শিরোনাম :
Logo ইবিতে ঠিকাদারদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ Logo জবির স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় আয় ১২ কোটি টাকা Logo বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার নির্বাচন সম্পন্ন Logo আসিফ মাহমুদের অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়ে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo সরকার উদ্যোগ না নিলে আমরা বসে থাকব না: নাহিদ ইসলাম Logo সার্কের বিকল্প জোট গঠনে কাজ করছে চীন-পাকিস্তান, রয়েছে বাংলাদেশও Logo পহেলা জুলাই থেকে ৫ আগস্টের কর্মসূচি ঘিরে হুমকি নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo নতুন নেতৃত্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘তারুণ্য’ Logo সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলা, আহত-৩০ Logo খুবির দুই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনকে কটাক্ষ ও ধর্ম অবমাননার অভিযোগ

বিশ্বের যত ভয়ংকর মাফিয়াচক্র !

  • amzad khan
  • আপডেট সময় : ০৭:৪০:০৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৫ মার্চ ২০১৭
  • ৭৬২ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক:

হলিউডের অনেক ছবিতেই বিভিন্ন দেশের অপরাধচক্রের কথা উঠে আসে। তবে আসল কথা হলো বাস্তবে বিশ্বে এমন সব মাফিয়াচক্র আছে, যাদের কর্মকা- আরো ব্যাপক। মাদক পাচার, মানব পাচার, চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র পাচার, হীরা ও স্বর্ণ পাচার, সাইবার ক্রাইমের মতো সব ধরনের অনৈতিক কাজ নিয়েই এ ধরনের চক্র সক্রিয়। বিশ্বে বর্তমানে যত ভয়ংকর মাফিয়াচক্র সক্রিয়, তাদের নিয়ে এ লেখা।


ইয়াকুজা :
এরা গোকুডো নামেও পরিচিত। জাপানে এই মাফিয়া চক্রের জন্ম। এতে কোরিয়ানরাও যুক্ত রয়েছে। প্রকাশ্যে কাজ করে যাচ্ছে তারা। তাদের নিজস্ব অফিস ভবন, বিজনেস কার্ডও আছে। মাঝে মধ্যেই পত্রিকায় তাদের নিয়ে খবর ছাপা হয়। এই চক্রের সদস্যরা সব সময় কালো স্যুট পরেন আর দলের প্রতি অনুগত থাকার নিদর্শন হিসেবে নিজেদের হাতের কনিষ্ঠ আঙুল কেটে ফেলেন। ইয়াকুজার সদস্যরা রাজনীতির সঙ্গে যেমন জড়িত, তেমনি বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদেও আছেন তারা। ২০১১ সালে ভয়ংকর সুনামির পর তারাই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রথম ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।


এইটিনথ  স্ট্রিট গ্যাং : এ মাফিয়াচক্র চিলড্রেনস আর্মি নামেও পরিচিত। কারণ স্কুলে পড়া অনেক ছেলে সদস্যকে নিজেদের দলে ভিড়িয়েছে দলটি। এম এইটিন হিসেবেও পরিচিতি পাওয়া লস অ্যাঞ্জেলেস-ভিত্তিক  এই চক্র বিশ্বের অন্যতম বড় অপরাধ চক্র। শুধু আমেরিকাতেই এদের ৩০ হাজারের বেশি সদস্য আছে। এদের প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রের নাম এম থার্টিন।

মুনগিকি : কেনিয়ার একটি ভয়ংকর দল। এটি একাধারে সন্ত্রাসী ও ধর্মীয় কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। এ দলের সদস্যরা পাশ্চাত্যের সব রীতি পরিহার করে স্থানীয় সব রীতিনীতি গ্রহণ করেছেন। তারা নাইরোবিতে চাঁদাবাজি করে ও ট্যাক্সি ইন্ডাস্ট্রি নিয়ন্ত্রণ করে। কেউ এদের দাবি না মানলে তাকে মাথা কেটে অথবা আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। এ ছাড়া কেউ অন্যায় করলে তাকে সে অনুপাতে শাস্তি দেয় এই চক্রের সদস্যরা।

