রিএজেন্ট নেই হাসপাতালে, ক্লিনিকে পরীক্ষা ব্যয়বহুল
নিউজ ডেস্ক:ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালসহ জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে ডেঙ্গুর পরীক্ষা হচ্ছে না। ডেঙ্গু পরীক্ষার রিএজেন্ট না থাকাই বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর এখন পোয়াবারো। তারা ইচ্ছামতো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সাধারণ জ্বর এলেও মানুষ ডেঙ্গুর ভয়ে রক্ত পরীক্ষা করাচ্ছেন। ক্লিনিকে প্রতিটি রোগীর কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ২০০ টাকা। এতে গরিব রোগীরা পড়েছে বিপাকে। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম বলেন, ‘আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। কবে নাগাদ আসবে জানি না।’ সিভিল সার্জনের ভাষ্যমতে, প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে ডেঙ্গু রোগীর সাড়ে তিন শ টাকায় একটি পরীক্ষা করেই রোগ শনাক্ত করা সম্ভব। আর চার-পাঁচ দিন পর এলে আরও দুটি পরীক্ষা করতে হয়, যা রোগীদের জন্য ব্যয়বহুল। তিনি জানান, জেলার কোনো সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করা হচ্ছে না।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আইয়ুব আলী জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষার রিএজেন্ট রুটিন ওষুধ নয়। এ কারণে জেলার কোনো হাসপাতালেই ছিল না। দেশে ব্যাপকহারে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ায় সবখানেই এখন রিএজেন্ট সংকট দেখা দিয়েছে বলে তিনি জানান। ডা. আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমরা রিএজেন্টের চাহিদা পাঠিয়েছি, হয়তো দ্রুতই চলে আসবে।’ এ দিকে ঝিনাইদহে সন্ধান মিলেছে অনেক ডেঙ্গু রোগীর। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে গত ২২ দিনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন ১০ জন। এর মধ্যে তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ছয়জন চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। একজন এখনো ভর্তি আছেন। ডেঙ্গু আক্রান্তরা হলেন হরিণাকু-ু উপজেলার শ্রীফলতলা গ্রামের মতিয়ার রহমানের ছেলে মাহবুব (১৮), হরিণাকু-ু শহরের আব্দুল লতিফের ছেলে হাফিজুর রহমান (৩২), ঝিনাইদহ শহরের কালিকাপুর পাড়ার তোয়াজ উদ্দীনের ছেলে সাইফুল (৫২), চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার তিওরবিলা গ্রামের মিঠুনের মেয়ে অন্তরা খাতুন (১১), শৈলকুপার চাঁদপুর গ্রামের আবু বকরের ছেলে নাঈম ম-ল (১৮), সদর উপজেলার কংশি গ্রামের সজিবের ছেলে ও ফিলিপস কোম্পানির জোনাল ম্যানেজার আশিকুর রহমান হিজল (২৭), পবহাটী গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আলামিন (১৯), খাজুরা গ্রামের জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রুমানা খাতুন (২৫), হামদহ এলাকার মাঝিপাড়ার বিশ্বনাথ দাশের স্ত্রী অমিতা রানী দাস (৩৫) ও কলাবাগানপাড়ার রাজু মিয়ার ছেলে শিবলী (৩১)। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অফিস থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আব্দুল কাদের জানান, চলতি মাসের ৬ জুলাই প্রথমে মাহবুব নামের একজনের শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু ধরা পড়ে। তিনি চিকিৎসা নিয়ে ৯ জুলাই হাসপাতাল ত্যাগ করেন। ৯ জুলাই হাফিজুর রহমান নামের একজন জ্বর নিয়ে ভর্তি হলে তাঁর শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু শনাক্ত হয়। পাঁচ দিন পর ১৪ জুলাই হাসপাতাল ত্যাগ করেন তিনি। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে ডেঙ্গু রোগীর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে।