ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস আমিনুল হক নোমানী হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোলা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতি। রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবন চত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ভোলা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শামীমসহ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এসময় তারা হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।
বক্তারা বলেন, “এই হৃদয়বিদারক ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। জুলাই অভ্যুত্থান-পরবর্তী স্বাধীন ভূমিতে এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রত্যাশিত ছিল না। আমিনুল হক নোমানী শুধুমাত্র একজন শিক্ষক নন, তিনি ছিলেন দ্বীনের দায়ি ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর।”
তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের ফাঁসির দাবি জানান। একই সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করে পাশে থাকার আশ্বাস দেন শিক্ষার্থীরা।
ভোলা জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সেক্রেটারি মোঃ শামীম বলেন, “আজ আমিনুল হক নোমানীকে শুধুমাত্র হত্যা করা হয় নাই বরং এ দেশের শিক্ষিত আলেম সমাজের উপরে হামলা করা হয়েছে। ৫ আগস্টের পরে দেশে যেরকম অরাজকতা শুরু হয়েছে সেখানে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। ইন্টারিম গভমেন্টের কোন ভূমিকায় আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এদেশের সাধারণ জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। ছাত্রসমাজ,শিক্ষক সমাজ, শ্রমিক, কর্মজীবী এমন কি সাংবাদিকরাও নিরাপত্তাহীনতাই ভুগছেন। আমাদের দেশ নিয়ে বহিরাগত পরাশক্তি ষড়যন্ত্র করছে।”
তিনি আরো বলেন, “আজকে সাংবাদিক ভাইদের জীবন হুমকির মুখে। আজ আমরা যারা চলাফেলা করছি সমাজে, যারা ইসলামী রাজনীতির কথা বলছে দ্বীনের কথা বলছে হকের কথা বলছে নৃশংস ভাবে হত্যা করা হচ্ছে, তাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। আমি ভোলা জেলা কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী শিক্ষক সবাইকে আহবান করতে চাই আপনারা আমিনুল হক নোমানী সাহেবের হত্যার বিচার না পাওয়া পর্যন্ত কেউ পিছুপা হবেন না। বিচার পরিপূর্ণভাবে আদায় করে তারপর মাঠ ছাড়বেন নতুবা আজ নোমানী সাহেবকে হত্যা করা হয়েছে কাল আমাকে,পরশু আপনাকে হত্যা করা হবে।”
উল্লেখ্য, আমিনুল হক নোমানী ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস ছিলেন। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাত সোয়া ৯টার দিকে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের উত্তর চরনোয়াবাদ এলাকায় নিজ বাসায় দুর্বৃত্তরা তাকে কুপিয়ে জখম করে। পরে রাত ১০টার দিকে ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।