ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহর থেকে দুই সপ্তার ব্যবধানে নিখোঁজ হওয়া ৩ ব্যবসায়ী ২৬ দিনেও উদ্ধার হয়নি। তাদের নিখোঁজ রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নেমেছে পুলিশ। তিন ব্যক্তির পরিবার বলছে তাদের গুম করা হয়েছে। অন্যদিকে প্রশাসন বলছে দেনার কারণে তারা নিজেরাই গাঁঢাকা দিয়ে আছে। এ নিয়ে নানাবিধ প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। নিখোঁজ ব্যক্তিরা আদৌ বেঁচে আছে কিনা তা নিয়ে পরিবারে চরম আতংক বিরাজ করছে। নিখোঁজ ৩ ব্যবসায়ী হলেন শৈলকুপা শহরের সিনেমা হল রোডের ওষুধ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন শহরের হাবিবপুর গ্রামের ট্রাক ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম লিপটন ও আড়–য়াকান্দি গ্রামের গরু ব্যবসায়ী মসলেম উদ্দিন। দুই সপ্তাহ ধরে তারা নিখোঁজ থাকায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। শৈলকুপা থানায় দায়ের করা জিডি সুত্রে জানা গেছে, শহরের সিনেমা হল রোডের ঔষধ ব্যবসায়ী হাকিমপুর গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আমজাদ হোসেন গত ১৫ জানুয়ারী থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। ঘটনার দিন তিনি দোকান থেকে বের হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। এরপর থেকেই তিনি নিখোঁজ। আমজাদ হোসেনের খোঁজ না পেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে ১৭ জানুয়ারী শৈলকুপা থানায় জিডি করা হয়। নিখোঁজ ব্যক্তির চাচা হাবিবুর রহমান জানান, সে অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে ঋন নিয়ে ব্যবসা করছিলো। বিভিন্ন ব্যক্তি তার কাছে ৪/৫ লাখ টাকা পাবে। টাকার কারণে সে আত্মগোপন করেছে নাকি কেও তাকে টাকা উদ্ধারের জন্য নিয়ে গেছে তা বোঝা যাচ্ছে না বলে হাবিবুর রহমান জানান। শৈলকুপার কাজী পাড়া এলাকা থেকে গত ৪ জানুয়ারী নিখোঁজ হয়েছেন ট্রাক ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম লিপটন। তিনি শৈলকপুার আব্দুল খালেকের ছেলে। আদালতে মামলা ও থানায় করা জিডি সুত্রে জানা গেছে, শৈলকুপার আশরাফুল আলমের কন্যা স্বামী পরিত্যক্ত শারমিন আক্তার তানিয়ার সাথে ব্যবসায়ীক লেনদেন ছিল ট্রাক ব্যবসায়ী রিয়াজুল ইসলাম লিপটনের। গত ৪ জানুয়ারি তানিয়া ব্যবসায়ী লিপটনকে বাসায় ডেকে পাঠায়। এরপর থেকেই লিপটনের কোন খোঁজ মিলছে না। বহু খোঁজাখুজির পর ছেলেকে না পেয়ে বাবা আব্দুল খালেক শৈলকূপার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে শারমিন আক্তার তানিয়াকে আসামী করে মামলা করেছেন। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঝিনাইদহ। এদিকে শৈলকূপা উপজেলার আড়ুয়াকান্দি গ্রামের মৃত হাকিম বিশ্বাসের ছেলে গরু ব্যবসায়ী মসলেম উদ্দীন গত ১৮ জানয়ারী থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি আড়য়াকান্দি গ্রামের হাকিম বিশ্বাসের ছেলে। গত ১৮ জানুয়ারী মসলেম কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রাম ও পান্টি এলাকায় গরু কেনা-বেচার জন্য তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। গত ২০ জানুয়ারী তার ভাই নজরুল ইসলাম শৈলকুপা থানায় জিডি করেন। শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, প্রাথমিক তদন্তে বোঝা গেছে ব্যবসায়ী মসলেম ও আমজাদ হোসেন দেনার কারণে আত্মগোপন করতে পারে। গরু ব্যবসায়ী সমলেম বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ১৫ লাখ ও ওষুধ ব্যবসায়ী আমজাদ ৩ লাখ টাকার দেনা আছে। ওসি আরো বলেন, লিপটনের বিরুদ্ধে ৮/৯টি মামলা আছে। নিখোঁজ হওয়ার আগে সে তার বন্ধু বাবুকে বলে গেছে তার মোবাইল বন্ধ থাকবে। সে ভারতে বেড়াতে যাবে। ফলে তিন ব্যক্তির নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে স্পষ্ট বলে ওসি আলমগীর হোসেন জানান।