রাশিয়ান মাফিয়া : বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর এক অপরাধ চক্র। সাবেক এক এফবিআই এজেন্ট এই চক্রের সদস্যদের বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর মানুষ হিসেবে আখ্যা দেন। ৪৫০টি গ্রুপে এই চক্রের অন্তত ৩ লাখ সদস্য আছে। এদের শরীরে থাকে বিশাল সব ট্যাটু। এরা মিলিটারি কায়দায় সন্ত্রাসী কাজ করে। মূলত কন্ট্রাক্ট কিলিং ও মানুষের অঙ্গ পাচারের সঙ্গে জড়িত এরা।


হেলস এঞ্জেলস : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ এ চক্রটিকে একটি সংঘটিত অপরাধচক্র হিসেবে বিবেচনা করে। হেলস এঞ্জেলস মোটরসাইকেল ক্লাবের সদস্যরা হার্লে ডেভিডসন মোটরসাইকেলে চড়ে অপরাধ কর্মকা- চালায় বলে সবাই বিশ্বাস করে। তবে ক্লাবটির মতে, কেউ কোনো অপরাধ করলে সেটা ব্যক্তিগত অপরাধ, ক্লাবের নয়। তবে এই চক্রের সদস্যরা মাদক পাচার, যৌন ব্যবসা, চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৬ সালে ‘দ্য ওয়াইল্ড এঞ্জেলস’ নামের এক ছবিতে এ চক্রটিকে ভয়ংকর অপরাধচক্র হিসেবে দেখানো হয়।

সিসিলিয়ান মাফিয়া লা কোসা নস্ট্রা : উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে সিসিলি-ভিত্তিক এই মাফিয়াচক্র কাজ শুরু করে। সিসিলি ও আমেরিকাসহ যেখানেই গেছে, ত্রাস সৃষ্টি করেছে এ চক্রের সদস্যরা। শুধু পরিবারভিত্তিক উত্তরাধিকার সূত্রেই এ চক্রের সদস্যরা কর্মকা- চালায়। এরা ‘ওমেরটা’ মানে গোপন কোড ব্যবহার করে ও নীরবতা বজায় রেখে অপরাধ চালায়। তাই এদের সহজে শনাক্ত করা যায় না।

আলবেনিয়ান মব : ১৫টিরও বেশি গোত্র আলবেনিয়ার বিশাল অপরাধচক্র নিয়ন্ত্রণ করে। মূলত পরিবারভিত্তিক এই চক্র খুব সংঘটিত। আলবেনিয়া ছাড়াও বিশ্বের অনেক দেশে তাদের তৎপরতা আছে। মাদক ও মানব পাচার এবং অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এরা। সন্ত্রাসী কাজেও এরা অনেক পটু। এদের এক গডফাদার দাউট কাদরিওভিস্কি ইউরোপের সবচেয়ে বড় হেরোইন পাচারকারী হিসেবে বিবেচিত।

সার্বিয়ান মাফিয়া : কয়েকটি গ্রুপ একজোট হয়ে সার্বিয়ার এই মাফিয়াচক্র তৈরি করেছে। বলা হয়, যুগোস্লাভ যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক মন্দার সময় এই মাফিয়াচক্রের জন্ম হয়। এরা বর্তমানে অন্তত ৩০টি দেশে সক্রিয় আছে। মাদক  ও অস্ত্র  পাচার  করে এ চক্রের সদস্যরা। ২০০৯ সালে মাদ্রিদে এ চক্রের কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা তাদের এক অবাধ্য সদস্যকে খুন করেন এবং তার মাংস কিমা বানিয়ে তা খেয়ে পরে সংবাদের শিরোনাম হন তারা।

