টানা তৃতীয় দিনের মত নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ৫২ ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করার পর সেনাবাহিনীর অনুরোধে সড়ক থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছেন শ্রমিকরা। বুধবার (২ অক্টোবর) দুপুর ১ টার দিকে মহাসড়ক থেকে সরে যান তারা।
অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়ায় সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে সড়কটির ডিইপিজেড এলাকায় সড়ক উন্নয়নের কাজ চলমান থাকায় সেখানে যান চলাচলে কিছুটা ধীরগতি রয়েছে।
সরেজমিনে বাইপাইল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অবরোধের কারণে পার্শ্ববর্তী বাইপাইল আব্দুল্লাহপুর সড়ক ও ঢাকা-আরিচা মহাসড়কেও যানজট সৃষ্টি হয়েছীল। সবমিলিয়ে ৩ সড়কে প্রায় ৩০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যানজটের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছিল ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর সড়ক। এসব সড়কে বেশিরভাগই মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ব্যাংক ও স্বল্প সংখ্যক যাত্রীবাহী বাস রয়েছে। যানজটের কারণে অনেককেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যস্থলে রওনা হতে দেখা গেছে।
এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার বার্ডস গ্রুপের তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সার্ভিস বেনিফিট ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। কোনো ধরনের আশ্বাস না পেয়ে শ্রমিকরা এখনও অবরোধসহ সড়কে অবস্থান করছেন।
এদিকে, শ্রমিকদের টাকা পরিশোধ না করলেও শ্রমিক নেতাদের প্রায় সাড়ে ৮ লাখ টাকা উৎকোচ হিসেবে প্রদানের দাবি করেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
অবরোধকারী শ্রমিকরা আরও জানায়, আজকে তিন দিন ধরে আমরা খেয়ে না খেয়ে মহাসড়কে অবস্থান করছি। কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের পাওনা পরিশোধের তারিখ দিয়ে সেই তারিখ আবার পরিবর্তন করে ৩ মাস সময় বর্ধিত করেছে। এরইমধ্যে মালিকপক্ষের লোকজন কারখানার বিভিন্ন মেশিনারিজ ও ঝুটসহ মূল্যবান মালামাল বিক্রি করে দিয়েছে। এখনো কোটি কোটি টাকার মেশিন ভিতরে রয়ে গেছে। সেখানে আমাদের পাওনা মাত্র ২৬ কোটি টাকা। আমাদের বেতন পরিষদের নির্দিষ্ট তারিখ দেয়ায় আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে আশুলিয়ায় এসেছি। এখানে আমাদের থাকা খাওয়ার কোন ব্যবস্থা না থাকায় রোদে পুড়ে এবং বৃষ্টিতে ভিজে মহাসড়কেই অবস্থান করছি। দেশের সরকার কিংবা বিজিএমইএ এর এমন কোন লোক নেই যারা আমাদের পাওনা পরিশোধের দায়িত্ব নিবেন। আমাদের অনেকেই ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে এখানে এসেছি।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিক শহিদুল ইসলাম বলেন, একজন লোকের জন্য আমরা ছয়-সাত হাজার শ্রমিক তিন দিন ধরে রাস্তায়। সড়ক অবরোধের কারণে গাড়ি বন্ধ থাকায় আটকে পড়া পরিবহনে থাকা কাঁচামালসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমরা রাস্তা অবরোধ করে রাখতে চাই না। অবিলম্বে বার্ডস গ্রুপের মালিক মোস্তফাকে গ্রেপ্তার করে আমাদের পাওনা পরিশোধ করা হোক।
এ বিষয়ে শিল্পপুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম ও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।