নিউজ ডেস্ক:
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে আজ সোমবার সকাল থেকে দোকান বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে ব্যবসায়ীরা।
এর আগে, রবিবার বেলা পাঁচটায় শহরের শহীদ হাসান চত্বরে জমায়েত হয়ে দোকান মালিক সমিতি এ ঘোষণা দেয়। ব্যবসায়ীরা চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপারের অপসারণও দাবি করেছে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার দোকান মালিক সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করেছেন। দোকান মালিক সমিতির এ কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকে ব্যবসায়ীরা তাদের দোকান-পাট বন্ধ করে দিয়েছেন।
ব্যবসায়ী ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, রবিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফকরুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি ভ্রাম্যমাণ আদালত চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলবাজারে বিশ্বাস স্টোরে অভিযান চালায়। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে থাকা পুলিশ সদস্যরা দোকানের ভেতরে ঢুকে সেখানকার বিভিন্ন মালামাল দেখতে থাকে। মেয়াদোত্তীর্ণ কিছু মালামালও জব্দ করা হয়। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হক লেমন ও সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার ঘটনাস্থলে যান। এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতে দায়িত্বরতদের সাথে ব্যবসায়ীদের কথা কাটাকাটি হয়। কিন্তু চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. নিজাম উদ্দীন খবর পান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করার সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ সদস্যদের আটক করে রেখেছে ব্যবসায়ীরা। খবর পেয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. নিজাম উদ্দীন নিজে ঘটনাস্থলে যান। ততক্ষণে ঘটনাস্থলে অনেক ব্যবসায়ী জমায়েত হয়।
চুয়াডাঙ্গা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মো. নিজাম উদ্দীন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আসাদুল হক লেমনকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন এবং বিশ্বাস স্টোরের মালিক আলাউদ্দিন আলীকে থানায় নিয়ে আসেন। পরে থানায় উপস্থিত হন দোকান মালিক সমিতির অন্যান্য নেতারাও। বেলা ৪টার দিকে থানা থেকে ব্যবসায়ী আলাউদ্দিন আলীকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলবাজারে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপারের হাতে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি লাঞ্ছিত হয়েছেন এমন খবর শহরে ছড়িয়ে পড়লে ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে শহীদ হাসান চত্বরে জমায়েত হতে থাকে। বেলা ৫টার দিকে শহীদ হাসান চত্বরের ট্রাফিক আইল্যান্ডে দাঁড়িয়ে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে দোকান মালিক সমিতির পক্ষ থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
কর্মসূচি ঘোষণা করেন দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার। তিনি বলেন, দোকান মালিক সমিতির জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন থেকে পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র ওষুদের দোকান ও হোটেল খোলা থাকবে। কর্মসূচি থেকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ সুপার মো. নিজাম উদ্দীনের অপসারণ দাবি করা হয়। শহীদ হাসান চত্বরে দোকান মালিক সমিতির সমাবেশ শেষ হওয়ার পরপরই চুয়াডাঙ্গা শহরের সব দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার মো. নিজাম উদ্দীন বলেন, রবিবার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আইন শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক চলছিল। এ অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ খবর পান, শহরের রেলবাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালে ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশদের আটকে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
পুলিশ সুপার বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে তাদের থানায় এনে আলোচনা করি। দোকান মালিক সমিতির নেতারা মুচলেকা দিয়ে ব্যবসায়ীকে নিয়ে যান। অথচ, পরে দোকান মালিক সমিতির নেতারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ দেন। তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি দোকান মালিক সমিতির সভাপতিকে লাঞ্ছিত করিনি।