মন্ট্রিল মাফিয়া দ্য রিজুটোজ : মন্ট্রিলের রিজুটো পরিবারের সংঘটিত অপরাধচক্র এখন কুইবেক, ওন্টারিওতে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নিউইয়ের্কের অপরাধচক্র বোনান্নো পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের পর  ১৯৭০ সালের শেষ দিকে মন্ট্রিলে দুই দলের মাঝে মাফিয়া যুদ্ধ হয়। সে সময় রিজুটো পরিবারের কয়েকজন নেতা প্রাণ হারান। এখন  মন্ট্রিলের বেশির ভাগ ঠিকাদারি কাজ করে এই চক্রের সদস্যরা।

মেক্সিকোর মাদকচক্র : গত কয়েক দশক ধরেই মাদক পাচার মেক্সিকোয় অপরাধীদের জন্য এক রমরমা ব্যবসা। বর্তমানে দেশটির অর্থনীতির ৬৩ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ মাদক পাচারকারীদের হাতে। অনেক গুলো অপরাধচক্র এর সঙ্গে জড়িত। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে। মাদক নিয়ে যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার মানুষ গুম হয়েছে। অনেকগুলো গণকবর থেকে ২৪ হাজারের বেশি লাশ পাওয়া গেছে। অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন চলছে প্রতিনিয়ত। মাদকচক্রের সদস্যদের কাছে সেনাবাহিনীর মতো অস্ত্র যেমন- রকেট লাঞ্চার, এ কে ফোরটি সেভেনও আছে।


মারা সালভাটরুচা : লস অ্যাঞ্জেলেস-ভিত্তিক এই চক্র মূলত মধ্য-আমেরিকায় সক্রিয়। এ ছাড়া উত্তর আমেরিকা ও মেক্সিকো পর্যন্ত এদের অপরাধ ছড়িয়ে পড়েছে। এম এস থার্টিন নামেও পরিচিত এরা। ভয়ংকর সন্ত্রাসী এ চক্রের ৫০ হাজারের মতো সদস্য আছে জানা গেছে। মুখে ও বুকে বড় ট্যাটু থাকে এদের। হাতে থাকে নির্দিষ্ট এক ধরনের ট্যাটু।

কলম্বিয়ার মাদকচক্র : ২০১১ সাল পর্যন্ত কলম্বিয়া ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় হেরোইন উৎপাদনকারী দেশ। তবে মাদকবিরোধী অভিযানে অপরাধচক্রের অনেক রাঘব-বোয়াল দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আর কলম্বিয়া ও আমেরিকান সরকারের অভিযান, প্রতিপক্ষের হামলায় এখন এই চক্র অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

চায়নিজ ট্রায়াডস : চীনের অপরাধচক্রের পোশাকি নাম ট্রায়াডস। ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই নাম পেয়েছে তারা। আমেরিকার এক হিসেবে জানা গেছে, প্রতিবছর এই অপরাধচক্র আমেরিকায় অবৈধভাবে ১ লাখের বেশি মানুষ পাচার করে। এরা মুদ্রা জাল করার কাজেও জড়িত। মূলত হংকং-এ এই চক্রের তৎপরতা বেশি।


ডি কোম্পানি : ভারতের কুখ্যাত অপরাধী দাউদ ইব্রাহিম এই চক্র নিয়ন্ত্রণ করেন। চক্রটি ভারত, পাকিস্তান, দুবাইসহ কয়েকটি দেশে সক্রিয়। চাঁদাবাজি এমনকি সন্ত্রাসী কর্মকা-ও করে এরা। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে বোমা হামলায় ২৫৭ জন মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত এই চক্র। দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা ও তালেবানের সম্পর্ক আছে ধারণা করা হয়। বিশ্বের অনেক বৈধ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লাখ লাখ ডলার চাঁদা আদায় করছে চক্রটি। গোয়েন্দাদের ধারণা, দাউদ ইব্রাহিম নিজের চেহারা পাল্টে ফেলেছেন প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ইবিতে ঠিকাদারদের লাইসেন্স নবায়নের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ

বিশ্বের যত ভয়ংকর মাফিয়াচক্র !

