নিউজ ডেস্ক:
অসুস্থতা, সংশয় দ্বিধা আর নিন্দুকের মুখে ছাই ছিটিয়ে বাংলা নববর্ষের দিন ঠিকই একসঙ্গে হয়ে গেলেন শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। সঙ্গে আবরাম খান জয়। অনেকেই বলেন শাকিব হয়তো পাল্টে যাবেন দ্রুত। কিন্তু যে পৃথিবীতে মানুষেরই এক সেকেন্ডের ভরসা নেই, সেখানে সম্পর্কের গ্যারান্টি কে দেবে? সমালোচনা বা দ্বিধার দৃষ্টি নয়, মিলনের দৃষ্টিতেই দেখা উচিত অপুর সংসারকে…
নববর্ষের নতুন আলোয় ভাসলেন শাকিব খান আর অপু বিশ্বাস। অন্যরকম ভালো লাগা নিয়ে নতুন বছরে পথচলা শুরু হলো তাদের। এবার তারা একা নন। নব বৈশাখে ৬ মাস বয়সী আদরের সন্তান আবরামও ছিল তাদের সঙ্গে। নতুন বছরের সুন্দর সকালে শাকিবকে মোবাইলে মেসেজ পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানালেন অপু। সেই মেসেজে শাকিবকে আবরামের ‘পাপা’ সম্বোধন করেন অপু। শাকিব তখন হাসপাতালে। শাকিব যেহেতু অসুস্থ হয়ে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে মোবাইল ব্যবহার করতে পারছেন না তাই শাকিবের চাচাতো ভাই মনির টেক্সট মেসেজ দিয়ে অপুকে জানালেন বিকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে একটি অনুষ্ঠানে আসবেন শাকিব খান, শাকিব অনুরোধ করেছেন আবরামকে নিয়ে যেন অপু তাতে যোগ দেন। স্বামীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে খুশিতে ডগমগ অপু আবরামকে নিয়ে ছুটে যান। আগেই হোটেলে পৌঁছেন শাকিব।
অপু আর সন্তানকে দেখে শারীরিক অসুস্থতার কথা যেন মুহূর্তেই ভুলে যান শাকিব। তার চোখ-মুখ ভরে উঠে আনন্দ আলোয়। হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে উঠেন তিনি। আবরামকে কোলে তুলে নেন। পাশে বসেছেন অপু। তার দিকে আবেগের চোখ দিয়ে তাকান। শাকিব আর অপু, দুজনের চোখের কোণে তখন দীর্ঘ খরার পর স্বস্তির বর্ষণের আনন্দ অশ্রু জমে উঠেছে। কারও মুখে কোনো কথা নেই। মিলনের আবেগে বাকরুদ্ধ তারা। এভাবে কেটে যায় অনেকটা সময়।
সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে শাকিব বলেন, এর আগের নববর্ষগুলোতে আমি কারও ছেলে ছিলাম। এবার নিজে বাবা। সন্তান আর প্রিয়তমা স্ত্রীর সঙ্গে নববর্ষ পালন করতে পারছি এ এক অন্যরকম ভালো লাগা। আমাদের আবরাম এখন আমাদের দুজনকে ছাড়িয়ে মহাতারকা হয়ে উঠেছে। সবার জন্য রইল আমাদের শুভ কামনা। অপু বললেন এবারের নববর্ষ সত্যিই আমাদের জীবনে অন্যরকম পূর্ণতা নিয়ে এসেছে। এবার আমরা শুধু দুজন নই, সঙ্গে আছে পরম আদরের ধন আবরাম। গত বছরের নববর্ষে আমি বাচ্চা ক্যারি করছিলাম। তখন কীভাবে ও পৃথিবীতে আসবে। আগামীটা কেমন কাটবে, এমন হাজারো ভাবনার সাগরে ডুবে ছিলাম। আর আজ আনন্দ আলোতে আমরা তিনজন ভাসছি।
অপু বলেন, এ মুহূর্তে কাজে ফেরা নয়, বাচ্চার দেখাশোনা করাটা জরুরি। শাকিবের কথায়, বাচ্চাটা আরেকটু বড় হোক, তারপর না হয় অপু কাজে ফিরে আসুক। অপু তার প্রিয় স্বামীর কথায় সায় দিয়ে বলেন ও যা চাইবে আমি তা-ই করব। আমার এখন প্রথম পছন্দ হচ্ছে স্বামীর সিদ্ধান্ত। শাকিবকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি। আর আমার মহা রত্ন আবরামের জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত আমি।
অনুষ্ঠানে শাকিবের কাছে যখন জানতে চাওয়া হয় অপুকে কখন তিনি ঘরে বরণ করে নিচ্ছেন, এর জবাবে তৃপ্তির হাসি হেসে শাকিব বলেন ওতো অনেক আগেই আমার মনের ঘরে উঠে আছে। তাকে নতুন করে আবার কীভাবে ঘরে উঠাব। আবার প্রশ্নের বৃষ্টিতে শাকিব, কখন হানিমুনে যাচ্ছেন আপনারা, কারণ অপু বলেছেন তার জীবনে এই স্বপ্ন অপূর্ণ রয়ে গেছে। এমন কথায় লজ্জায় লাল হয়ে উঠে শাকিব বলেন, অপুর কোনো ইচ্ছাই আমি অপূর্ণ রাখব না। একজন আদর্শ স্বামী হয়ে তাকে আমার জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে রাখব চিরদিন। যতক্ষণ তিনজন একসঙ্গে ছিলেন আবরাম ছিল বাবা শাকিবের কোলজুড়ে। শাকিব প্রতি মুহূর্তে আদরের সন্তানকে বুকে জড়িয়ে রেখেছিলেন। শাকিবকে দেখে মনে হলো আসলেই তিনি একজন গর্বিত পিতা আর আদর্শ স্বামী।
একসময় আসে বেদনাবিধূর বিদায়ের পালা। শাকিবকে একটি ছবির মহরতে যোগ দিয়ে আবার হাসপাতালে ফিরতে হবে। কারণ তার চিকিৎসা এখনো শেষ হয়নি। ‘রংবাজ’ ছবির মহরতে অংশ নিয়ে শাকিব ফিরে যান হাসপাতালে। তার আগে আবরামকে নিয়ে বাসার উদ্দেশে রওনা হন অপু। যাবার বেলা আবারও দুজন দুজনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে অপুকে শাকিব বলেন, আবরামকে যত্নে রেখো আমি হাসপাতাল থেকে না ফেরা পর্যন্ত ভালোভাবে দেখে রেখো…। দুজনের চোখে তখন বেদনার অশ্রু। আর আবরাম বাবার দিকে বাড়িয়ে রেখেছে দুহাত…।