ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করেছেন চাঁদপুর জেলা কারাগারের বন্দিরা। প্রতিদিনের একঘেয়েমি ও গ্লানি ভুলে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে অংশ নিয়ে তারা হয়ে ওঠেন এক পরিবারের সদস্য।
সোমবার (৩১ মার্চ) সকালে ঈদের নামাজের মধ্য দিয়ে শুরু হয় উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা।
ঈদের নামাজের জামাতে শরিক হন কারাবন্দিরা। এরপর সহস্রাধিক বন্দিকে পরিবেশন করা হয় উন্নতমানের খাবার। ঈদের দিন সাধারণ বন্দীদের মতোই কারাগারে থাকা ভিআইপিসহ (বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) ডিভিশন পাওয়া বন্দীদের একই ধরনের খাবার পরিবেশন করা হয়েছে। এদিন সকালের খাবারে ছিল পায়েস, সেমাই ও মুড়ি। দুপুরে পোলাও, মুরগির রোস্ট, গরু ও খাসির মাংস, সালাদ, মিষ্টি ও পান। রাতে রুই মাছ, আলুর দম, সবজি ও সাদা ভাত। ঈদের পরদিন বন্দিদের বাড়ির রান্না করা খাবার দেয়া হয়েছে।
ঈদ উপলক্ষে এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন দেখে খুশি বন্দিরা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বন্দিরা যাতে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে পারেন, সে জন্য প্রত্যেক বন্দিকে ২০ মিনিট করে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। যাদের স্বজনরা আসতে পারেননি, তাদের জন্য ফোনে ফ্রী ৫ মিনিট টেলিফোনে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়।
ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিতে বন্দিদের জন্য আয়োজন করা হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া আয়োজন। স্বজনদের জন্যও ছিল অভ্যর্থনা ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা।
কারারক্তিদের সাথে দেখা করতে আসা স্বজনরা জানান ‘আমরা শুধু কাঙ্ক্ষিত সেবা নয়, অতিথির মতো অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন পেয়েছি। এটি আমাদের জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা।’ এমন আয়োজনের জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে সাধুবাদ জানাই।
চাঁদপুর জেলা কারাগারের জেলার মুহাম্মদ মুনীর হোসাইন বলেন, অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুয়ায়ী বন্দীদের জন্য আলাদা বন্দোবস্তের আয়োজন করা হয়। ঈদের পরদিন কারাগারের ভেতরে বন্দীদের জন্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ঈদের পরদিন থেকে তিন দিন বন্দীদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলতে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বন্দিদের সংশোধনের মাধ্যমে প্রকৃত মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কারা মহাপরিদর্শকের নির্দেশ অনুযায়ী ঈদের দিনে এই বিশেষ আয়োজন করা হয়েছে।
বন্দিদের জন্য এমন মানবিক ও আনন্দঘন আয়োজন তাদের মানসিক সুস্থতা ও সামাজিক পুনর্বাসনের পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন তিনি।