শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে আজও ৬০টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা

  • নীলকন্ঠ ডেস্ক: নীলকন্ঠ ডেস্ক:
  • আপডেট সময় : ০৬:০৬:৫৪ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • ৭৩৩ বার পড়া হয়েছে

পোশাকশ্রমিকেদের বিক্ষোভের মুখে সাভারের আশুলিয়ায় আজ বুধবারও অন্তত ৬০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, আজ সকালে নির্ধারিত সময়ে আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা কারখানায় কাজে যোগ দেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে বন্ধ ঘোষণা করা কারখানার শ্রমিকেরা চালু থাকা বিভিন্ন কারখানার সামনে এসে বিক্ষোভ করেন।

কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন তাঁরা।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে চাকরিপ্রত্যাশীরাও যোগ দেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।

নরসিংহপুর এলাকায় হা-মীম গ্রপের কারখানার পাশের এক চায়ের দোকানদার বলেন, সকাল থেকে কারখানায় কাজ চলছিল। পরে চাকরির জন্য লোকজন কারখানার সামনে এসে বিক্ষোভ করলে কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়।

শারমিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, সকালে কারখানায় কাজ শুরুর পর কারখানার বাইরে কিছু লোকজন স্টাফদের বহনকারী দুটি মিনিবাস ভাঙচুর করেন। এ ধরনের পরিস্থিতে সাধারণত কারখানায় ঢুকে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাই কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।

সকাল ১০টার দিকে পলাশবাড়ী এলাকার পার্ল গার্মেন্টস কোম্পানি লিমিটেডের সামনে টিফিট ভাতা, হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা করা, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। বিক্ষোভরত শ্রমিকেরা একপর্যায়ে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্য ও ঢাকা জেলা পুলিশ উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে শ্রমিকেরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সড়কে থাকার ঘোষণা দেন। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ।

কিছু কারখানার শ্রমিকেরা কারখানায় হামলা ঠেকাতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন। পলাশবাড়ী এলাকার গিল্ডান বাংলাদেশ নামের পোশাক কারখানার সামনে কারখানায় হামলা ঠেকাতে অবস্থান নিয়েছেন ওই কারখানার শ্রমিকেরা। ওই কারখানার এক শ্রমিক  বলেন, ‘আমরা কাজ করতে চাই। কারখানা আমাদের সম্পদ। তাই এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কারখানা বন্ধ হলে খাব কী?’

আশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকেরা কারখানায় আসেন। পরে বিভিন্ন কারখানার সামনে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা হা-মীম গ্রুপের কারখানার শ্রমিকদের দেখে তাঁরা কেন কারখানায় কাজ করছেন, এমনটি বলার পর কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।

পরে আশুলিয়ার অন্তত ৬০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। এই মুহূর্তে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

শ্রমিকদের বিক্ষোভের মুখে আজও ৬০টি পোশাক কারখানায় ছুটি ঘোষণা

আপডেট সময় : ০৬:০৬:৫৪ অপরাহ্ণ, বুধবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পোশাকশ্রমিকেদের বিক্ষোভের মুখে সাভারের আশুলিয়ায় আজ বুধবারও অন্তত ৬০টি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।

জানা যায়, আজ সকালে নির্ধারিত সময়ে আশুলিয়ার বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কের বাইপাইল থেকে জিরাবো এলাকার বিভিন্ন কারখানার শ্রমিকেরা কারখানায় কাজে যোগ দেন। সকাল সাড়ে আটটার দিকে বন্ধ ঘোষণা করা কারখানার শ্রমিকেরা চালু থাকা বিভিন্ন কারখানার সামনে এসে বিক্ষোভ করেন।

কারখানা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন তাঁরা।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের সঙ্গে চাকরিপ্রত্যাশীরাও যোগ দেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশের সদস্যরা তাঁদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।

নরসিংহপুর এলাকায় হা-মীম গ্রপের কারখানার পাশের এক চায়ের দোকানদার বলেন, সকাল থেকে কারখানায় কাজ চলছিল। পরে চাকরির জন্য লোকজন কারখানার সামনে এসে বিক্ষোভ করলে কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়।

শারমিন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, সকালে কারখানায় কাজ শুরুর পর কারখানার বাইরে কিছু লোকজন স্টাফদের বহনকারী দুটি মিনিবাস ভাঙচুর করেন। এ ধরনের পরিস্থিতে সাধারণত কারখানায় ঢুকে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। নিরাপত্তার স্বার্থে তাই কারখানার শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।

সকাল ১০টার দিকে পলাশবাড়ী এলাকার পার্ল গার্মেন্টস কোম্পানি লিমিটেডের সামনে টিফিট ভাতা, হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা করা, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি, মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ নানা দাবিতে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। বিক্ষোভরত শ্রমিকেরা একপর্যায়ে নবীনগর থেকে চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে মহাসড়কের উভয় পাশে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বেলা দুইটার দিকে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর সদস্য ও ঢাকা জেলা পুলিশ উপস্থিত হয়ে শ্রমিকদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। তবে শ্রমিকেরা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সড়কে থাকার ঘোষণা দেন। শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আহম্মদ মুঈদ।

কিছু কারখানার শ্রমিকেরা কারখানায় হামলা ঠেকাতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়েছেন। পলাশবাড়ী এলাকার গিল্ডান বাংলাদেশ নামের পোশাক কারখানার সামনে কারখানায় হামলা ঠেকাতে অবস্থান নিয়েছেন ওই কারখানার শ্রমিকেরা। ওই কারখানার এক শ্রমিক  বলেন, ‘আমরা কাজ করতে চাই। কারখানা আমাদের সম্পদ। তাই এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। কারখানা বন্ধ হলে খাব কী?’

আশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১–এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, নির্ধারিত সময়ে শ্রমিকেরা কারখানায় আসেন। পরে বিভিন্ন কারখানার সামনে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা হা-মীম গ্রুপের কারখানার শ্রমিকদের দেখে তাঁরা কেন কারখানায় কাজ করছেন, এমনটি বলার পর কারখানায় ছুটি ঘোষণা করা হয়।

পরে আশুলিয়ার অন্তত ৬০টি কারখানা ছুটি ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট কারখানা কর্তৃপক্ষ। এই মুহূর্তে ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।