সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রবেশপদ নবম গ্রেড, আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা এবং বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে চাঁদপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২০ আগস্ট) বেলা ১১ টায় শহরের অঙ্গীকার পাদদেশে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক পরিবারের আয়োজনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক পরিবারের সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক মোঃ মাসুদুর রহমানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন, শিক্ষক পরিবারের সদস্য মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোঃ রাশেদুল হক, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা, দীপক চন্দ্র ঘোষ, মোঃ হোসেন মিল্টন, আব্দুল আজিজ শিশির, হাফিজুর রহমান ও ইসকান্দর মির্জা।
শিক্ষক নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিক্ষার বৈষম্য দূর করে মাধ্যমিক স্তরকে শক্তিশালী করতে হলে অবিলম্বে আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠন করা প্রয়োজন। দেশে বর্তমানে ২০ হাজারেরও বেশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাখ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী এবং কোটি শিক্ষার্থী থাকলেও একটি মাত্র মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে এই বিশাল খাত পরিচালিত হচ্ছে। ফলে প্রশাসনিক কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি হচ্ছে এবং মাধ্যমিক শিক্ষা ক্রমাগতভাবে উপেক্ষিত হচ্ছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য আলাদা অধিদপ্তর থাকলেও মাধ্যমিকের জন্য এখনো আলাদা অধিদপ্তর গঠিত হয়নি, যা এক ধরনের বৈষম্য।
বক্তারা বলেন, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল যে মাউশিকে ভেঙে দুটি পৃথক অধিদপ্তর গঠন করা হবে। কিন্তু দীর্ঘ ১৩ বছরেও এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়নি। এর ফলে মাধ্যমিক শিক্ষকরা প্রশাসনিক প্রতিনিধিত্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এবং পদোন্নতি, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য প্রাপ্তি নিয়ে জটিলতায় পড়ছেন।
বক্তার আরো বলেন একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মূল ভিত্তি মাধ্যমিক স্তর। প্রাথমিক শিক্ষার পর এই স্তরেই শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়। অথচ মাধ্যমিক শিক্ষার দায়িত্ব এখনো কলেজ শিক্ষকদের হাতে, যাদের অনেকের মাধ্যমিকের বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। এতে শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা মনে করেন, আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠন হলে মাধ্যমিক শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া দ্রুত নিষ্পত্তি হবে এবং শিক্ষার মানোন্নয়নেও অগ্রগতি আসবে।
মানববন্ধনে শিক্ষক নেতারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেন। বার মধ্যে রয়েছে, আলাদা মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর গঠন, সহকারী শিক্ষকদের জন্য চারস্তরীয় পদোন্নতির সোপান চালু, ২০১৫ সালের জাতীয় পে-স্কেলের আগের বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রদান, সরকারি কলেজ শিক্ষকদের মতো মাধ্যমিক শিক্ষকদেরও নিয়মিত পদোন্নতির ব্যবস্থা গ্ৰহণ, সিনিয়র শিক্ষক পদকে প্রথম শ্রেণির গেজেটেড মর্যাদা প্রদান, এবং জাতীয়করণকৃত বিদ্যালয়ের জন্য যৌক্তিক আত্তীকরণ বিধিমালা প্রণয়ন করা ।