নিউজ ডেস্ক:
সিলেটে কমতে শুরু করেছে সুরমা-কুশিয়ারার পানি। ফলে কিছুটা উন্নতি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির। বন্যার পানি কমলেও কমছে না মানুষের দুর্ভোগ। বন্যা আক্রান্ত এলাকায় ঘরে ঘরে দেখা দিয়েছে পানিবাহিত রোগ। এছাড়া বন্যার পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়েছে গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সুরমা নদীর সিলেট, কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে কুশিয়ারা নদীর আমলসীদ ও শেওলা পয়েন্টে বিপদ সীমার কিছুটা উপর দিয়ে এবং শেরপুর পয়েন্টে বিপদসীমার সমান উচ্চতায় পানি প্রবাহিত হচ্ছিল বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানিয়েছে।
শুক্রবার কুশিয়ারা নদীর পানি কমায় জেলার বন্যাক্রান্ত বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও গোলাপগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে।
ওসমানীনগরের সাদিপুর ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর ও খসরুপুরসহ আশপাশ এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, যেসব রাস্তাঘাট এতোদিন বন্যার পানিতে নিমজ্জিত ছিল তা ভেসে উঠেছে। তবে বন্যায় রাস্তা ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। খানাখন্দের রাস্তা দিয়ে যান ও জন চলাচল কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এলজিআরডির নির্বাহী প্রকৌশলী এএসএম মহসীন জানান, বন্যায় সিলেটের ১১টি উপজেলায় ২২৬ কিলোমিটার রাস্তা তলিয়ে গেছে। এসব রাস্তার বিভিন্ন স্থান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা মেরামতের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ইতোমধ্যে বরাদ্দ এসেছে ২৫ কোটি টাকা। এছাড়া সড়ক ও জনপথের আওতাধীন ৬ কিলোমিটার রাস্তাও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
এদিকে, বন্যা আক্রান্ত এলাকায় পানিবাহিত নানা রোগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ডায়রিয়া ও চর্মরোগ ছড়িয়ে পড়েছে। উপদ্রুত এলাকায় চিকিৎসা দিতে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ৬৮টি ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩২টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বন্যা প্লাবিত বিশাল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে এই মেডিকেল টিম পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করছেন বন্যাদুর্গরা।
এদিকে, দুপুরে সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও ওসমানীনগরের দয়ামীর এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। এসময় তিনি বলেন, দেশে কোন খাদ্য ঘাটতি নেই। সরকারের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ খাদ্য মজুদ রয়েছে।
অপরদিকে, ওসমানীনগরের শেরপুরে জাতীয় পার্টির ব্যানারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ইয়াহইয়া চৌধুরীর উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপার চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ।