আরও বেশি বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী নেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৮:২২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭১৩ বার পড়া হয়েছে
জাতিসংঘে বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের নিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

রোববার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জঁ-পিয়ের লাক্রোয়া প্রধান অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় এ আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি যে একটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছি, তা হলো শান্তিরক্ষা মিশনে আরও বেশি বাংলাদেশি নারীর অংশগ্রহণ। যেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।

বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে শীর্ষ তিনটি ট্রুপ/পুলিশ অবদানকারী দেশের (TPCCs) মধ্যে রয়েছে এবং বর্তমানে ১১টি সক্রিয় মিশনের মধ্যে ১০টিতে বাংলাদেশের ৫,৬৭৭ জন শান্তিরক্ষী নিযুক্ত আছেন।

জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় আরও বেশি নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কাজ করছে। আমরা নারীদের নির্দিষ্ট কোনো ভূমিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষার সকল ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগে সহায়তা করবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, জাতিসংঘের প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশ অতিরিক্ত ট্রুপ ও পুলিশ মোতায়েন করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা সক্ষমতা প্রস্তুতি ব্যবস্থায় (PCRS) র‍্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট লেভেলে পাঁচটি ইউনিটের অঙ্গীকার করেছে।

অধ্যাপক ইউনুস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সদরদপ্তর ও ময়দান স্তরে বাংলাদেশি নেতৃত্ব আরও বাড়ানোর পক্ষেও জোর দেন। জাতিসংঘ কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী যাচাই প্রক্রিয়া (vetting) বাংলাদেশ কঠোরভাবে অনুসরণ করে এবং মানবাধিকার রক্ষা আরও জোরদারে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতামূলক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নিতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে ১৩ থেকে ১৪ মে বার্লিন সফর করবে।

প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারে চলমান সংঘাত, সীমান্তবর্তী গোলাগুলি, বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এবং নাফ নদী সংলগ্ন এলাকার মানুষের জীবিকা বিপর্যয়ের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এ অস্থিরতা দীর্ঘ হলে তা আরও বড় নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করতে পারে। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা স্মরণ করেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি বলেন, এই সফর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে নতুন আশার আলো দেখিয়েছে।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

আরও বেশি বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষী নেওয়ার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

আপডেট সময় : ০৫:৪৮:২২ অপরাহ্ণ, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫
জাতিসংঘে বাংলাদেশি নারী শান্তিরক্ষীদের নিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একইসঙ্গে তিনি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

রোববার জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রম বিষয়ক আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জঁ-পিয়ের লাক্রোয়া প্রধান অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এসময় এ আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমি যে একটি বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছি, তা হলো শান্তিরক্ষা মিশনে আরও বেশি বাংলাদেশি নারীর অংশগ্রহণ। যেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।

বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে শীর্ষ তিনটি ট্রুপ/পুলিশ অবদানকারী দেশের (TPCCs) মধ্যে রয়েছে এবং বর্তমানে ১১টি সক্রিয় মিশনের মধ্যে ১০টিতে বাংলাদেশের ৫,৬৭৭ জন শান্তিরক্ষী নিযুক্ত আছেন।

জাতিসংঘের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় আরও বেশি নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কাজ করছে। আমরা নারীদের নির্দিষ্ট কোনো ভূমিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষার সকল ক্ষেত্রে নারীদের নিয়োগে সহায়তা করবে।

প্রধান উপদেষ্টা জানান, জাতিসংঘের প্রয়োজন অনুযায়ী বাংলাদেশ অতিরিক্ত ট্রুপ ও পুলিশ মোতায়েন করতে প্রস্তুত আছে। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা সক্ষমতা প্রস্তুতি ব্যবস্থায় (PCRS) র‍্যাপিড ডিপ্লয়মেন্ট লেভেলে পাঁচটি ইউনিটের অঙ্গীকার করেছে।

অধ্যাপক ইউনুস জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সদরদপ্তর ও ময়দান স্তরে বাংলাদেশি নেতৃত্ব আরও বাড়ানোর পক্ষেও জোর দেন। জাতিসংঘ কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশকে সহায়তা করবে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী যাচাই প্রক্রিয়া (vetting) বাংলাদেশ কঠোরভাবে অনুসরণ করে এবং মানবাধিকার রক্ষা আরও জোরদারে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে প্রশিক্ষণ ও জবাবদিহিতামূলক সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।

প্রধান উপদেষ্টা আরও জানান, জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নিতে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল পররাষ্ট্র উপদেষ্টার নেতৃত্বে ১৩ থেকে ১৪ মে বার্লিন সফর করবে।

প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারে চলমান সংঘাত, সীমান্তবর্তী গোলাগুলি, বেসামরিক হতাহতের ঘটনা এবং নাফ নদী সংলগ্ন এলাকার মানুষের জীবিকা বিপর্যয়ের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এ অস্থিরতা দীর্ঘ হলে তা আরও বড় নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করতে পারে। তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সম্মিলিত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

প্রধান উপদেষ্টা স্মরণ করেন, সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি বলেন, এই সফর রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের বিষয়ে নতুন আশার আলো দেখিয়েছে।