীর আত্মীয় স্বজন অপহৃত আলামিনকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে। খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে মধুমালা আক্তার সাথী উপায় না পেয়ে ৯৯৯ লাইনে ফোন করে বিস্তারিত জানাইলে পুলিশও খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
এসময় ১নং আসামী সুপারভাইজার মাহাবুলসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জন আসামী পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামীগণ অপহৃত আলামিনের নিকট হইতে মটর বাইক ক্রয় বাবদ ৬০,০০০/= (ঘাট হাজার) টাকা ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়া এবং তার নিকট থাকা আরও ৭৪০/= টাকা মোট ৬০.৭৪০/= টাকা জোর পূর্বক ১নং আসামী সুপারভাইজার মাহাবুল কাড়িয়া লইয়া অতি গোপনে সকল আসামীগণ অপহৃত আলামিনকে বদরগঞ্জ দশমাইল এর পুলিশ বক্সের নিকট ছাড়িয়া দিয়া প্রকাশ করেন যে, এই অপহরনের ঘটনা লইয়া মামলা মোকদ্দমা করিলে হত্যা করিয়া লাশ গুম করিয়া দিবেন। পরে আসামিরা কৌশলে পালাইয়া যায়।
পরবর্তীতে বাদী ও তার আত্মীয় স্বজন অপহৃত আলামিনকে পাইয়া বদরগঞ্জ বাজার দশমাইলে পুলিশ বক্সে অবস্থানরত পুলিশের নিকট ঘটনা জানাইলে পুলিশ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় যোগাযোগ করতে বলেন।
সেসময় বাদী মধুমালা আক্তার সাথী তার স্বামী আলামিনসহ তাহার আত্মীয় স্বজন তৎক্ষনাৎ চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় আসিয়া দায়িত্বরত পুলিশকে জানাইলে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার কোর্টে মামলা করার পরামর্শ দিলে বাদী মধুমালা আক্তার সাথী বাধ্য হইয়া বিজ্ঞ আদালতের উক্ত অপহরন মামলাটি দায়ের করেন।
পরে মামলাটি আমালে নিয়ে মোকামঃ বিজ্ঞ চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালত চুুয়াডাঙ্গা সদর থানার পরিদর্শক ওসিকে মামলাটির তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদাণ করেন।
মামলাটি দাখীলের পর সুপারভাইজার মাহাবুল হক একর পর এক অজ্ঞাত স্থান ও অজ্ঞাত ব্যাক্তিদের দিয়ে বাদি মধুমালা আক্তার সাথীর ফোনে ফোন দিয়ে বাদিকে হুমকি ধামকিসহ মামলা তুলে নেয়ার জন্য চাপ চলমান রেখেছে মর্মে বাদি মধুমালা আক্তার সাথী সাংবাদিকদের কাছে বিস্তর অভিযোগ করেন।
চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের সুপারভাইজার মাহাবুল হকের বিরুদ্ধে এলাকায় সুদের ব্যবসা করতে অসহায়দের কাছ থেকে কৌশলে সাদা চেক নিয়ে নিজের ইচ্ছামত মামলা দায়ের করার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বলেও বাদি মধুমালা আক্তার সাথী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এসব ঘটনায় জড়িত থাকার কারনে এলাকাবাসি চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের সুপারভাইজার মাহাবুল হকের উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন। এবিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের সুপারভাইজার মাহাবুল হকের বক্তব্য নিতে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।