আপডেট সময় : ০৭:৪০:০৮ অপরাহ্ণ, রবিবার, ৫ মার্চ ২০১৭

নিউজ ডেস্ক:

হলিউডের অনেক ছবিতেই বিভিন্ন দেশের অপরাধচক্রের কথা উঠে আসে। তবে আসল কথা হলো বাস্তবে বিশ্বে এমন সব মাফিয়াচক্র আছে, যাদের কর্মকা- আরো ব্যাপক। মাদক পাচার, মানব পাচার, চোরাচালান, অবৈধ অস্ত্র পাচার, হীরা ও স্বর্ণ পাচার, সাইবার ক্রাইমের মতো সব ধরনের অনৈতিক কাজ নিয়েই এ ধরনের চক্র সক্রিয়। বিশ্বে বর্তমানে যত ভয়ংকর মাফিয়াচক্র সক্রিয়, তাদের নিয়ে এ লেখা।


ইয়াকুজা :
এরা গোকুডো নামেও পরিচিত। জাপানে এই মাফিয়া চক্রের জন্ম। এতে কোরিয়ানরাও যুক্ত রয়েছে। প্রকাশ্যে কাজ করে যাচ্ছে তারা। তাদের নিজস্ব অফিস ভবন, বিজনেস কার্ডও আছে। মাঝে মধ্যেই পত্রিকায় তাদের নিয়ে খবর ছাপা হয়। এই চক্রের সদস্যরা সব সময় কালো স্যুট পরেন আর দলের প্রতি অনুগত থাকার নিদর্শন হিসেবে নিজেদের হাতের কনিষ্ঠ আঙুল কেটে ফেলেন। ইয়াকুজার সদস্যরা রাজনীতির সঙ্গে যেমন জড়িত, তেমনি বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের পরিচালক পদেও আছেন তারা। ২০১১ সালে ভয়ংকর সুনামির পর তারাই ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রথম ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করেন।


এইটিনথ  স্ট্রিট গ্যাং : এ মাফিয়াচক্র চিলড্রেনস আর্মি নামেও পরিচিত। কারণ স্কুলে পড়া অনেক ছেলে সদস্যকে নিজেদের দলে ভিড়িয়েছে দলটি। এম এইটিন হিসেবেও পরিচিতি পাওয়া লস অ্যাঞ্জেলেস-ভিত্তিক  এই চক্র বিশ্বের অন্যতম বড় অপরাধ চক্র। শুধু আমেরিকাতেই এদের ৩০ হাজারের বেশি সদস্য আছে। এদের প্রতিদ্বন্দ্বী চক্রের নাম এম থার্টিন।

মুনগিকি : কেনিয়ার একটি ভয়ংকর দল। এটি একাধারে সন্ত্রাসী ও ধর্মীয় কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। এ দলের সদস্যরা পাশ্চাত্যের সব রীতি পরিহার করে স্থানীয় সব রীতিনীতি গ্রহণ করেছেন। তারা নাইরোবিতে চাঁদাবাজি করে ও ট্যাক্সি ইন্ডাস্ট্রি নিয়ন্ত্রণ করে। কেউ এদের দাবি না মানলে তাকে মাথা কেটে অথবা আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়। এ ছাড়া কেউ অন্যায় করলে তাকে সে অনুপাতে শাস্তি দেয় এই চক্রের সদস্যরা।

রাশিয়ান মাফিয়া : বিশ্বের অন্যতম ভয়ংকর এক অপরাধ চক্র। সাবেক এক এফবিআই এজেন্ট এই চক্রের সদস্যদের বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর মানুষ হিসেবে আখ্যা দেন। ৪৫০টি গ্রুপে এই চক্রের অন্তত ৩ লাখ সদস্য আছে। এদের শরীরে থাকে বিশাল সব ট্যাটু। এরা মিলিটারি কায়দায় সন্ত্রাসী কাজ করে। মূলত কন্ট্রাক্ট কিলিং ও মানুষের অঙ্গ পাচারের সঙ্গে জড়িত এরা।


