নিউজ ডেস্ক:
কোরআনে বর্ণিত
প্রত্যেক ধরনের গাছের সঙ্গে কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াত, গাছের পরিচয় ও বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্যের বিবরণ উল্লেখ করা হবে এবং বাগান উন্মুক্ত থাকবে সব শ্রেণী ও ধর্মের মানুষের জন্য। যেন তারা কোরআনের সৌন্দর্য অনুভব করতে পারেন। তরুণ মুসলিমদের জন্য আল্লাহর বাণীর মর্ম বোঝা সহজ হবে।’কোরআনে ৩১ প্রজাতির উদ্ভিদের উল্লেখ রয়েছে এবং এর সবই এখানে থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন
পবিত্র কোরআনের বর্ণনায় আল্লাহর সৃষ্টির বৈচিত্র্য খুঁজে পাওয়া যায়। কোরআনে রয়েছে মানুষের কথা, ফুল, পাখি ও পাহাড়ের কথা। সাগর, নদী, মেঘমালা ও ঝরনার কথা। মৌলিকভাবে পৃথিবীর সব সৃষ্টির কথা। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, ‘আমি এ গ্রন্থে কোনো কিছু ছাড়িনি।’ কোরআনে বর্ণিত বৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিত করতে এবার নেয়া হয়েছে অভিনব এক উদ্যোগ। কোরআনের ফুলফল ও বৃক্ষে সাজানো হচ্ছে একটি মসজিদ এবং তার বাগানকে। আর সেই মসজিদটি হচ্ছে পৃথিবীর বুদ্ধিবৃত্তিক রাজধানী খ্যাত ক্যামব্রিজে।
ক্যামব্রিজের মুসলমানদের আবেদনে সাড়া দিয়ে মসজিদটি নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে তুরস্কের সরকার।
সেপ্টেম্বর ২০১৬ সালে শুরু হওয়া নির্মাণ কাজ শেষ হবে জুন ২০১৭ সালে। ব্যয় হবে ১৮ মিলিয়ন আমেরিকান ডলার। ব্যয় হওয়ার অর্থের সিংহভাগই আসবে তুর্কি সরকারের ভা-ার থেকে। বাকিটা সাধারণ মুসলমানের অনুদান থেকে সংগ্রহ করা হবে। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময় সিমেন্টের সঙ্গে মেশানো হয় জমজমের পবিত্র পানি।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও উপাদান ব্যবহারে নির্মিত মসজিদটি হবে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। এখানে ব্যবহার করা হবে সৌরবিদ্যুৎ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তাপচালিত পাম্প, অত্যাধুনিক পানিশোধন পদ্ধতি। মসজিদের নির্মাণ কাজ শেষ হলে এখানে ১ হাজার পুরুষ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন। আর নারী মুসল্লিদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যবস্থা। সেখানে ৩০০ নারী একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন। এছাড়াও মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে অত্যাধুনিক প্রদর্শনী হল, শব্দরোধী মাতৃ কেন্দ্র, নারী চিকিৎসা কেন্দ্র ও একটি ডিজিটাল কোরআনিক স্কুল। তবে ক্যামব্রিজ মসজিদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আবদুল হাকিম মুরাদ বলেন, ‘দৃষ্টিনন্দন স্থাপনার বাইরে মসজিদের মূল আকর্ষণ তার চতুর্দিকের বাগান। বাগানটি কোরআনে বর্ণিত ফুলফল ও বৃক্ষ দ্বারা সাজানো।
তিনি আরও বলেন, ‘কোরআনে বর্ণিত প্রত্যেক ধরনের গাছের সঙ্গে কোরআনের সংশ্লিষ্ট আয়াত, গাছের পরিচয় ও বৈজ্ঞানিক বৈশিষ্ট্যের বিবরণ উল্লেখ করা হবে এবং বাগান উন্মক্ত থাকবে সব শ্রেণী ও ধর্মের মানুষের জন্য। যেন তারা কোরআনের সৌন্দর্য অনুভব করতে পারেন। তরুণ মুসলিমদের জন্য আল্লাহর বাণীর মর্ম বোঝা সহজ হবে।
কোরআনে ৩১ প্রজাতির উদ্ভিদের উল্লেখ রয়েছে এবং এর সবই এখানে থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
মসজিদ নির্মাণে ক্যামব্রিজের গুরুত্ব তুলে ধরে আবদুল হাকিম মুরাদ বলেন, এ শহরে এমন একটি মসজিদের বিশেষ প্রয়োজন ছিল। কেননা ক্যামব্রিজ হলো জ্ঞানচর্চা ও বুদ্ধিবৃত্তির আন্তর্জাতিক রাজধানী। এখানে নিউটন, ভিটগেনস্টাইন ও ডারউনের মতো বিশ্ববিখ্যাত ব্যক্তিরা পড়েছেন। পৃথিবীর সেরা ছাত্ররা এখানে ভর্তি হন এবং তারাই আগামী পৃথিবীর নেতৃত দেবে।
মসজিদ নির্মিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন শহরের ৬ হাজার মুসলিম বাসিন্দা। মসজিদ নির্মিত হওয়ায় তাদের অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে। ক্যামব্রিজের বাসিন্দা সাঈদ মুহাম্মদ ফাদেল বলেন, আমাদের মসজিদটি ছিল খুব ছোট। আমরা একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারতাম না। শুক্রবার আমাদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হতো। এখন আমাদের আর রাস্তায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতে হবে না। তাছাড়া কোরআনিক স্কুলটিও একটি ইতিবাচক উদ্যোগ।