নিউজ ডেস্ক:
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘আমরা যে সৃষ্টির সেরা জীব, সেটি প্রমাণ করতে চাই জ্ঞানের সঠিক অনুশীলন।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা জন্মগতভাবে শ্রেষ্ঠ জীব হতে পারি না। শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে হলে জ্ঞান আহরণ করতে হবে এবং এর যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। আজ খুব আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে তোমরা বই নিচ্ছ। কিন্তু বই নিয়ে শুধু রেখে দিলে হবে না। পড়তে হবে। অনুশীলন করতে হবে। মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। জ্ঞানের সঠিক অনুশীলন ছাড়া কখনো শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা খাতকে আরো উন্নত করতে হবে। সরকার সে লক্ষ্যে কাজও করে যাচ্ছে। সরকার এ বিষয়ে অনেক আন্তরিক। তবে শুধু সরকারের একার পক্ষে লক্ষ্য বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এর জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’
প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিনামূল্যে সারা দেশে এতগুলো বই বিতরণ বিশ্বে নজীরবিহীন ঘটনা। শিক্ষার মান বাড়াতে সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নানা উদ্যোগ নিচ্ছে এবং ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এটিকে উন্নত করতে সরকারের পাশাপাশি শিক্ষক ও অভিভাকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। ২০১৭ সালের মধ্যে কোনো শিক্ষকের ঘাটতি থাকবে না।’
চার রঙের নতুন বইয়ের মোড়কে সারা দেশে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে জাতীয় পাঠ্যপুস্তক উৎসব। এ উপলক্ষে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঢাবি খেলার মাঠে তৈরি করা হয় লাল-সবুজের মঞ্চ। উৎসবে মিলিত হয় রাজধানীর বিভিন্ন বিদ্যালয় থেকে আসা হাজারো শিশু ও অভিভাবকেরা। বছর শুরুর দিন সকালে কোমলমতি শিশুরা নতুন বই হাতে পেয়ে উৎসবে মেতে উঠেছে। মাঠের আকাশে উড়ছে নানা রঙয়ের বেলুন, শিশুদের হাতে হাতে লাল রেশমি ফিতার উড়াউড়ি। সব মিলিয়ে খেলার মাঠ পেয়েছে উৎসবের আমেজ। এর আগে রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরে ২ কোটি ৪৯ লাখ ৮৩ হাজার ৯৯৩ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১১ কোটি ৫৫ লাখ ২৬ হাজার ৯৫২ পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে। এ বছরেই প্রথম প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে সারা দেশে পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর (চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো, সাদরী) শিক্ষার্থীদের মাঝে আট ধরনের পঠন-পাঠন সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।
মাধ্যমিকের বই উৎসবে কেন্দ্রীয় অনুষ্ঠানে রাজধানীর ৩১টি স্কুলের ৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়। দেশের মাধ্যমিক স্তরের প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে এ উৎসব পালিত হচ্ছে। বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উৎসবে ছিলেন।
২০১৭ শিক্ষাবর্ষে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের ৪ কোটি ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৯ জন ইবতেদায়ী, দাখিল, দাখিল কারিগরি, এসএসসি ভোকেশনাল, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হবে।