হেলস এঞ্জেলস : যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র বিভাগ এ চক্রটিকে একটি সংঘটিত অপরাধচক্র হিসেবে বিবেচনা করে। হেলস এঞ্জেলস মোটরসাইকেল ক্লাবের সদস্যরা হার্লে ডেভিডসন মোটরসাইকেলে চড়ে অপরাধ কর্মকা- চালায় বলে সবাই বিশ্বাস করে। তবে ক্লাবটির মতে, কেউ কোনো অপরাধ করলে সেটা ব্যক্তিগত অপরাধ, ক্লাবের নয়। তবে এই চক্রের সদস্যরা মাদক পাচার, যৌন ব্যবসা, চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। ১৯৬৬ সালে ‘দ্য ওয়াইল্ড এঞ্জেলস’ নামের এক ছবিতে এ চক্রটিকে ভয়ংকর অপরাধচক্র হিসেবে দেখানো হয়।

সিসিলিয়ান মাফিয়া লা কোসা নস্ট্রা : উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে সিসিলি-ভিত্তিক এই মাফিয়াচক্র কাজ শুরু করে। সিসিলি ও আমেরিকাসহ যেখানেই গেছে, ত্রাস সৃষ্টি করেছে এ চক্রের সদস্যরা। শুধু পরিবারভিত্তিক উত্তরাধিকার সূত্রেই এ চক্রের সদস্যরা কর্মকা- চালায়। এরা ‘ওমেরটা’ মানে গোপন কোড ব্যবহার করে ও নীরবতা বজায় রেখে অপরাধ চালায়। তাই এদের সহজে শনাক্ত করা যায় না।

আলবেনিয়ান মব : ১৫টিরও বেশি গোত্র আলবেনিয়ার বিশাল অপরাধচক্র নিয়ন্ত্রণ করে। মূলত পরিবারভিত্তিক এই চক্র খুব সংঘটিত। আলবেনিয়া ছাড়াও বিশ্বের অনেক দেশে তাদের তৎপরতা আছে। মাদক ও মানব পাচার এবং অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত এরা। সন্ত্রাসী কাজেও এরা অনেক পটু। এদের এক গডফাদার দাউট কাদরিওভিস্কি ইউরোপের সবচেয়ে বড় হেরোইন পাচারকারী হিসেবে বিবেচিত।

সার্বিয়ান মাফিয়া : কয়েকটি গ্রুপ একজোট হয়ে সার্বিয়ার এই মাফিয়াচক্র তৈরি করেছে। বলা হয়, যুগোস্লাভ যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক মন্দার সময় এই মাফিয়াচক্রের জন্ম হয়। এরা বর্তমানে অন্তত ৩০টি দেশে সক্রিয় আছে। মাদক  ও অস্ত্র  পাচার  করে এ চক্রের সদস্যরা। ২০০৯ সালে মাদ্রিদে এ চক্রের কয়েকজন শীর্ষ পর্যায়ের নেতা তাদের এক অবাধ্য সদস্যকে খুন করেন এবং তার মাংস কিমা বানিয়ে তা খেয়ে পরে সংবাদের শিরোনাম হন তারা।

মন্ট্রিল মাফিয়া দ্য রিজুটোজ : মন্ট্রিলের রিজুটো পরিবারের সংঘটিত অপরাধচক্র এখন কুইবেক, ওন্টারিওতে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। নিউইয়ের্কের অপরাধচক্র বোনান্নো পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কের পর  ১৯৭০ সালের শেষ দিকে মন্ট্রিলে দুই দলের মাঝে মাফিয়া যুদ্ধ হয়। সে সময় রিজুটো পরিবারের কয়েকজন নেতা প্রাণ হারান। এখন  মন্ট্রিলের বেশির ভাগ ঠিকাদারি কাজ করে এই চক্রের সদস্যরা।

