পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে চাঁদপুর জেলা কারাগারে বন্দীদের জন্য এক ব্যতিক্রমী আয়োজন করা হয়েছে। ঈদের আনন্দ বন্দীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে এবং তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কর্তৃপক্ষ বন্দিদের জন্য আয়োজন করেছে ক্রীড়া আয়োজন। স্বজনদের জন্যও ছিল অভ্যর্থনা ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন চাঁদপুর জেলা কারাগারের খাবার পরিবেশন তত্ত্বাবধান করেন। এসময় তিনি কারাগারের খাবারের মান সম্পর্কে প্রশংসাও করেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুপ্রভাত চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
শনিবার (৭ জুন) সকালে ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা। ঈদের নামাজের জামাতে শরিক হন কারাবন্দিরা। এরপর ৬’শতাধিক বন্দিকে পরিবেশন করা হয় উন্নতমানের খাবার।
ঈদের দিন সাধারণ বন্দীদের মতোই কারাগারে থাকা ভিআইপিসহ (বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) বন্দীদের একই ধরনের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন দেখে খুশি বন্দিরা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বন্দিরা যাতে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন, সে জন্য প্রত্যেক বন্দিকে ২০ মিনিট করে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। এছাড়াও প্রত্যেক বন্দী স্বজনদের জন্য ফোনে ফ্রী ৫ মিনিট টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ভূঞা বলেন, কারা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুয়ায়ী বন্দীদের জন্য আলাদা বন্দোবস্তের আয়োজন করা হয়।
ঈদের দিন সকালে নাস্তায় বন্দিদের দেওয়া হয়েছে পায়েস ও মুড়ি। দুপুরে দেওয়া হচ্ছে মুরগির রোস্ট, পোলাও, গরু, খাসির মাংস, সালাদ, পান-সুপারি এবং মিষ্টি। রাতের খাবারে ছিলো ভাত, মাছ এবং আলুর দম।
তিনি আরও জানান, ঈদের দিন কারাগারে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুইটি জামাত। এর মধ্যে একটি শুধুমাত্র বন্দিদের জন্য এবং বাকি একটি কারা স্টাফদের জন্য আয়োজন করা হয়। ঈদের পরদিন কারাগারের ভেতরে বন্দীদের জন্য ক্রীড়া অনুষ্ঠান ও ঈদের পরদিন থেকে তিন দিন বন্দীদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বন্দিদের সংশোধনের মাধ্যমে প্রকৃত মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশ অনুযায়ী ঈদের দিনে এই বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে। নিয়মিত রেওয়াজ অনুযায়ী এবারও ঈদে বন্দিরা পেয়েছেন বিশেষ খাবার, স্বজনদের সঙ্গে অতিরিক্ত সময় কাটানোর সুযোগ, বাড়ির রান্না করা খাবার গ্রহণের অনুমতি। বন্দিদের জন্য এমন মানবিক ও আনন্দঘন আয়োজন তাদের মানসিক সুস্থতা ও সামাজিক পুনর্বাসনের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।