সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জে ওয়ারিশদের তথ্য গোপন করে দলিলে রেকর্ডীয় অংশের চেয়ে অধিক সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেওয়ার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে মনিরুজ্জামান মন্টু ও সুফিয়া গংদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় প্রকৃত মালিকানা থাকা সত্ত্বেও জোরপূর্বক জমি দখলের চেষ্টা, ভয়ভীতি, হুমকি ও প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে। বাবা-মা হারা, দরিদ্র ও অসহায় এতিম রমজান গং ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, জমি নিয়ে মামলা চলমান থাকাকালীন সময়ে বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান তালুকদারের স্বাক্ষরিত এক চুক্তিপত্রে রমজানদের সম্পত্তি মালিক দাবি করে সুফিয়া বেগম ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে কামারখন্দ উপজেলার প্রভাবশালী শাহাদত হোসেনের নিকট ৫ ডেসিম্যাল জমি বায়নানামা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৮সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল মৌজার এসএ ২৮১ ও আরএস খতিয়ানভুক্ত ৫৩ এবং এসএ ১৭৭৯ ও আরএস ২১২৭ নম্বর দাগে মোট ৪৩ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে রেকর্ড অনুযায়ী আব্দুল মমিনের ৫৮৩ হিস্যায় ২৫ শতক জমি প্রাপ্য। অন্যদিকে আতাব আলী মন্ডল, মন্তাজ আলী মন্ডল, আছিয়া খাতুন ও ছাকেরা খাতুনের অংশ মিলে বাকি ১৮ শতক জমি তাদের মালিকানায় পড়ে।সরকারি নথিতে দেখা যায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্তৃক প্রদত্ত আদেশে দলিল দাতা আব্দুল মমিন তার রেকর্ডীয় অংশে ২৫ শতক পতিত জমির পাশাপাশি রমজান ও হালিম গং দখলীয় স্বত্ব হিসেবে আরও ১৮ শতক জমিতে টিনসেড ঘর তুলে বসবাস করে আসছেন।
২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম রকিবুল হাসান স্বাক্ষরিত ৭৬৪৪/২০১৮-১৯ নম্বর কেস বহাল রেখে ১৪০-২০২১-২২ নামজারী কেস নিষ্পত্তি করা হয়। (আপনি চাইলে এই লাইন বাদ দিতে পারেন না মামা) কারন এখানে মন্টুদের কেস বহাল রাখছে যা আমাদের কাছে নেগেটিভ
তথ্যানুসন্ধানে আরও জানা যায়, রেকর্ডীয় মালিকানার ভিত্তিতে ভোগদখল থাকা অবস্থায় রমজান গং ২০২২ সালে উক্ত দাগ থেকে ০.০৩৭৯ শতক জমি খারিজ করে ৩০৯৯ নম্বর হোল্ডিং খোলেন এবং নিয়মিত কর প্রদান করে আসছেন। অপরদিকে, ২০২০ সাল থেকে মূল রেকর্ডীয় মালিক আব্দুল মমিনও ২৯০১ নম্বর হিসাব খুলে নিয়মিত কর পরিশোধ করে আসছেন।জমি নিয়ে বিরোধ নিরসনের লক্ষ্যে স্থানীয় মাতব্বরদের উদ্যোগে একাধিক শালিসী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নানের উপস্থিতিতে ইউনিয়নের সর্বোচ্চ মুরুব্বিরা উভয়পক্ষকে শান্তি-শৃঙ্খলার স্বার্থে আপোষের প্রস্তাব দেন। সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হয়— আরএস খতিয়ানভুক্ত দাগ নম্বর ২১২৭ এ অবস্থিত ৪৩ শতক জমির মধ্যে রমজান গং প্রকৃত মালিক হিসেবে ১৮ শতক প্রাপ্য হলেও আপোষে তারা ১২ শতক ভোগদখল করবেন এবং বাকী ৩১ শতক অপর পক্ষের ভোগদখলে থাকবে। একইসাথে শর্ত ছিল, জমি বাটোয়ারা বা মামলা চলমান থাকা অবস্থায় কোনো পক্ষই উক্ত সম্পত্তি বিক্রি বা হস্তান্তর করতে পারবে না। কিন্তু ওই শালিসী চুক্তি উপেক্ষা করে সুফিয়া বেগম, বিএনপি নেতা আনিছুর রহমান তালুকদারের স্বাক্ষরিত বায়নানামার মাধ্যমে ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে শাহাদত হোসেনের নিকট ৫ ডেসিম্যাল জমি বিক্রয়ের চুক্তি করেন। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনা ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অসহায় এতিম রমজান গং-এর সম্পত্তি দখলের পায়তারা চলছে। এ ঘটনায় তারা আইনের আশ্রয় নিলেও প্রভাবশালীদের কারণে ন্যায্য বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।