মেক্সিকোর মাদকচক্র : গত কয়েক দশক ধরেই মাদক পাচার মেক্সিকোয় অপরাধীদের জন্য এক রমরমা ব্যবসা। বর্তমানে দেশটির অর্থনীতির ৬৩ শতাংশের নিয়ন্ত্রণ মাদক পাচারকারীদের হাতে। অনেক গুলো অপরাধচক্র এর সঙ্গে জড়িত। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ হত্যার শিকার হয়েছে। মাদক নিয়ে যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার মানুষ গুম হয়েছে। অনেকগুলো গণকবর থেকে ২৪ হাজারের বেশি লাশ পাওয়া গেছে। অপহরণ, ধর্ষণ, নির্যাতন চলছে প্রতিনিয়ত। মাদকচক্রের সদস্যদের কাছে সেনাবাহিনীর মতো অস্ত্র যেমন- রকেট লাঞ্চার, এ কে ফোরটি সেভেনও আছে।


মারা সালভাটরুচা : লস অ্যাঞ্জেলেস-ভিত্তিক এই চক্র মূলত মধ্য-আমেরিকায় সক্রিয়। এ ছাড়া উত্তর আমেরিকা ও মেক্সিকো পর্যন্ত এদের অপরাধ ছড়িয়ে পড়েছে। এম এস থার্টিন নামেও পরিচিত এরা। ভয়ংকর সন্ত্রাসী এ চক্রের ৫০ হাজারের মতো সদস্য আছে জানা গেছে। মুখে ও বুকে বড় ট্যাটু থাকে এদের। হাতে থাকে নির্দিষ্ট এক ধরনের ট্যাটু।

কলম্বিয়ার মাদকচক্র : ২০১১ সাল পর্যন্ত কলম্বিয়া ছিলো বিশ্বের সবচেয়ে বড় হেরোইন উৎপাদনকারী দেশ। তবে মাদকবিরোধী অভিযানে অপরাধচক্রের অনেক রাঘব-বোয়াল দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আর কলম্বিয়া ও আমেরিকান সরকারের অভিযান, প্রতিপক্ষের হামলায় এখন এই চক্র অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়েছে।

চায়নিজ ট্রায়াডস : চীনের অপরাধচক্রের পোশাকি নাম ট্রায়াডস। ব্রিটিশদের কাছ থেকে এই নাম পেয়েছে তারা। আমেরিকার এক হিসেবে জানা গেছে, প্রতিবছর এই অপরাধচক্র আমেরিকায় অবৈধভাবে ১ লাখের বেশি মানুষ পাচার করে। এরা মুদ্রা জাল করার কাজেও জড়িত। মূলত হংকং-এ এই চক্রের তৎপরতা বেশি।


ডি কোম্পানি : ভারতের কুখ্যাত অপরাধী দাউদ ইব্রাহিম এই চক্র নিয়ন্ত্রণ করেন। চক্রটি ভারত, পাকিস্তান, দুবাইসহ কয়েকটি দেশে সক্রিয়। চাঁদাবাজি এমনকি সন্ত্রাসী কর্মকা-ও করে এরা। ১৯৯৩ সালে মুম্বাইয়ে বোমা হামলায় ২৫৭ জন মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় জড়িত এই চক্র। দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদা ও তালেবানের সম্পর্ক আছে ধারণা করা হয়। বিশ্বের অনেক বৈধ প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে লাখ লাখ ডলার চাঁদা আদায় করছে চক্রটি। গোয়েন্দাদের ধারণা, দাউদ ইব্রাহিম নিজের চেহারা পাল্টে ফেলেছেন প্লাস্টিক সার্জারির মাধ্যমে।