দখলদার ইসরায়েলের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ অন্তত ১০টি স্থানে মিসাইল হামলা চালিয়েছে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান। দেশটির জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ) জানিয়েছে, হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। অনেকে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটোছুটি করছেন।
টাইমস অব ইসরায়েল এবং ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামলার লক্ষ্যবস্তু ছিল বিমানবন্দর ছাড়াও সামরিক সাপোর্ট বেইজ, কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার এবং একটি জৈব গবেষণাগার। এসব হামলায় রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। কারমেল, হাইফা, তেল আবিব ও ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডসের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, হামলায় দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। তেহরান দাবি করেছে, এই হামলা ছিল আত্মরক্ষামূলক এবং প্রতিক্রিয়াশীল।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায়—নাতানজ, ইসফাহান এবং ফোর্দোতে বিমান হামলা চালানো হয়। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইরান পাল্টা জবাব দেয়।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকি এই হামলাকে “গর্হিত ও উসকানিমূলক” বলে উল্লেখ করে বলেন, আমরা আত্মরক্ষার সব ধরনের অধিকার রাখি, এবং এর ফল দীর্ঘস্থায়ী হবে।
ইরানি বার্তা সংস্থা তাসনিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, শত্রুপক্ষের হামলায় ফোর্দোর একটি পারমাণবিক স্থাপনার কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যদিও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ স্পষ্টভাবে জানানো হয়নি।
এ দিকে ইরানি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলমান সংঘর্ষে ইরানে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩০ জন নিহত এবং সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে। অন্য দিকে, ইরানের হামলায় ইসরায়েলের ২৪ জন নিহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয়।
গত ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া এই উত্তেজনার সূচনা হয় ইসরায়েলের একটি সামরিক অভিযানের মাধ্যমে, যার লক্ষ্য ছিল ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমে বাধা দেওয়া। তবে ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ দাবি করে আসছে।
বর্তমানে উভয় দেশেই সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রয়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়, তা নির্ভর করছে আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপর।