মাঠে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে মাটি কাটার অভিযোগ
নিউজ ডেস্ক:দামুড়হুদার লক্ষীপুর কানাপুকুরের মাঠে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটার অভিযোগ উঠেছে। আর এসব মাটি বিক্রি করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়।
জানা যায়, দামুড়হুদার লক্ষীপুর গ্রামের মৃত আজিমদ্দিনের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা চাঁদ আলী তার কানাপুকুর মাঠের নিজস্ব ২ একর জমির উপর পুকুর খননের নামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে মাটি কেটে বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আর এ কাজে সহযোগিতা করছে বদনপুর গ্রামের মাটি ব্যবসায়ী মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে ছানোয়ার হোসেন (৪০) বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধা চাঁদ আলীর জমির পাশে একটি জমিতে ২২ থেকে ২৫ ফিট খনন করে বালি উত্তোলন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। নিয়মবর্হিভূত খনন করায় হুমকির মুখে পড়েছে এই জমির আশেপাশে থাকা অন্যসব আবাদি জমি ও ফসল।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, একটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে এবং এই মাটি ৯টি ট্রাক্টর বহন করে পুড়াপাড়ার রাজা ব্রিকস ও কুষাঘাটার বন্ড ব্রিকস বিভিন্ন ভাটায় চলে যাচ্ছে। প্রতি গাড়ি মাটির জন্য ৯শ’ টাকা করে পরিশোধও করছেন ভাটা মালিকরা।
জমির মালিক চাঁদ আলীর কাছে অনুমতির বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও মহোদয় আমাকে মৌখিক অনুমতি দিয়েছেন। ‘আর আমার জমিতে আমি যা ইচ্ছা তাই করবো। এসময় তিনি নিজেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা বলে দিয়ে বলেন পারলে আমার নামে মামলা করো। আমি ওসব ভয় পাই না।
মাটি ব্যবসায়ী ছানোয়ার বলে, এই মাটি মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছি।
ফসলি মাঠের ক্ষতিগ্রস্ত চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, পাশের একটি জমি থেকে প্রায় ৬ মাস ধরে অবাধে ফসলি মাঠ খনন করে মাটির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে মাটি ও বালি ব্যবসায়ী ছানোয়ার। এতে আশপাশের আমাদের ফসলি জমিগুলো নষ্ট হচ্ছে। কিন্তু অবৈধ ড্রেজারটি বন্ধ করার মতো কেউ নেই।
এদিকে চাঁদ আলী একজন মুক্তিযোদ্ধা ও প্রভাবশালী হওয়ায় সবাই চুপ থাকছে, কেউ অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছে না বলেও নাম না প্রকাশ করার শর্তে কয়েকজন সাধারন চাষি এই প্রতিবেদকের কাছে অভিযোগ করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গ্রামের ফসলি মাঠের মধ্যে দু’বিঘা জমিজুড়ে কয়েক মাস ধরে দিনভর ড্রেজার মেশিন চালিয়ে গভীর খনন করা হচ্ছে। এতে আশপাশের জমিগুলো বর্ষা মৌসুমে প্রবল ¯্রােতে ফসলি মাঠের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। ছানোয়ার রাজনৈতিক ও পেশিশক্তি খাটিয়ে ফসলি মাঠে ড্রেজার মেশিন দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাটির ব্যবসা করে চলেছেন। ফসলি মাঠের আরেক চাষি জানান, আমরা গরিব মানুষ, আমাদের কথা কেউ শোনে না। ড্রেজার মেশিনটি বন্ধের ব্যবস্থা করে আমাদের কৃষি জমিটুকু রক্ষা করবে কে? অবৈধ পুকুর খননের নামে ভাটায় বিক্রি হচ্ছে লাখ লাখ টাকার মাটি দেখার কী কেউ নেই?
এবিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পুকুর খননের জন্য চাঁদ আলীকে কোন ধরণের অনুমতি দেওয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, এখনো পর্যন্ত এ বিষয়ে কোন অভিযোগ আসেনি, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবৈধ পুকুর খননের বিষয়টা তিনি নিজে খোঁজ নিবেন বলেও এই প্রতিবেদককে জানান।