ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদক কর্মকর্তা সুদীপ বরখাস্ত

  • নীলকন্ঠ অনলাইন নীলকন্ঠ অনলাইন
  • আপডেট সময় : ০১:৪৭:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
  • ৭০৯ বার পড়া হয়েছে
ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগে উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরীকে বরখাস্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবিদুল মোমেন সই করা আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাকে দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(৪), ৩৯(চ) ও ৪০(১) (খ)(৫ অনুযায়ী চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বগুড়ায় উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে জেলা পুলিশে গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেনের সম্পদ বিবরণী যাচাই করেন। সে সময় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দেন সুদীপ কুমার। তখন আলমগীর হোসেনের কাছে ঘুষ দাবি করেন তিনি। কিছু টাকা তিনি উৎকোচ হিসেবে গ্রহণও করেছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ৭ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করলে মো. আলমগীর হোসেনের খালাতো বোন বেগম সুমাইয়া শিরিনের মাধ্যমে কিছু অর্থ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে বগুড়া বারের আইনজীবী মো. কামাল উদ্দিন থেকে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। পরে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আসিফুর রহমানের মাধ্যমে আরো ১ লাখ টাকা উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আলমগীর হোসেনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির খালাতো বোন বেগম রুমাইয়া শিরিন এবং অ্যাডভোকেট সৈয়দ আসিফুর রহমানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত মোবাইলের মাধ্যমে উৎকোচ দাবি ও গ্রহণের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও দুদকের ফরেনসিক ল্যাবে মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশনের আদেশ অমান্য করে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে উৎকোচ দাবি করে দুদকের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(৩) ও ৩৯(চ) বিধি অনুযায়ী যথাক্রমে অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করে তার কাছে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযোগের জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানি চান এবং সে অনুযায়ী ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় তদন্ত শেষে ওই বছরের ২ নভেম্বর দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(৪), ৩৯(চ) ও ৪০(১) (খ)(৫ অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ২০ জুলাই সুদীপ কুমার চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। ওই বছরের ৯ এপ্রিল বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন পুলিশ কর্মকর্তার বোন রুমাইয়া শিরিন।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে দুদক কর্মকর্তা সুদীপ বরখাস্ত

আপডেট সময় : ০১:৪৭:৩৫ অপরাহ্ণ, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫
ঘুষ গ্রহণ ও দুর্নীতির অভিযোগে উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরীকে বরখাস্ত করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবিদুল মোমেন সই করা আদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাকে দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(৪), ৩৯(চ) ও ৪০(১) (খ)(৫ অনুযায়ী চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বগুড়ায় উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে জেলা পুলিশে গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেনের সম্পদ বিবরণী যাচাই করেন। সে সময় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আশ্বাস দেন সুদীপ কুমার। তখন আলমগীর হোসেনের কাছে ঘুষ দাবি করেন তিনি। কিছু টাকা তিনি উৎকোচ হিসেবে গ্রহণও করেছেন।

তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, ৭ লাখ টাকা উৎকোচ দাবি করলে মো. আলমগীর হোসেনের খালাতো বোন বেগম সুমাইয়া শিরিনের মাধ্যমে কিছু অর্থ গ্রহণ করেছেন। যার মধ্যে বগুড়া বারের আইনজীবী মো. কামাল উদ্দিন থেকে ৫০ হাজার টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছেন। পরে অ্যাডভোকেট সৈয়দ আসিফুর রহমানের মাধ্যমে আরো ১ লাখ টাকা উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। আলমগীর হোসেনকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির খালাতো বোন বেগম রুমাইয়া শিরিন এবং অ্যাডভোকেট সৈয়দ আসিফুর রহমানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত মোবাইলের মাধ্যমে উৎকোচ দাবি ও গ্রহণের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডও দুদকের ফরেনসিক ল্যাবে মাধ্যমে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কমিশনের আদেশ অমান্য করে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকে উৎকোচ দাবি করে দুদকের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(৩) ও ৩৯(চ) বিধি অনুযায়ী যথাক্রমে অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভাগীয় মামলা রুজু করে তার কাছে অভিযোগনামা ও অভিযোগ বিবরণী জারি করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, অভিযোগের জবাব দাখিল করে ব্যক্তিগত শুনানি চান এবং সে অনুযায়ী ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তার ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করা হয়। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় তদন্ত শেষে ওই বছরের ২ নভেম্বর দাখিল করা তদন্ত প্রতিবেদনে সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। যে কারণে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮ এর ৩৯(খ), ৩৯(৪), ৩৯(চ) ও ৪০(১) (খ)(৫ অনুযায়ী তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ২০ জুলাই সুদীপ কুমার চৌধুরীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছিল। ওই বছরের ৯ এপ্রিল বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন পুলিশ কর্মকর্তার বোন রুমাইয়া শিরিন।